রাজ্য সরকারের সবুজ সাথীর সাইকেল না মেলার স্কুলের সময়েই পথ অবরোধ করল কয়েকশো ছাত্রছাত্রী। সোমবার এই ঘটনা ঘটে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি ও মালদহের মানিকচকে।
সোমবার বেলা সওয়া একটা নাগাদ থেকে ধূপগুড়ি ব্লকের গোঁসাইহাট গ্রামের রাজামোহন হাইস্কুলের ওই সমস্ত পড়ুয়া রাস্তা অবরোধ করে। টানা তিন ঘণ্টা ধরে চলে অবরোধ। অবরোধে পড়ে ব্যাপক নাকাল হন যাত্রীরা। কয়েকজন অসুস্থ যাত্রীও দুর্ভোগের শিকার হন। ধূপগুড়ি থানার পুলিশ সহ স্কুলের শিক্ষকরা বোঝালেও অবরোধ তুলতে সক্ষম না হওয়ায় পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক ধূপগুড়ির বিডিও-র সঙ্গে আলোচনা করে দশ দিনের মধ্যে বাকি সাইকেল দেওয়ার কথা জানালে সাড়ে চারটে নাগাদ অবরোধ উঠে যায়। তবে, দশ দিনের মধ্যে প্রতিশ্রুতি মত সাইকেল না মিললে ফের অবরোধ করা হবে বলে ছাত্রছাত্রীরা হুমকি দিয়ে যায়।
তবে এ ভাবে পড়ুয়াদের দিয়ে পথ অবরোধে ক্ষুব্ধ বিডিও শুভঙ্কর রায়। এ দিনই স্কুলের প্রধানশিক্ষকের কাছে কৈফিয়ত তলব করে চিঠি পাঠিয়েছেন বিডিও। ছাত্রছাত্রীদের ‘খেপিয়ে তোলার’ পিছনে কাদের হাত রয়েছে তা জানতে চাওয়ার সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষ যাতে তদন্ত করে ওই সমস্ত লোকজনের নাম বের করে প্রশাসনকে জানায়, চিঠিতে সেই উল্লেখ করা হয়েছে। বিডিও-র কথায়, ‘‘এই ঘটনা কোনও ভাবে মানা যায় না। জাতীয় সড়কে কোনও পড়ুয়া দুর্ঘটনাগ্রস্ত হলে কে দায় নিত! সাইকেল যে ভাবে আসছে সে হিসেবেই সব স্কুলে পাঠানো হচ্ছে। কেউ বঞ্চিত হবে না।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ৬৩০টি সাইকেলের মধ্যে দিন দশেক আগে ২৩৭টি সাইকেল মেলে। সেগুলি বণ্টন করা হয়েছে। বাকি সাইকেল কবে মিলবে তা জানতে চেয়ে প্রথমে প্রধানশিক্ষকের কাছে বিক্ষোভ দেখায় ছাত্রছাত্রীরা। তার পরে তারা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। প্রধানশিক্ষক তাপসকুমার ভদ্র বলেন, ‘‘ব্লক থেকে যে ভাবে মিলছে সে ভাবে সাইকেল বণ্টন করা হচ্ছে। তা শোনার পর আমার আপত্তি সত্যেও ছাত্রছাত্রীরা রাস্তায় উঠে পড়ে। বিডিও –র সঙ্গে কথা বলে দশ দিন সময় চাওয়া হয়েছে তাদের কাছে। বিস্তারিত ঘটনা খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’ পড়ুয়ারা অবশ্য জানিয়েছে, সাইকেল না পাওয়ায় তাদের অসুবিধে হচ্ছে। তাই সমস্যার কথা নজরে আনতেই তাদের এই পদক্ষেপ। এক ছাত্রীর কথায়, ‘‘কেউ সাইকেল পাচ্ছে আবার কেউ পাচ্ছে না। এ ভাবে চলতে পারে না। আমরা সাইকেল পাবো কি না জানি না। বহু দূর থেকে আমাদের স্কুলে যাতায়াত করতে হয়।’’
মানিকচকের নূরপুরে এ দিন প্রায় ঘণ্টাখানেক মানিকচক-চাঁচল রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় নুরপুর হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। এমনকী, তারা স্কুলে গিয়েও বিক্ষোভ দেখায়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্কুলে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ৪৩২ জন ছাত্র ছাত্রীকে সবুজ সাথী প্রকল্পে সাইকেল দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে এখনও তা না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পরে তারা। তাদের অভিযোগ, অন্য সব স্কুলে সাইকেল দেওয়া হলেও এখনও এখানে সাইকেল দেওয়া হল না। যার জন্য এ দিন বাধ্য হয়েই বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। এ দিকে, পড়ুয়াদের বিক্ষোভের জেরে রাজ্য সড়কে ব্যাপক যানযটের সৃষ্টি হয়। নাকাল হতে হয় নিত্যযাত্রীদের। মানিচকের বিডিও উৎপল মুখোপাধ্যায় বলেন, সাইকেলগুলি মেরামতের জন্য দেরি হচ্ছে। খুবই শীঘ্রই পড়ুয়াদের মধ্যে সাইকেল বিলি করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy