জলপাইগুড়ির একটি চা বাগানে। ছবি: সন্দীপ পাল।
উত্তরবঙ্গের বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের আর্থিক সাহায্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার৷ এর মধ্যে দার্জিলিং পাহাড়ের ছ’টি, ডুয়ার্সের ন’টি এবং তরাইয়ের একটি চা বাগান রয়েছে। ভোটের আগে, শাসক দলের ‘চা শ্রমিকদের ভোটবাক্স’ মনে পড়েছে বলে কটাক্ষ করেছেন বিরোধী নেতারা। রাজ্য সরকারের শ্রম দফতরের ‘ফাওলাই’ প্রকল্পের অধীনে আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি মধ্যে বাগানগুলি থেকে আবেদনপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। চা বাগান নিয়ে তৈরি মন্ত্রিগোষ্ঠীর সদস্যেরা গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেন। তার পরে, গত সোমবার শ্রম দফতরের তরফে রাজ্যের শ্রম কমিশনার জাভেদ আখতার সরকারি নির্দেশিকা জারি করেছেন।
এতে সব মিলিয়ে বন্ধ বাগানের কয়েক হাজার শ্রমিক পরিবারের কিছুটা সমস্যা মিটবে বলে শাসক দলের তরফে প্রচারও শুরু হয়েছে। চা বিষয়ক মন্ত্রীগোষ্ঠীর সদস্য তথা ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর প্রধান অনীত থাপা বলেন, ‘‘পাহাড়ের ছ’টি চা বাগানের এ বার থেকে সরকারি আর্থিক সাহায্য পাবেন। তবে আমাদের আশা, দ্রুত বন্ধ বাগানগুলি স্বাভাবিক হবে। শ্রমিক পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোই আমাদের লক্ষ্য।’’
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, দার্জিলিঙের রংমুখ সিডার, মুন্ডাকোঠি, চুংথুং, নাগরি, পেশক এবং কার্শিয়াঙের অম্বুটিয়া বাগান তালিকাভুক্ত হয়েছে। শিলিগুড়ির তরাইয়ের ত্রিহানা এবং ডুয়ার্সের সোনালি, বামনডাঙা, সামসিং, রায়মাটাং, দলসিংপাড়া, ডালমোড়, কালচিনি, রামঝোরা, ঢেকলাপাড়া বাগানের নির্দিষ্ট সংখ্যক শ্রমিকদের আর্থিক সাহায্য করা হবে। সরকারি প্রকল্পে মাসে দেড় হাজার টাকা করে শ্রমিকেরা পাবেন। এর পরে, বাগানে নতুন মালিক বা সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে শ্রম দফতর কাজে গতি আনবে। তবে লোকসভা ভোটের আগেই মাসিক টাকা চালু করার চেষ্টা চলছে।
রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ তথা চা বাগানের শ্রমিক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চের নেতা সমন পাঠক সরকারি উদ্দেশ্য নিয়ে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘বন্ধ বাগানের শ্রমিকেরা টাকা পাবেন, তা ভাল। কিন্তু ভোটের আগে করার মানেই হচ্ছে, তৃণমূল ভোট-বাক্সের কথা মাথায় রেখেই সব করছে।’’ তাঁর দাবি, এ দিন ন্যূনতম মজুরি নিয়ে বৈঠক ছিল। তাতে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
শ্রম দফতরের অফিসারেরা জানান, পাহাড়, তরাই এবং ডুয়ার্স মিলিয়ে ১৬টি বাগান ‘বড় বাগান’ বলেই পরিচিত। পাহাড়ের বাগানগুলিতে গত বছর থেকেই সমস্যা চলছে। ডুয়ার্সেরগুলি চালুর চেষ্টা করা হলেও, তা ফলপ্রসূ হয়নি। একই পরিস্থিতি রয়েছে তরাই এলাকার ত্রিহানা বাগানে। যদিও ত্রিহানা বাগান নিয়ে মালিক পক্ষ শ্রমিক সংগঠনের একাংশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। এই বাগানের একাংশের পাতা বাইরের রাজ্যের কারও হাতে দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy