গোপাল সরকার। নিজস্ব চিত্র।
বাবা ঘুরে ঘুরে বাদাম বিক্রি করেন। বাদাম বিক্রি করে যা উপার্জন করেন তা দিয়ে সংসার চালানোই দায়। এমন দরিদ্র পরিবারের ছেলে উচ্চ মাধ্যমিকে ৯৩ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করলেও উচ্চ শিক্ষায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অভাব। তাই ভাল ফল করেও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বুনিয়াদপুরের বাসিন্দা গোপাল সরকার।
গোপাল বংশীহারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন। গোপালের বিষয়ভিত্তিক প্রাপ্ত নম্বর বাংলায় ৯১, ইংরেজিতে ৯১, রসায়নে ৯৩, অঙ্কে ৯৫ ও জীববিদ্যায় ৮০। দরিদ্র পরিবারের এই মেধাবী ছাত্র এমন নজরকাড়া ফল করায় পরিবারে খুশির হাওয়া বইলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। কারণ, গোপালের স্বপ্ন পদার্থবিদ্যা নিয়ে উচ্চ শিক্ষা শেষে কলেজে শিক্ষকতা করানো। কিন্তু পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়ার বিপুল খরচ কী ভাবে জোগাবেন দরিদ্র বাবা, তা নিয়েই চিন্তায় রয়েছেন গোপাল ও তাঁর পরিবার। গোপাল বলেন, "শিক্ষকতার পেশা আমার কাছে আদর্শ মনে হয়। আমি যে ভাবে অভাবের মধ্যে থেকে পড়াশোনা করেছি, সেই কষ্ট আমি বুঝি। তাই শিক্ষক হয়ে গরীব ছাত্রদের যাতে আমি সাহায্য করতে পারি, সেটাও আমার স্বপ্ন। কিন্তু এখন কী ভাবে বাকি লড়াই চালাব জানি না।"
গোপালের বাবা বিষ্ণুবাবুও এখন পড়েছেন ফাঁপড়ে। তিনি বলেন, "বাদাম বিক্রি করে সামান্য যে আয় হয় তাতে সংসারই চলে না। লকডাউনে আগের মতো বিক্রিও নেই। ছেলে ভাল ফল করেছে শুনে অনেক খুশি হয়েছি। কিন্তু বাকি পড়ার খরচ কী ভাবে জুটবে সেটাই ভেবে কূল পাচ্ছি না।"
গোপাল অবশ্য ভেবেছেন, বাড়ি বাড়ি টিউশন করে কিছুটা খরচ জোগাড় করবেন। কিন্তু তাতে আদৌ কতটা খরচ উঠবে তা নিয়ে নিশ্চিত নন গোপাল। তাই ভাল ফল করে কলেজ শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও, স্বপ্ন সত্যি হবে কিনা সেই চিন্তায় ঘুম উড়েছে পরিবারটির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy