Advertisement
১৭ মে ২০২৪

সাইবার ক্রাইমের অভিযোগ বেড়েই চলেছে

ব্যাঙ্কের কর্মী পরিচয় দিয়ে পিন জেনে টাকা গায়েব, কখনও শুধু এটিএমের কার্ড নম্বর জেনেই অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা হস্তান্তর করা, বা এটিএম কাউন্টার থেকেই কৌশলে কার্ড হাতিয়ে নেওয়ার মত ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে শিলিগুড়ি শহরে। শুধু সাইবার থানায় ব্যাঙ্ক ও এটিএম সংক্রান্ত প্রতারণার অভিযোগের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে ফেসবুক সংক্রান্ত বা অন্য অভিযোগকে বলে জানা গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৫ ০১:৩৫
Share: Save:

ব্যাঙ্কের কর্মী পরিচয় দিয়ে পিন জেনে টাকা গায়েব, কখনও শুধু এটিএমের কার্ড নম্বর জেনেই অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা হস্তান্তর করা, বা এটিএম কাউন্টার থেকেই কৌশলে কার্ড হাতিয়ে নেওয়ার মত ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে শিলিগুড়ি শহরে। শুধু সাইবার থানায় ব্যাঙ্ক ও এটিএম সংক্রান্ত প্রতারণার অভিযোগের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে ফেসবুক সংক্রান্ত বা অন্য অভিযোগকে বলে জানা গিয়েছে। থানায় জমা পড়া অভিযোগের তালিকায় নজর বুলিয়ে এমনই তথ্য উঠে আসছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, থানা চালু হওয়ার পর প্রাথমিকভাবে ফেসবুকে অপরাধের অভিযোগ বেশি থাকলেও ক্রমশ বাড়ছে আর্থিক প্রতারণার ঘটনা। মোট অভিযোগের ৭০ শতাংশই আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ।

শিলিগুড়ি পুলিশের এসিপি (ডিডি ও সাইবার সেল) তপন আলো মিত্র জানান, সাইবার সেল থাকাকালীন আলাদা করে তেমন অভিযোগ না জমা পড়লেও পুরোদস্তুর থানা হওয়ার পরে অভিযোগের অনুপাত বাড়ছে নিয়মিত। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মামলা হয় না অভিযোগকারীদের আপত্তি থাকায়। তবে বেশ কিছু মামলা অবশ্য হয়েছে।’’ কর্মী সমস্যায় ঘাটতি থাকায় কাজে সমস্যা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্তে কোনও ঘাটতি রাখা হয় না বলেও দাবি তাঁর।

ফেসবুকে হেনস্থা ও টোপ দিয়ে অর্থ আত্মসাতের মত গুটিকয় অপরাধের সঙ্গে শহরের মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের এটিএমের পিন জেনে নিয়ে টাকা তুলে নেওয়ার মত কয়েকটি অভিযোগ নিয়ে শিলিগুড়িতে সাড়ে তিন মাস আগে চালু হয়েছিল সাইবার থানা। ২০১৫ সালের ১ মার্চ শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা এই থানার উদ্বোধন করেছিলেন। জানানো হয়েছিল, সাধারণ ঘটনাগুলির সঙ্গে এই অভিযোগগুলির তদন্ত সঠিকভাবে করা সম্ভব হচ্ছিল না বলে আলাদা করে সাইবার সেল চালু করা হয় ২০১৪ সালের ১ মার্চ। পরে সেলকে পরিণত করা হয় পূর্ণাঙ্গ থানায়। পুলিশ কমিশনারেটের পাঁচটি থানায় মাসে গড়ে ৩০ টির বেশি অভিযোগ জমা পড়ছিল। সেই সংখ্যাটা এখন মাসে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০ টিতে। তিন মাসে দেড়শোর বেশি অভিযোগ জমেছে। এর মধ্যে প্রায় ৯০ টির মত অভিযোগ হয়েছে অর্থ সংক্রান্ত তছরূপের জন্য।

গত শুক্রবার শিলিগুড়ির শালুগাড়ার এক সেনা ব্রিগেডিয়ারের সাড়ে ৯ হাজার টাকা প্রতারণার অভিযোগ হয়েছে। ব্যাঙ্কের কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে তার এটিএমের নম্বর শুনে নেয়। তারপরেই তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া হয় টাকা। গত ২২ মে শিলিগুড়ির বিদ্যাচক্র কলেনির এক ব্যবসায়ীর ডেবিট কার্ডের নম্বর জেনে সেখানে বেশ কিছু টাকা তুলে নেওয়া হয়। তার তদন্ত চলছে এখনও। টাকা উদ্ধার হয়নি। শালবাড়ির এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীর ক্ষেত্রে এটিএম নম্বর জেনে অনলাইন শপিং করার অভিযোগ ছিল। তার টাকার বেশিরভাগটাই উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে সাইবার থানা সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে এই ধরণের ঘটনায় তদন্ত করতে গিয়ে ব্যাঙ্কগুলি ঠিকমত সহযোগিতা করছে না বলে অভিযোগ করেছেন সাইবার থানার আইসি সুভাশিস চাকি। তিনি বলেন, ‘‘এটিএএমের ফুটেজ থেকে ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টের ক্ষেত্রে গড়িমসিতে অনেক সময় দেরি হওয়ার কারণে তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায় না।’’ এ ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলিকে সদর্থক ভূমিকা নিতে আহ্বান জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Siliguri Cybercrime bank ATM bank statement
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE