Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Siliguri

আবারও অপেক্ষার তালিকায় জীববৈচিত্রের নেওড়া ভ্যালি

শুধু প্রাকৃতিক বা ‘ন্যাচারাল’ বিভাগে নয়, তার স্বীকৃতি মিলেছে ‘ন্যাচারাল ক্যালচারাল সাইট’ হিসাবে। প্রকৃতি, জীববৈচিত্রের সঙ্গে একাধিক জনগোষ্ঠীর মেলবন্ধনের ক্ষেত্র হিসাবে সিকিমে কয়েক বছর আগেই ওই তকমা এসেছে।

নেওড়া ভ্যালি জাতীয় উদ্যান।

নেওড়া ভ্যালি জাতীয় উদ্যান। — ফাইল চিত্র।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৩ ১০:১৮
Share: Save:

রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতীকে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্র (ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট) হিসাবে স্বীকৃতি ঘোষণার জন্য আগামী সেপ্টেম্বর মাস অবধি অপেক্ষা করতে হচ্ছে। সৌদির রিয়াধে বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির সভায় তা ঘোষণা হবে বলে ঠিক রয়েছে। এরই মধ্যে রাজ্যের আরও দু’টি ক্ষেত্র আপাতত ঐতিহ্যক্ষেত্রের আবেদন-পর্বেই থেকে গেল। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের সঙ্গে ঐতিহ্যক্ষেত্র হিসাবে এ বারও ইউনেস্কোর সম্ভাব্য তালিকায় থেকে গেল উত্তরবঙ্গের নেওড়া ভ্যালি জাতীয় উদ্যান। বিশ্বভারতী নিয়ে কেন্দ্রের ঘোষণার পরে, নেওড়াভ্যালি নিয়েও খোঁজখবর শুরু হয়। যদিও জাতীয় উদ্যানের ঐতিহ্যের স্বীকৃতি এখনও অধরা রইল। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল সৌমিত্র দাশগুপ্ত বলেছেন, ‘‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট কর্তৃপক্ষের তরফে এখনও কিছু নতুন করে জানানো হয়নি।’’

এক সময়ে দার্জিলিং এবং বর্তমানে কালিম্পং জেলার অধীন এই জাতীয় উদ্যানের অর্ধেক অংশে মানুষ এখনও পৌঁছতেই পারেনি বলা হয়। সূর্যের আলো মাটি ছুঁতে পারে না জঙ্গলের অনেক অংশেই। রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রের হাত ঘুরে ২০০৯ সালে নেওড়া ভ্যালির আবেদন জমা পড়েছিল। পরে, একই সঙ্গে আবেদনের তালিকায় ছিল বিষ্ণুপুর এবং বিশ্বভারতী। কিন্তু এ বারও পিছিয়ে থাকল নেওড়া ভ্যালি। অথচ, এর একেবারে লাগোয়া সিকিমের ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা বায়োস্ফেয়ার রিজার্ভ’ আগেই বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্রের তকমা পেয়েছে। তবে তা শুধু প্রাকৃতিক বা ‘ন্যাচারাল’ বিভাগে নয়, তার স্বীকৃতি মিলেছে ‘ন্যাচারাল ক্যালচারাল সাইট’ হিসাবে। প্রকৃতি, জীববৈচিত্রের সঙ্গে একাধিক জনগোষ্ঠীর মেলবন্ধনের ক্ষেত্র হিসাবে সিকিমে কয়েক বছর আগেই ওই তকমা এসেছে।

রাজ্যের ইকো-টুরিজ়ম টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান রাজ বসু বলেন, ‘‘আমরা সিকিমের বিশ্ব ঐতিহ্যের সঙ্গেই সিঙ্গালিলা, সিংচল, মহানন্দা এবং নেওড়া ভ্যালিকে জুড়ে নেওয়ার দাবি তুলেছিলাম। কারণ, পুরোটাই কাঞ্চনজঙ্ঘা রেঞ্জে। শুধু নেওড়াভ্যালির জন্য দাবিও রয়েছে। সরকারি স্তরে বিষয়টি আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’’

বন দফতর সূত্রের খবর, ২০০৯ সালে নেওড়া ভ্যালিকে নিয়ে আবেদন করা হয়। এই জাতীয় উদ্যানের তথ্য ইউনেস্কোর কাছে পাঠানো হয়। কয়েক দফা সমীক্ষাও হয়। একমাত্র নেওড়া ভ্যালিতে পাওয়া যায়, এমন জীববৈচিত্রের সন্ধানও মিলেছে। ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল— টানা তিন বছর ধাপে ধাপে বন দফতর নেওড়া ভ্যালিতে জীববৈচিত্রের মূল্যায়ন শিবির করেছে। তাতে এমন বহু পোকামাকড়, পিপঁডের সন্ধান মিলেছে, যা ভারতের কোথাও দেখা যায়নি। ঘন জঙ্গলে ঘেরা জাতীয় উদ্যানে তাঁবু ফেলে বিজ্ঞানী, বিশেষজ্ঞ, পরিবেশকর্মীরা কাজ করেছিলেন।

সেই সমীক্ষক দলের সদস্য তথা ‘ন্যাফ’-এর কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘নেওড়া ভ্যালি নিয়ে আবেদন করার অন্তত ১০ বছর পরে সমীক্ষায় নতুন নতুন তথ্য সামনে এসেছে। তা ইউনেস্কোর কাছে করা আবেদনে জুড়ে দেওয়া জরুরি।’’ তিনি জানান, হিমালয়ের কোলে নতুন জীববৈচিত্রের তথ্য তুলে ধরলে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি আদায়ে অনেকটাই সুবিধা মিলতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Siliguri Neora Valley National Park
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE