—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি। Sourced by the ABP
ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি শিবাশিস মণ্ডল। ঘোঘোমালি হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পরে, দু’বছর কলেজে ভর্তি হতে পারেননি। সংসারে সমস্যার জেরে রোজগারের টানে কাজ করতে হচ্ছে। তবে আগামী বছর কলেজে ভর্তি হবেন বলে জানালেন। এ বছর পুজোর কেনাকাটাও করেছিলেন। আচমকা জ্বর, শরীর খারাপ। শেষে, রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়ে। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি। চিকিৎসক বলেছেন, চার-পাঁচ দিন এখনও থাকতে হবে। তাই মন খারাপ শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া ফকদইবাড়ির বাসিন্দা ওই তরুণের।
ফুলবাড়ির সঞ্জীব সরকার বা শিলিগুড়ির ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সানি রায়দের একই পরিস্থিতি। ‘ইন্টিরিয়র ডেকরেশন’-এর কমী সঞ্জীবের অফিস শিলিগুড়ির সেবক রোডের দুই মাইলে। অফিসেও অপর এক কর্মীর ডেঙ্গি হয়েছিল। এখন সে রোগ ধরেছে সঞ্জীবকে। পুজোয় পরিবারকে নিয়ে ঘোরার পরিকল্পনা এখন বিশ বাঁও জলে। উল্টে, বাড়ির লোকেরা চিন্তায় কবে সুস্থ হয়ে তিনি বাড়ি ফিরবেন। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালেই ডেঙ্গি সংক্রমণ নিয়ে অন্তত ১২ জন ভর্তি। ডেঙ্গি সন্দেহে ভর্তি রয়েছেন আরও অন্তত আট জন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালেও জ্বর, ডেঙ্গি সংক্রমণ নিয়ে রোগী আসছে। শিলিগুড়ির নার্সিংহোমগুলোতেও ভর্তি অনেকে।
তাঁদের অনেকেরই সুস্থ হতে পূজো পেরিয়ে যাবে। অনেকে ছুটি পেয়ে দু’-এক দিনে বাড়ি যেতে পারলেও, শরীর দুর্বল থাকায় চিকিৎসকেরা বাড়িতেও সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। ডেঙ্গির সংক্রমণের জেরে, এ ভাবে পুজোর আনন্দ মাটি হওয়ায় তাঁরাও বুঝতে পারছেন, আরও সতর্ক হওয়া দরকার ছিল। শিবাশিসের কথায়, ‘‘বুঝতে পারিনি, এ ভাবে আচমকা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে পুজোর আনন্দ নষ্ট হবে। বন্ধুরা খোঁজ নিচ্ছে। ওদের সঙ্গে ঘোরার কত পরিকল্পনা ছিল। আমার মনে হয়, ডেঙ্গি নিয়ে সকলেরই সাবধান হওয়া ভাল।’’
সঞ্জীবের কথায়, ‘‘গত বুধবার রিপোর্টে ডেঙ্গি সংক্রমণ ধড়া পরেছে। এ দিন প্লেটলেট কাউন্ট পরীক্ষা করতে দিয়েছেন চিকিৎসক। ভাল থাকলে, বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দিতে পারেন। তবে বাড়িতে থেকে চিকিৎসা চলবে। পুজোয় আর বেড়ানো হবে না!’’ সানিরও ডেঙ্গি বলে সন্দেহ চিকিৎসকদের। এ দিন রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার কথা। তাঁদের অভিযোগ, এলাকার বিভিন্ন এলাকায় আবর্জনা জমে থাকছে। সেখানে এবং নিকাশিতে প্লাস্টিকের কাপ, পাত্রে জল জমে থাকছে। পরিত্যক্ত জমিতে জল জমে থাকায় ডেঙ্গির সংক্রমণ বাড়ছে।
শুধু শিলিগুড়ি শহরে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে তিনশোর কাছাকাছি। মাটিগাড়াতেও সংক্রমণ মারাত্মক বেড়েছে। পুজোর দিনগুলোতে তাই সাবধানে থাকার, কোথাও জল জমতে না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা। পুজোর এই ক’টা দিন পরিত্যক্ত পাত্র, প্লাস্টিকের পরিত্যক্ত কাপ থেকে আইসক্রিমের গ্লাস—যত্রতত্র পড়ে থেকে জল জমার আশঙ্কা রয়েছে। পুজো কমিটিগুলোকেও সচেতনতা প্রচারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy