রয়ে গিয়েছে ‘বাম প্রার্থী’ খগেনের দেওয়াল লিখন। ছবি: তথাগত সেন শর্মা
লাল রঙ দিয়ে দেওয়ালে আঁকা কাস্তে-হাতুড়ি চিহ্ন। প্রতীকের নিচেই লেখা রয়েছে খগেন মুর্মুর নাম। সেই দেওয়াল টপকে যেতেই চোখে পড়বে মাটির দেওয়ালে গেরুয়া রঙ দিয়ে আঁকা রয়েছে পদ্ম ফুল। সেই ফুলের তলাতেও নাম খগেন মুর্মুর।
গাজলের সালাইডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের সিস পিরালুতলা গ্রামে গেলে চোখে পড়বে প্রার্থীর নাম এক থাকলেও প্রতীক রয়েছে ভিন্ন। তবে এখানে বিরোধীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নয়, মৃদু হেসে খগেন মুর্মুর জবাব, “মুছে ফেলতে হবে কাস্তে-হাতুড়ির তলা থেকে আমার নাম।”
শুধু গাজলের সিস পিরালু তলাতেই নয়, উত্তর মালদহ জুড়ে ঘুরলেই চোখে পড়বে ‘বাম প্রার্থী’ খগেন মুর্মুর সমর্থনে বহু দেওয়াল। কোনও দেওয়ালে অস্পষ্ট, আবার কোথাও পরিষ্কার করে তা বোঝা যাচ্ছে। আর পুরনো সেই দেওয়ালই অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছে উত্তর মালদহ লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মুর। তিনি এই কেন্দ্র থেকেই ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বামেদের টিকিটে লড়াই করেছিলেন। যদিও সে বারে হেরে গিয়েছিলেন তিনি।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
নতুন লিখনে তিনি বিজেপি প্রার্থী। ছবি: তথাগত সেন শর্মা
খগেন ১৯৯৩ সাল থেকে জনপ্রতিনিধি। প্রথমে ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতিতে। পরবর্তীতে তিনি জেলা পরিষদের সদস্য এবং সহকারী সভাধিপতিও হন। আর ২০০৬ সাল থেকে বিধায়ক। ২০০৬ সালে তিনি গাজলের বিধায়ক ছিলেন। পরে হবিবপুর থেকে জিতে বিধায়ক হন তিনি। প্রত্যেকবারই তাঁর প্রতীক ছিল কাস্তে-হাতুড়ি। তবে লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার পরেই বিজেপিতে যোগ দেন খগেন। নতুন দল তাঁকে উত্তর মালদহের প্রার্থীও করে। যদিও বিজেপির অন্দরে অনেকে তাঁকে মেনে নিতে পারেনি। গাজলে পোস্টারও পড়েছিল। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে পরিস্থিতি এখন অনেকটা বদলে গিয়েছে। তার পরেও পুরনো স্মৃতি পিছু ছাড়ছে না খগেনের।
গাজল ব্লকের সালাইডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের সিস পিরালু গ্রাম। টাঙন নদী ঘেঁষা গ্রামটি। গ্রামে রাস্তা নেই বললেই চলে। জমির আলের মতো রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয় গ্রামবাসীদের। সেখানেই মিলবে দেওয়ালটি যেখানে স্পষ্ট হয়ে রয়েছে, ‘বামপ্রার্থী খগেন মুর্মুকে ভোট দিয়ে জয়ী করুন লোকসভা নির্বাচনে’। এমনই দেওয়াল চোখে পড়বে মালদহের পুকুরিয়াতেও। ফলে পুরোনো এবং নতুন দেওয়াল লিখন নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
কাস্তে-হাতুড়ির সঙ্গে দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে যুক্ত খগেন। মানুষ এখনও জানেন, খগেন মানেই সিপিএম। এই পরিস্থিতিতে খগেন কী বলছেন? বিজেপি প্রার্থীর কথায়, “তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমি বিজেপিতে যোগ দিয়েছি, সেটা সাধারণ মানুষ ভাল ভাবেই জানেন। তবে ওই দেওয়ালগুলি কর্মীদের মুছে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
সিপিএম অবশ্য সে কথা মানছে না। জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “বিশ্বাসঘাতক খগেনকে এ বারে মানুষ জবাব দেবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy