—ফাইল চিত্র।
কাটমানি নিয়ে আলিপুরদুয়ার পুরসভার তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলরদের একাংশের উপর চাপ ক্রমশ বাড়ছে। অভিযোগ, শহরের বেশ কিছু এলাকায় বাসিন্দাদের অনেকেই ওই কাউন্সিলরদের কাছে গিয়ে হাউজ ফর অল প্রকল্পের ঘরের জন্য পুরসভায় জমা করা পঁচিশ হাজার টাকা ফেরত চাইতে শুরু করেছেন৷ এই পরিস্থিতির জন্য ওই কাউন্সিলররা দলের প্রবীণ নেতা জহর মজুমদারকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন৷ জহরের বিরুদ্ধে দলের জেলা শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে নালিশও জানাতে শুরু করেছেন তাঁরা৷ জহর অবশ্য তাঁর নিজের মন্তব্যে অনড়।
তৃণমূল নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে কাটমানি ও তোলাবাজির অভিযোগ নতুন কোনও ঘটনা নয়। কিন্তু এই নিয়ে গত সপ্তাহে কলকাতার নজরুল মঞ্চের একটি সভায় মুখ্যমন্ত্রীর একটি মন্তব্য গোটা বিষয়টি অন্য মাত্রা পায়৷ দলের কাউন্সিলরদের নিয়ে আয়োজিত ওই সভাতে খোদ মুখ্যমন্ত্রীই কাটমানি ও তোলাবাজির অভিযোগ তুলে দলের নেতাদের তা ফেরত দিতে নির্দেশ দেন৷ সেই সঙ্গে তিনি যে চোরেদের যে আর দলে রাখবেন না, তা-ও স্পষ্ট জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী৷
মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের পর রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় তৃণমূলের অন্দরে৷ যার প্রভাব এসে পড়ে আলিপুরদুয়ারেও৷ গত লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে তৃণমূলর বড় বিপর্যয়ের পর নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে কাটমানি ও তোলাবাজির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন দলের রাজ্য সহ সভাপতি জহরবাবু৷ মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পর ফের বিষয়টি নিয়ে সরব হন তিনি৷
গত শনিবার একটি সাংবাদিক বৈঠক করে অভিযোগ করেন, হাউজ ফর অল প্রকল্পের ঘর উপভোক্তাদের নিজেদের তৈরির কথা৷ কিন্তু দলের বিদায়ী কাউন্সিলারদের একাংশ কাটমানি পেতে ঠিকাদারদের দিয়ে সেই ঘর বানিয়েছেন৷ এর ফলে ঘর তৈরিতে ব্যাপক দূর্নীতি হয়েছে৷ ঘরের মানও খারাপ হয়েছে৷
সূত্রের খবর, জহরের মন্তব্যে রীতিমতো ক্ষুব্ধ তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার শহর ও জেলা নেতাদের একটা বড় অংশ৷ তাঁদের অভিযোগ, ওই প্রবীণ নেতার কথাতে অনেক মানুষই বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছেন৷ তাঁরা কোনও কোনও কাউন্সিলরের কাছে গিয়ে হাউজ ফর অল প্রকল্পে ঘর বানানোর জন্য পুরসভায় জমা দেওয়া পঁচিশ হাজার টাকা দাবি করছেন৷
যদিও পুরসভা সূত্রের খবর, হাউজ ফর অল প্রকল্পের জন্য সরকারি নিয়মেই পঁচিশ হাজার টাকা উপভোক্তাদের জমা দেওয়ার কথা বলা রয়েছে৷ এবং চার কিস্তিতে ওই টাকা সহ ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা পাচ্ছেন উপভোক্তারা৷ আলিপুরদুয়ার পুরসভার বিদায়ী কাউন্সিলার তথা তৃণমূলের শহর ব্লক সভাপতি দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দলের কোনও কোনও নেতা হাতে সঠিক তথ্য ও প্রমাণ ছাড়াই কিছু বিভ্রান্তিমূলক মিথ্যা অভিযোগ করছেন৷ যার ফলে কোনও কোনও এলাকায় মানুষ ভুল বুঝে বিদায়ী কাউন্সিলারদের কাছে পঁচিশ হাজার টাকা ফেরত চাইছেন৷ আমরা দলের সব বিদায়ী কাউন্সিলারদের সরকারি নিয়ম নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে বলেছি৷ পাশাপাশি দলে থেকে যাঁরা মিথ্যা অভিযোগে দলের বদনাম করছেন তাদের বিরুদ্ধে নেতৃত্বের কাছে অভিযোগও জানিয়েছি।” তৃণমূলের এক জেলা নেতা বলেন, দলের জেলা সভাপতি এই মুহুর্তে বাইরে৷ তিনি ফিরে এলেই বিষয়টি নিয়ে দলে আলোচনা হবে৷
তবে তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি জহর মজুমদার অবশ্য এদিন ফের বলেন, “সাধারণ মানুষ আমার কাছে যে অভিযোগ করেছেন, সেটাই সংবাদ মাধ্যমের কাছে তুলে ধরেছি৷ এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে আমারও মনে হয়েছে ঘর তৈরিতে দূর্নীতি হয়েছে৷”
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy