বিষাদ: মেয়ের তামান্নার সঙ্গে বিপুল রায়ের স্ত্রী রুম্পা। নিজস্ব চিত্র
কাছের মানুষ হারানোর শোকচিহ্ন তাঁর চোখেমুখে এখনও স্পষ্ট। স্বামীর কথা ভাবলেই ভেঙে পড়ছেন। আবার পাঁচ বছরের কচি মেয়ের মুখটা দেখে আবার নিজেকে সামলে নিচ্ছেন। ওইটুকু মেয়ের উপর বাবা হারানোর কষ্ট চেপে বসুক, মোটেই চান না নিহত জওয়ান বিপুল রায়ের স্ত্রী রুম্পা। তাই একদিকে যেমন মেয়েকে সামলাচ্ছেন, অন্যদিকে পুত্রহারা শ্বশুরের দিকেও খেয়াল রাখতে হচ্ছে। তাঁর কথায়, এমন কঠিন অস্বস্তিকর অবস্থায় তাঁকে পড়তে হবে কখনও ভাবেননি।
এরই মধ্যে রাজ্য সরকারের তরফে পরিবারের একজনের চাকরির প্রস্তাব এসেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরিও পাওয়ার কথা। তবে সেক্ষেত্রে প্রতিযেগিতায় বসতে হবে বিপুলের স্ত্রীকে। এমএ পাশ রুম্পা শনিবার জানালেন, রাজ্য সরকারের চাকরিটা হলে ভাল হয়। যদিও তাঁর কথায়, এখনও এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি তাঁদের পরিবারে। একসঙ্গে বসেই সিদ্ধান্ত হবে। তবে রুম্পা বলেন, ‘‘এই পরিবারের বড় ছেলে নেই। বড় বউ হিসেবে আমার মেয়ের পাশাপাশি শ্বশুর-শাশুড়ি এবং পরিবারের অন্যদের দেখার দায়িত্ব আমার রয়েছে। সেই কর্তব্য আমি পালন করব।’’ বিপুলের বাবা নীরেন রায় বলেন, ‘‘আমরা পরিবারের সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেব। যেটা করলে আমার বউমা, নাতনি এবং পরিবারের অন্যেরা ভাল থাকেন সেই সিদ্ধান্তই হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, লাদাখে নিহত রাজ্যের দুই জওয়ানের পরিবারকে একটি করে চাকরি ও পাঁচ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। সেইমতো এ দিন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক এবং আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকের বিডিও বিন্দিপাড়া গ্রামে গিয়ে বিপুলের পরিবারের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেন। শুক্রবারই বিপুলের শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার পর পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব এবং আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক গ্রামে গিয়ে বিপুলের বাবা নীরেন রায় এবং স্ত্রী রুম্পা রায়ের হাতে চাকরির ‘অফার লেটার’ তুলে দেন। বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিপুলের পরিবার দু’দিনের মধ্যে তাঁদের সিদ্ধান্ত জানাক। দ্রুত পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়া হবে।’’
রুম্পা বললেন, ‘‘মেয়েকে সামলানোই একটু কঠিন হয়ে পড়ছে। বাবা বাড়িতে এলে বাবার সঙ্গেই সারাদিন নেচে, খেলে দিন কাটাত ও। বাবার উৎসাহে নাচ শিখত তামান্না। গতকাল আমাকে বলেছে, বাবা তো আর ফিরবে না, তাই আর নাচ করবে ও।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy