স্বতি পেতে। জসপাইগুড়ির ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানে। ছবি: সন্দীপ পাল।
একটানা বৃষ্টিহীন দিন দেখে চলছে রাজ্যের উত্তর প্রান্ত। বৃষ্টির ফোঁটা না পেয়ে দু’টি কুঁড়ির একটি পাতার দেখাও ঠিকঠাক মিলছে না চা বাগিচায়। তাতেই যেন চা বলয় জুড়ে পড়ছে দীর্ঘশ্বাস। চা বাগান পরিচালকদের অন্যতম বৃহৎ সংগঠন ‘টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া’র সদর দফতর থেকে বিবৃতি দিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, আগামী মাসে চা পাতার উৎপাদন ৫০ শতাংশ কমে যেতে পারে। অর্থাৎ, চা শিল্প ফের বড়সড় সঙ্কটের মুখে।
চা পাতার উৎপাদন কমে যাওয়ার নেপথ্যে একটি অংশ দায়ী করেছে চা পর্ষদের কীটনাশক নিয়ে কড়া নির্দেশকে। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে চা বাগানে রাসায়নিক কীটনাশক প্রয়োগ নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছে চা পর্ষদ। তার জেরে, বহু বাগানে প্রচলিত কীটনাশক দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাপপ্রবাহের জেরে এবং বৃষ্টি না থাকার কারণে চা গাছে রোগপোকার আক্রমণ বেড়েছে। চা শিল্পের একাংশের দাবি, শক্তিশালী রাসায়নিক কীটনাশক দিলে পোকা মারা সম্ভব হত এবং উৎপাদন বাড়ত। যদিও ‘টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’র তরফে চায়ের উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশের বিবৃতিতেই দাবি করা হয়েছে, কীটনাশক নিয়ে চা পর্ষদের কড়়াকড়িকে স্বাগত জানানো হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব প্রবীরকুমার ভট্টাচার্য বলেন, “কেন্দ্রের খাদ্য সুরক্ষা সংস্থার তরফে যে কীটনাশকের নিষিদ্ধ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে এবং নিয়ম-নীতি জানানো হয়েছে সেটাকে স্বাগত জানাই। ভাল চা তৈরি করতে আমরা বদ্ধপরিকর। তবে চা শিল্পে এখন খুবই আশঙ্কার সময়, আবহাওয়ার কারণে বড় ক্ষতির মুখে চা শিল্প।”
শুধু উত্তরবঙ্গ নয়, সূত্রের দাবি, অসমেও চা সঙ্কটে। তাপপ্রবাহের কারণে মার্চ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ২৩ শতাংশ এবং অসমে প্রায় ৪০ শতাংশ চায়ের উৎপাদন কমেছে। এপ্রিলের সরকারি পরিসংখ্যান এখনও আসেনি। তাতে অন্তত ৫০ শতাংশ উৎপাদন ক্ষতির আশঙ্কা করছে চা শিল্প। উৎপাদন কমে গেলেও রাজস্ব আয় তেমন বাড়েনি বলেও আক্ষেপ চা শিল্পের। চাহিদা-জোগানের সূত্রও কার্যকর হয়নি বলে দাবি করে ২০২০ সালের করোনা আবহের প্রসঙ্গ আনা হয়েছে। করোনা আবহে প্রথমে উৎপাদন কমে গেলেও, চাহিদা বেড়ে যায়। তাতে রাজস্ব আয় বেড়ে গিয়েছিল। অ্যাসোসিয়েশনের ডুয়ার্স-তরাই শাখার সচিব সুমিত ঘোষ বলেন, “এ বারের চা শিল্পের সঙ্কট নজিরবিহীন। এক সঙ্গে বেশ কিছু প্রতিকূলতা চা শিল্পের
উপরে চেপে বসেছে। আপাতত কিছুদিন ভাল বৃষ্টি চাই।” কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর অবশ্য তেমন সুখবর দিচ্ছে না চা শিল্পকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy