ডুডুয়া, বিরকিটি নদীর জলে ভেসেছে ফালাকাটা-ধূপগুড়ি জাতীয় সড়ক।ছবি: রাজকুমার মোদক
বৃষ্টির জলে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের সড়ক যোগাযোগ। জলের তোড়ে কোথাও জাতীয় সড়ক ধসে গিয়েছে, কোথাও রাজ্য সড়কের উপর দিয়ে হাঁটু সমান জল বইছে। কোথাও আবার বাড়ছে ধসের আশঙ্কা। উত্তর দিনাজপুরের পাঞ্জিপাড়া এলাকায় বিহারের কিশানগঞ্জগামী শয়ে শয়ে ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। সড়ক যোগাযোগের এই পরিস্থিতি উদ্বেগ বাড়িয়েছে প্রশাসনের। মূলত ত্রাণ পৌঁছে দিতে সমস্যা হওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে।
৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে মহানন্দার জল বইতে থাকায় উত্তরবঙ্গের সঙ্গে বিহারের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। এই সড়কের আরও অন্তত তিন জায়গায় জল জমে যান চলাচল বন্ধ। বালুরঘাটে ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়ক ছুঁয়ে আত্রেয়ীর জল বইছে। সড়কের কিছু অংশ ধসে গিয়েছে। এই রাস্তা দিয়েও যান চলাচল বন্ধ। জলে ডুবে রয়েছে উত্তরবঙ্গের অন্তত ২০টি রাজ্য এবং গ্রামীণ সড়ক। আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারের অন্তত ২৫টি জনপদ এবং গ্রামের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ। একাধিক ধসে শনিবার দিনভর দার্জিলিঙে যাওয়ার ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ ছিল। ধস সরিয়ে রবিবার যান চলাচল শুরু হলেও, বৃষ্টি চলতে থাকায় যে কোনও সময়ে ধসের আশঙ্কায় রয়েছে প্রশাসন।
আরও পড়ুন: বাঁধভাঙা ক্ষয়ক্ষতি
এই পরিস্থিতিতে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে স্বাভাবিক উড়ান। বৃষ্টিতে বিমান চলাচলে কোনও প্রভাব এখনও পড়েনি। বৃষ্টির কারণে দৃশ্যমানতা কমার আশঙ্কা থাকলেও বাগডোগরা বিমানবন্দরের তরফে জানানো হয়েছে রবিবারেও বিমান ওঠানামা ছিল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।
উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রধান ৩১, ৩১ডি, ৫৫ এবং ৫১২ এই চার জাতীয় সড়কই বৃষ্টিতে পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। রবিবার দুপুরের পরে বেশিরভাগ নদীর জল কমতে থাকে। তাতে জাতীয় এবং রাজ্য সড়কগুলি থেকে জল মেনে গেলেও যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। জলের তোড়ে কোনও রাস্তা ধসে গিয়েছে, কোথাও বা পিচ রাস্তার ওপর তৈরি হয়েছে পেল্লায় গর্ত। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় সেই সব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। যেমন তোর্সা নদীর ওপরে কাঠের সেতু ভেঙে আলিপুরদুয়ারের সঙ্গে ফালাকাটার যোগাযোগ থমকে গিয়েছে। আবার ডুডুয়া নদীর জল রাস্তার ওপর দিয়ে প্রবল বেগে বইতে থাকায় রবিবারেও ফালাকাটা-ধূপগুড়ি সড়কে যান চলাচল করতে পারেনি।
আরও পড়ুন: উদ্ধারে এনডিআরএফ
রাস্তায় জল থাকায় কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারের বিস্তীর্ণ এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার রাস্তাই খুঁজে বের করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে দাবি প্রশাসনের কর্তাদের। রবিবার উত্তরবঙ্গের জেলাশাসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। গৌতমবাবু বলেন, ‘‘অভূতপূর্ব পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যে রাস্তা থেকে জল নেমেছে সেখানে দ্রুত মেরামতির কাজ চলছে। বাকি রাস্তা থেকে জল নামলেই যাতে অন্তত ধীরে হলেও চলাচল শুরু হতে পারে তার ব্যবস্থা হচ্ছে।’’
ভারী বৃষ্টির জেরে উত্তরবঙ্গে বিভিন্ন স্টেশনে জল জমে যাওয়ায় ব্যাহত ট্রেন চলাচল। যার জেরে মালদহ স্টেশন থেকেই ফিরে যেতে হল অনেককেই। বন্ধ শিলিগুড়ির সঙ্গে সরাসরি বাস পরিষেবাও। শিলিগুড়ির ছাত্রী পিউ ঘোষ, ধুপগুড়ির বাসিন্দা দয়াল সরানেরা বলেন, ‘‘স্টেশন থেকে বলা হচ্ছে বাসে যেতে। সেখানে গিয়েও বাস পাচ্ছি না। কী ভাবে বাড়ি পৌঁছব কিছুই বুঝতে পারছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy