—প্রতীকী চিত্র।
প্রতিদিন পাতা মিলছে না, সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন করে পাতা তোলা বন্ধ রাখছে ছোট চা বাগানগুলি। উত্তরবঙ্গ তথা রাজ্যের মোট চা পাতা উৎপাদনের ৬০ শতাংশের কাছাকাছি পরিমাণ পাতা আসে ছোট চা বাগান থেকে। আবহাওয়ার সঙ্কট সেই ছোট চা বাগান থেকেই পাতা কেড়ে নিচ্ছে। ছোট বাগানে পাতা তোলা সপ্তাহে দু’-তিন দিন বন্ধ থাকায় আয় কমছে শ্রমিকদেরও। যদিও তাঁদের আশা, কয়েক পশলা বৃষ্টি হলেই পাতার পরিমাণ ফের বাড়বে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস আজ, রবিবার থেকে বৃষ্টি শুরু হতে পারে উত্তরবঙ্গে।
মূলত, বৃষ্টির অভাবেই উত্তরের চা বাগিচায় পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে। ছোট-বড় সব বাগানেই পাতার সঙ্কট দেখা গিয়েছে। চা পর্ষদের তরফেএখনও তথ্য প্রকাশ করা না হলেও এপ্রিল এবং মে মাসে অর্ধেকের বেশি উৎপাদন কমেছে বড় বাগানের। সাধারণত বড় বাগানে একাধিক ডিভিশন থাকে। সব মিলিয়ে পাতার উৎপাদন কমলেও বাগান সচল রয়েছে। সমস্যায় ছোট বাগানগুলি। এক-একটি বাগান গড়পড়তা পাঁচ বিঘা বা তার কম এলাকা জুড়ে রয়েছে। সেখানে পাতা মেলাই দায় হয়ে পড়েছে। বাধ্য হয়ে সপ্তাহে দু’-তিন দিন উৎপাদন বন্ধ রাখতে হচ্ছে ছোট বাগানগুলিকে। ছোট চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠনের (সিস্টা) সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “পাতা তোলা সপ্তাহে কয়েক দিন বন্ধ করা ছাড়া, উপায় নেই। পাতাই পাওয়া যাচ্ছে না। এক দিন পাতা তোলা হলে, পরের দিন গাছে আর পাতা মিলছে না। সে কারণে এক-দু’দিন বন্ধ রেখে বাকি দিনগুলোয় তোলা হচ্ছে।”
উত্তরবঙ্গে যে ‘সিটিসি’ চা পাতা তৈরি হয় তার বেশিরভাগটাই আসে ছোট বাগান থেকে। উত্তরবঙ্গের ‘সিটিসি’ চায়ের ভাল চাহিদা রয়েছে গুজরাত এবং মহারাষ্ট্রে। পাতার সঙ্কটের জন্য এ বারে সেই রফতানি কতটা হবে তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। দেশের চা পাতা প্রস্তুতকারী নামী দু’টি সংস্থা উত্তরবঙ্গের ছোটবাগানের চা পাতা চুক্তির মাধ্যমে কেনে। সেই সংস্থাগুলিকে পাতা সরবরাহ কতটা করা যাবে তা নিয়ে সংশয়ে ‘বটলিফ’ কারখানাগুলি। সব মিলিয়ে তৈরি হয়েছে দাম বৃদ্ধির আশঙ্কাও। খোলা বাজারে চায়ের সরবরাহে টান পড়লে দাম বাড়বেই বলে আশঙ্কা। সেই সঙ্গে রোগ-পোকার আক্রমণে পাতার গুণমান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
আপাতত চা পাতা তোলা সপ্তাহে বন্ধ থাকায় আশঙ্কায় শ্রমিকেরাও। ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা বাড়ছে। তৃণমূলের চা শ্রমিক নেতা স্বপন সরকারের অবশ্য দাবি, “আবহাওয়ার কারণে চা বাগিচায় সঙ্কট এসেছে ঠিকই, অনেক ছোট বাগানে পাতা তোলাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ছোট চা বাগানের কোনও শ্রমিকেরই কাজ যাবে না, এটা আশ্বাস দিতে পারি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy