Advertisement
২৭ মে ২০২৪

নকল রুখতে কড়া ব্যবস্থা চান উপাচার্য

নকলে বাধা দেওয়ায় পরীক্ষার্থীদের একাংশের রোষের মুখে পড়তে হয়েছে কলেজগুলির অধ্যাপক এবং অধ্যক্ষদের। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে শুরু করে দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুর কলেজের অধ্যক্ষকে নিগৃহীত হতে হয়েছে। ফলে নকল রুখতে আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৫ ০৩:৩৮
Share: Save:

নকলে বাধা দেওয়ায় পরীক্ষার্থীদের একাংশের রোষের মুখে পড়তে হয়েছে কলেজগুলির অধ্যাপক এবং অধ্যক্ষদের। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে শুরু করে দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুর কলেজের অধ্যক্ষকে নিগৃহীত হতে হয়েছে। ফলে নকল রুখতে আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

কলেজে কলেজে হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপাল মিশ্র। তিনি বলেন, ‘‘এমন ঘটনা কখনও মানা যায় না। নকল করার অভিযোগে কলেজগুলিতে ব্যাপক হারে ধরা পড়ছে পরীক্ষার্থীরা। নকল করতে গিয়ে ধরা পড়লে কাউকে ছাড়া হবে না। এখন থেকে কলেজের প্রতিনিধি দলের পাশাপাশি নিয়মিত পরিদর্শনে যাবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দলও।’’

এই বিষয়ে পরীক্ষা সমূহের নিয়ামক সনাতন দাস বলেন, ‘‘বিগত বছরের তুলনায় চলতি বছর নকল করতে গিয়ে বেশি ছাত্র ধরা পড়ছে। সমস্ত কলেজেই অধ্যাপকেরা ভাল নজরদারি চালাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা নিয়মিত ঘুরছেন। প্রয়োজনে আরও বাড়তি প্রতিনিধি দল গঠন করা হবে। আর উত্তেজনাপ্রবণ কলেজগুলিতে অভিযান চালানো হবে। এই অভিযানের ফলে ভালো ছেলে মেয়েদের ফলাফল আরও ভালো হবে।’’

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গণ টোকাটুকি রুখতে ২০১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে হোম সেন্টার তুলে দেওয়া হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মোট ২২টি কলেজ রয়েছে। মালদহ জেলায় রয়েছে ১১টি কলেজ। মানিকচক কলেজ সদ্য হওয়ায় সেখানে পরীক্ষা হচ্ছে না। উত্তর দিনাজপুরে ৪টি এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে রয়েছে ৭টি কলেজ। হোম সেন্টার তুলে পার্শ্ববর্তী কলেজগুলিতে গত বছর থেকে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। গত বছর তিনটি বর্ষ মিলিয়ে নকল করতে গিয়ে ধরা পড়েছিল মোট ১৭২৫ জন ছাত্রছাত্রী। চলতি বছর তৃতীয় বর্ষের অর্নাসে নকল করতে গিয়ে ধরা পড়েছে ১৩৩ জন পড়ুয়া। আর সাধারণ বিভাগে ধরা পড়েছে ৪৭৩ জন। এ ছাড়া এখন প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা চলছে। এখনও পর্যন্ত দুই বর্ষ মিলিয়ে টোকাটুকি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে প্রায় ২২০০ জন পরীক্ষার্থী। এই দুই বর্ষেরই পরীক্ষা শেষ হবে ১৯ জুন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহের মধ্যে পাকুয়া হাট ডিগ্রি কলেজ, গৌড় মহাবিদ্যালয়, চাঁচল ও সামসি কলেজ, উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহারে মেঘনাদ সাহা কলেজ, বুনিয়াদপুর কলেজেই নকল করতে গিয়ে ৭০ শতাংশ ছাত্র ধরা পড়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন কলেজে নকল রুখতে পরীক্ষাকেন্দ্রে কড়া নজরদারি চালাচ্ছেন পরিদর্শকেরা। পরীক্ষা চলাকালীন কেন্দ্রগুলিতে জেলা স্থরের প্রতিনিধি দল ঘুরে দেখছেন। তা ছাড়া তিন জেলার জন্য ছয় সদস্যের একটি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে কলেজগুলিতে হামলার ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও কড়া পদক্ষেপ করতে চায়।

হরিশ্চন্দ্রপুর কলেজে পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল করতে বাধা দেওয়ায় পরীক্ষার্থীদের একাংশ কলেজে তাণ্ডব চালায়। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুর কলেজের অধ্যক্ষের বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। একের পর এক ঘটনায় উদ্বিগ্ন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত দিনে কালিয়াচক কলেজে গোলমাল হওয়ায় সেখান থেকে সেন্টার তুলে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনেই পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই বিষয়ে পরীক্ষা সমূহের নিয়ামক সনাতনবাবু বলেন, ‘‘যে সব কলেজে হামলার ঘটনা গঠবে, আগামী দিনে সেই সব কলেজের পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়েই নেওয়ার চেষ্টা করা হবে। আর অর্নাসের মতো পাশ কোর্সের ক্ষেত্রেও নকল ধরা পড়লে এক বছরের জন্য পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত করার কথাও ভাবা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE