মহানন্দার চরে রাতারাতি উঠে গিয়েছে অস্থায়ী কাঠামো। ছবি: সন্দীপ পাল।
ফের নদী দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে শিলিগুড়ির ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের দশরথপল্লি এলাকায় মহানন্দা নদীর চরে। বুধবার রাতভর বাঁশ পুঁতে, তক্তা, বেড়া দিযে নদীর চরে অন্তত ৫০ টি ঘর গড়ে ওঠে বলে অভিযোগ। পুরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের অভিযোগ, রাজ্যের শাসক দলের লোকদের একাংশের মদত রয়েছে এর পিছনে। লক্ষীকলোনি নামে পরিচিত ওই এলাকায় চরের মধ্যে কে বা কারা ঘর তৈরি করছেন খবর পেয়েই স্থানীয় কাউন্সিলর রাতে ফোন করে পুলিশ, পুর কমিশনার, মেয়রকে জানান। বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশ গিয়ে ওই সমস্ত জবরদখলকারীদের অধিকাংশকে হঠিয়ে দেয়। তবে এখনও জবরদখলকারীদের কয়েকটি নির্মাণ রয়ে গিয়েছে।
মেয়র বলেন, ‘‘সারা রাত ধরে ওই এলাকায় নদীর চর দখল করে কিছু লোক ঘর বানিয়েছে। ভোটের সময় পুলিশ প্রশাসন ব্যস্ত থাকে। নির্বাচনী বিধি জারি রয়েছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নদীর জায়গা দখল করতে সক্রিয় হয়েছে ওই লোকজন। রাজ্যের শাসকদলের একাংশের মদতেই হচ্ছে। রাতেই পুলিশকে জানানো হয়েছে।’’ তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার জানান, বিষয়টি বিস্তারিত জানা নেই। তবে তৃণমূলের কেউ ওই কাজের সঙ্গে যুক্ত নন বলে তাঁর দবি।
এলাকার কাউন্সিলর প্রীতিকণা বিশ্বাস জানান, রাতে খবর পান কিছু লোকজন মহানন্দার চর দখল করে বাড়ি বানাচ্ছে।
এর পরেই রাতেই ভক্তিনগর থানা, সেচ দফতরকে জানানো হয়। কাউন্সিলর বলেন, ‘‘পুর কমিশনারকে জানিয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। এ দিন লিখিত অভিযোগও জানানো হয়েছে।’’ তিনি জানান, অবৈধ নির্মাণ উচ্ছেদ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তো পুলিশকেই দেখতে হবে। তাই পুলিশকে জানিয়েছি। পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া জানান, রাতে পুলিশকে ফোন করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছেন। তবে এখনও যারা ঘর সরাননি তাদের ক্ষেত্রেও ব্যবস্থা নেওয়া নেওয়ার দাবি তুলেছেন কাউন্সিলর।
পুর কমিশনার জানান, এ ভাবে চর দখলের কোনও ভাবেই চলতে পারে না। পুলিশকে তাই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলেছেন। সেই সঙ্গে সেচ দফতরকেও জানানো হয়েছে। কেন না নদীর জায়গা সেচ দফতরের অধীনে রয়েছে।
সেচ দফতরের বাস্তুকার সমর সরকার বলেন, ‘‘এখনও এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ভূমি রাজস্ব আধিকারিককে জানানো হবে। তাদের সঙ্গে নিয়ে নৌকাঘাট এলাকায় চরে দখল করে তৈরি বাড়িঘর আমরা উচ্ছেদ করেছি।’’
নদীর চর দখলের অভিযোগ রয়েছে ভুরিভুরি। কড়াইবাড়ি থেকে ফুলবাড়ি এলাকা পর্যন্ত ৫০ হাজার বাসিন্দা নদীর বুকে বসে রয়েছে বলে অভিযোগ পরিবেশপ্রেমী সংগঠন হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের।
মহানন্দা সেতু লাগোয়া নদী খাতে মধ্যে পাকা বাড়ি তৈরি বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষও। তার পরেও এ ভাবে নদীর জায়গা দখলের চেষ্টাতেই স্পষ্ট কিছু মানুষ পুরসভা, পুলিশ, প্রশানকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তাদের মতো নদীর জায়গা দখলে সক্রিয় রয়েছে।
লক্ষ্মীকলোনি এলাকার বাসিন্দাদের একাংশই চর দখলের সঙ্গে যুক্ত বলে বাসিন্দাদের একাংশই জানিয়েছেন। নদীর জায়গায় একটি অস্থায়ী ছাউনি বানিয়ে মন্দির তৈরি করা হয়েছে। কাছেই নদীর চরে গজিয়ে উঠেছে একটি খাবারের দোকান। এ দিন বিকেল পর্যন্ত ওই সমস্ত বাড়ি সরাতে পারেনি পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy