Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Tea Garden

বছর শেষের পাতায় জাগছে ভরসা

চা শিল্পের পরিস্থিতি ভাল নয় বলেই দাবি চা বাগান পরিচালকদের। কিছু বাগানের পাতা ভাল দাম পেলেও, বেশিরভাগ বাগানের পাতা গড়পড়তা কম দামে বিকোচ্ছে বলে দাবি।

অপেক্ষা: বাগানে চা পাতা তোলার পর এ বার বিক্রির পালা। নিজস্ব চিত্র

অপেক্ষা: বাগানে চা পাতা তোলার পর এ বার বিক্রির পালা। নিজস্ব চিত্র

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:৩৮
Share: Save:

বছরের গোড়ায় কপালে ভাঁজ পড়লেও, বছর শেষে চা শিল্পের কপাল খানিকটা চওড়াই হল বলা যায়। অন্তিম বেলায় গত বছরের দামকে টেক্কা দিল চা পাতার নিলাম। এটা বাগানে কিছুটা হলেও ভরসা জোগাচ্ছে।

যদিও চা শিল্পের পরিস্থিতি ভাল নয় বলেই দাবি চা বাগান পরিচালকদের। কিছু বাগানের পাতা ভাল দাম পেলেও, বেশিরভাগ বাগানের পাতা গড়পড়তা কম দামে বিকোচ্ছে বলে দাবি। নভেম্বরে উত্তর ভারতের চা পাতা দর পেয়েছে গড়ে কেজি প্রতি ১৯৭ টাকা ৪৮ পয়সা এবং গত অক্টোবরে চা পাতা দর পেয়েছে ২০৭ টাকা ৪১ পয়সা। তার আগের মাসে এই দর ছিল ২০৮ টাকা। মাসের নিরিখে দাম কিছুটা পড়লেও, সব ক্ষেত্রেই গত বছরের থেকে কেজি প্রতি অনেক বেশি চায়ের দর উঠেছিল এ বছর। অন্তত কেজি প্রতি ১০-১১ টাকা বেশি হয়েছে।

শীতের সুখা সময়ে চা পাতা তোলা বন্ধ থাকে। অনেক রুগ্‌ণ বা ধুঁকতে থাকা চা বাগান এই সময়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ইতিমধ্যে একটি চা বাগান বন্ধও হয়েছে। পাতার দাম গত বছরের থেকে ভাল হওয়ায়, সে প্রবণতা তুলনায় কম হবে বলেই আশা করা যাচ্ছে।

এ বছরের শুরুটা হয়েছিল চা পাতা বিক্রিতে মন্দার ছায়া ফেলে। গোটা দেশের নিলামের নিরিখে উত্তর ভারতের চায়ের দর হু-হু করে পড়ে যায়। গত জানুয়ারি মাস থেকে জুন মাস পর্যন্ত চা পাতার দাম কম হতে থাকে। এমনকি, বাজারে প্রথম ফ্লাশের চা পাতা চলে এলেও, দাম ওঠার মোটেই কোনও লক্ষণ ছিল না। চা বাগান পরিচালকদের একাংশ মনে করছিলেন, বেশি দাম পড়লে উৎপাদন খরচের পুরোটা তুলতে সমস্যায় পড়তে হবে। বহু বাগানে উৎপাদন কমিয়ে দেওয়ারও চিন্তাভাবনাও হয়েছিল। যার প্রভাব সরাসরি শ্রমিকদের মজুরিতে পড়ার আশঙ্কা ছিল। সে তুলনায় বছরের শেষ দিকে চা পাতার দাম উঠে যায়।

যদিও চা বাগান পরিচালকদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’-এর ডুয়ার্স শাখার চেয়ারম্যান জীবন পাণ্ডে বলেন, “শেষের দিকে কয়েক মাস কিছু বাগানের পাতার দাম ভাল উঠেছে। কিন্তু গড়পড়তা বাজার ভাল নয়। পাতার উৎপাদন কমেছে, দামও কমেছে।”

চা পাতার দাম বৃদ্ধির নেপথ্যে নানা কারণ রয়েছে। বছরের মাঝামাঝি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে চা পাতার রফতানি কমে গিয়েছিল। তার ফলে, দেশের বাজারে দামও কমে যায়। ধীরে ধীরে রফতানি বাড়লে, ফের চা পাতার দাম বাড়তে শুরু করে। আবহাওয়ার কারণে চা পাতার মান খারাপ হয়ে যায়। তার ফলেও দাম কমে। সর্বোপরি চায়ের চাহিদাও কিছুটা কমে যাওয়ায় দামে প্রভাব পড়েছিল বলে দাবি।

  • ছোট চা বাগানের মালিকদের সংগঠনের কর্তা বিজয়গোপাল চক্রবর্তী মঙ্গলবার বলেন, “আগামী কয়েক মাসে পাতার দাম কেমন থাকে, তার উপরেই চা শিল্পের অনেক কিছু নির্ভর করছে।”
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tea Garden Jalpaiguri Tea workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE