কুয়ো থেকে বালতিতে উঠছে ঘোলা জল জলপাইগুড়ির বালাপাড়ায়। ছবি - সন্দীপ পাল।
‘জলস্বপ্ন’ প্রকল্প স্বপ্নই এখানে। ঘোলা জলেই চলে যাবতীয় গৃহস্থালির কাজ। পানীয় জলের প্রয়োজন মেটায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জলের গাড়ি। কয়েক দশক ধরেই জল সঙ্কটে পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর বালাপাড়ার মানুষ।
তিস্তার জল নিয়ে টানাপোড়েন দুই দেশের। অথচ নদীর পারেই পানীয় জলের অভাব। ২২-২৩ অর্থবর্ষে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পাম্প-সহ জলের ট্যাঙ্ক বসানো হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ওই ট্যাঙ্কের জল পানীয় হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন না এলাকাবাসী।
জলের ট্যাঙ্কের গায়ের কালো রং হলদেটে হয়ে গিয়েছে আয়রনের কারণে। একই হাল সাদা পিলারেরও। মাঝে পাম্প মেরামত করা হলেও সমস্যা এখনও মেটেনি। বর্তমানে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জলের গাড়ি এসে পানীয় জলের প্রয়োজন মেটায়।
এই এলাকায় কুয়োর জলস্তর অনেকটাই নেমে গিয়েছে। যেটুকুও বা জল কুয়ো থেকে মিলছে তাও আবার ঘোলা, হলদেটে। সমস্যা সমাধানে স্থানীয়দের একাংশ আবার নিজেদের উদ্যোগেই কুয়োর পাশে পাকা রিজার্ভার তৈরি করেছেন।
তাতে পাথর, বালি দিয়ে প্রাকৃতিক ভাবে জল পরিশুদ্ধ করা হচ্ছে। তার পরে ওই জল গৃহস্থালির নানা কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল দেবনাথ বলেন, ‘‘কয়েক দশক ধরে এখানে পানীয় জলের সমস্যা। নদীর জলও সরাসরি পান করা যায় না। কুয়োয় জলস্তর এ সময় নেমে গিয়েছে। জলে গন্ধও রয়েছে। আমরা প্রাকৃতিক ভাবে জল শোধন করে কাজে লাগাচ্ছি।’’
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বাবলু বসাক বলেন, ‘‘কিছু দিনের মধ্যেই পানীয় জলের সমস্যা মিটে যাবে বলে আশা করছি। জলস্বপ্ন প্রকল্পের কাজ চলছে।’’ জেলা পরিষদের সভাধিপতি কৃষ্ণা রায় বর্মণ বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে সমস্যার স্থায়ী সমাধানই আমাদের লক্ষ্য।’’
দুপুরে জলের গাড়ি এলেই হইচই পড়ে যায় এলাকায়। হাড়ি, কলসি, বালতি নিয়ে লাইনে দাঁড়ান মহিলা ও ছোটরা।
তাঁদের কথায়, এই দুর্ভোগ থেকে কবে যে মুক্তি হবে কে জানে। প্রিয়াঙ্কা দেবনাথ বলেন, ‘‘পেটের নানা রোগে ভুগছেন এলাকার অনেকেই। যাদের সামর্থ্য রয়েছে তাঁরা অন্য উপায়ে জল শোধন করছেন। পঞ্চায়েত সদস্যকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy