Advertisement
১৮ মে ২০২৪

প্রতিবাদের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন তিনি

পাড়ার অনেকেই নিষেধ করেছিলেন। বন্ধুদের অনেকেই শুনে আঁতকে উঠেছিলেন। কিন্তু, শিলিগুড়ির সুকনার মেথিবাড়ির ২২ বছরের শৈলেশ কোনও অন্যায় আবদারের কাছে মাথা নীচু করবেন না বলে সকলকে জানিয়ে দেন। তবুও এলাকায় পরোপকারী ও সোজাসাপটা বলে পরিচিত ছেলেটি যে সত্যিসত্যিই নিজেই একটা ছোটখাট ‘স্টিং-অপারেশন’ করে ফেলবেন সেটা ভাবতেই পারেননি তাঁরা।

শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৬ ০৩:২৭
Share: Save:

পাড়ার অনেকেই নিষেধ করেছিলেন। বন্ধুদের অনেকেই শুনে আঁতকে উঠেছিলেন। কিন্তু, শিলিগুড়ির সুকনার মেথিবাড়ির ২২ বছরের শৈলেশ কোনও অন্যায় আবদারের কাছে মাথা নীচু করবেন না বলে সকলকে জানিয়ে দেন।

তবুও এলাকায় পরোপকারী ও সোজাসাপটা বলে পরিচিত ছেলেটি যে সত্যিসত্যিই নিজেই একটা ছোটখাট ‘স্টিং-অপারেশন’ করে ফেলবেন সেটা ভাবতেই পারেননি তাঁরা।

তাই ঘটনাটা নিয়ে পুলিশ মহলে আলোড়ন পড়ার পরে সকলেই স্তম্ভিত। শৈলেশের শুভার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ অতি মাত্রায় শঙ্কিত। তবে এলাকার বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ এখন শৈলেশের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

কয়েকজন প্রবীণ শিক্ষক তো তাঁদের প্রাক্তন ছাত্রের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তাঁরা বলছেন, ‘সমাজে কাউকে অন্যায়ের প্রতিবাদটা শুরু করতেই হবে। যাঁকে দেখে ধীরে ধীরে জনমত তৈরি হবে। তা প্রবল হলেই অন্যায়কারীরা পালানোর পথ পাবে না।’’ এ ক্ষেত্রে তাঁরা শৈলেশকে একজন ‘হুইসল ব্লোয়ার’ হিসেবেই দেখতে চাইছেন বলে ওই শিক্ষকেরা জানিয়েছেন।

শিলিগুড়ি এই যুবকের স্টিং-কাণ্ড এখন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়েও আলোচ্য। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া একাধিক ছাত্রী জানান, চোখের সামনে যেসব অন্যায় তাঁরা দেখে থাকেন, আগামী দিনে তার ফুটেজ সংগ্রহের কথা ভাববেন।

পুলিশের অন্দরেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, স্পেশাল ব্রাঞ্চে পাসপোর্ট সংক্রান্ত নথিপত্র পরীক্ষার নামে ‘রেট’ বেঁধে দিয়েছেন একশ্রেণির কর্মী। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার নানা সূত্রে অভিযোগ পেয়ে বারেবারে স্বচ্ছভাবে কাজ করার নির্দেশ দিলেও হাল ফেরেনি। তাই ফুটেজ পাওয়ার পরে সিপি নিজেই রাতে থানায় ছুটে গিয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে এগোতে হবে।

তাই ঘটনাটা নিয়ে পুলিশ মহলে আলোড়ন পড়ার পরে সকলেই স্তম্ভিত। শৈলেশের শুভার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ অতি মাত্রায় শঙ্কিত। কারণ, আগামী দিনে কোনও সরকারি চাকরির সুযোগ পেলে পুলিশের কাছ থেকেই তো ‘ভেরিফিকেশন রিপোর্ট’ নিতে হবে। তাতে কোনও অসুবিধে হতে পারে ভেবেই আশঙ্কা বাড়ছে তাঁদের। তবে এলাকার বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ এখন শৈলেশের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

কয়েকজন প্রবীণ শিক্ষক তো তাঁদের প্রাক্তন ছাত্রের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তাঁরা বলছেন, ‘সমাজে কাউকে অন্যায়ের প্রতিবাদটা শুরু করতেই হবে। যাঁকে দেখে ধীরে ধীরে জনমত তৈরি হবে। তা প্রবল হলেই অন্যায়কারীরা পালানোর পথ পাবে না।’’ এ ক্ষেত্রে তাঁরা শৈলেশকে একজন ‘হুইসেল ব্লোয়ার’ হিসেবেই দেখতে চাইছেন বলে ওই শিক্ষকেরা জানিয়েছেন। প্রবীণ শিক্ষক সরোজ মোক্তান কিংবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা জওয়ান তানদেন লামা প্রায় একই সুরে বলেন, ‘‘খেলার মাঠে ফাউল করলে রেফারিকে বাঁশি বাজাতেই হয়। সামাজিক অন্যায় দেখতে অভ্যস্ত নাগরিক সমাজেও মাঝেমধ্যে শৈলেশের মতো বাঁশি বাজানোর লোক দরকার। ওঁর পাশে আমরা সকলেই আছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE