Advertisement
১৯ মে ২০২৪

জোট বেঁধেই পুলিশের বিরুদ্ধে নালিশ

ভোটের সময় মিছিল, মিটিং একসঙ্গে করেছেন মালদহের বাম ও কংগ্রেসের নেতা নেত্রীরা। এবার অভিযোগ জানানোর ক্ষেত্রেও জোটবদ্ধ হয়েই পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হচ্ছেন তাঁরা। শনিবার পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ নিয়ে জেলার পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হলেন মালদহের বাম ও কংগ্রেসের একঝাঁক নেতা নেত্রী।

অভিযোগ জানাচ্ছেন বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। — নিজস্ব চিত্র

অভিযোগ জানাচ্ছেন বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৬ ০২:৫০
Share: Save:

ভোটের সময় মিছিল, মিটিং একসঙ্গে করেছেন মালদহের বাম ও কংগ্রেসের নেতা নেত্রীরা। এবার অভিযোগ জানানোর ক্ষেত্রেও জোটবদ্ধ হয়েই পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হচ্ছেন তাঁরা। শনিবার পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ নিয়ে জেলার পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হলেন মালদহের বাম ও কংগ্রেসের একঝাঁক নেতা নেত্রী। তাঁদের অভিযোগ, শাসক দলের অভিযোগ পেলেই সক্রিয় হয়ে উঠছে পুলিশ। আর বিরোধীদের অভিযোগকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।

জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী, সাংসদ মৌসম নূর বলেন, ‘‘মালদহে আমাদের দলের কর্মীদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। আর শাসক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালেও সেই ক্ষেত্রে কাউকে গ্রেফতার করতে পারছে না পুলিশ।’’ একই সুরে পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রও। তিনি বলেন, ইংরেজবাজার থানার পুলিশ শাসক দলের নেতার কথা শুনে চলছে। যে ভাবে পুলিশকে কাজ করতে বলছেন, পুলিশ সেই ভাবেই চলছে। তাই আমাদের অভিযোগের ক্ষেত্রে পুলিশ নিষ্ক্রীয়, আর শাসকের অভিযোগের ভিত্তিতে সক্রিয় হয়ে উঠছে।

যদিও বিরোধীদের অভিযোগকে আমল দিতে নারাজ তৃণমূল। ইংরেজবাজারের তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘‘নির্বাচনের দিন আমাদের দলের এক নেতাকে মেরে পা ভেঙে দিয়েছে সিপিএম কংগ্রেস কর্মীরা। আমার বাড়ির সামনে দিয়ে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁদের দলের নেতারা অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে। এখন উল্টে আমাদের নামে দায় চাপাচ্ছে।’’

মালদহের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, ‘‘দাবি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’

নির্বাচনের দিন মালদহের ইংরেজবাজারের বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ঘটে। ইংরেজবাজারের আইটিআই কলেজে তৃণমূল ও সিপিএমের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল ওইদিন। ওই ঘটনায় তৃণমূলের এক নেতা অনুপ সরকার গুরুতর ভাবে আহত হন। এখন তিনি কলকাতায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তৃণমূলের তরফে ওইদিনই ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। বাকিদের খোঁজে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বুড়াবুড়ি তলা এলাকা নিয়মিত তল্লাশি চালাচ্ছে। তল্লাশির নামে পুলিশ সিপিএম ও কংগ্রেসের নেতা কর্মীদের হেনস্থা করছে বলে অভিযোগ।

ওইদিনই ইংরেজবাজারের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম সমর্থিত দুই পরিবারের উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করা হলেও পুলিশ এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এছাড়া তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এলাকায় দাপিয়ে বেড়ালেও পুলিশ নিষ্ক্রিয় বলে অভিযোগ। ফলে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ পক্ষপাতিত্ব করছে বলে অভিযোগ তুলে এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ বাম ও কংগ্রেস নেতারা জোটবদ্ধ হয়ে জেলার পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজার সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ করেন।

এ দিনের এই কর্মসূচিতে সামিল ছিলেন জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী তথা সাংসদ মৌসম নূর, কংগ্রেসের দুই সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র রায় ও হেমন্ত শর্মা এবং সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র। ছিলেন আরএসপির জেলা সম্পাদক গৌতম গুপ্ত, সিপিআই জেলা সম্পাদক তরুন দাস সহ দুই দলেরই একাধিক নেতা নেত্রী। পুলিশ সুপার কোনও পদক্ষেপ না নিলে আগামীতে রাস্তায় নেমে এক সঙ্গে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী মৌসম নূর ও সিপিএমের অম্বর মিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE