Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

অপহরণের নালিশ গৌরী পঞ্চায়েতে

পঞ্চায়েতের এক কংগ্রেস সদস্য ও এক সিপিএম সদস্যার স্বামীকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে খুনের হুমকি দিয়ে অপহরণ করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের একদল কর্মীর বিরুদ্ধে। গত সোমবার রাতে কংগ্রেস পরিচালিত রায়গঞ্জের গৌরী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রানি বর্মন পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে ওই অভিযোগ জানিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৬ ০৯:৪৪
Share: Save:

পঞ্চায়েতের এক কংগ্রেস সদস্য ও এক সিপিএম সদস্যার স্বামীকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে খুনের হুমকি দিয়ে অপহরণ করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের একদল কর্মীর বিরুদ্ধে। গত সোমবার রাতে কংগ্রেস পরিচালিত রায়গঞ্জের গৌরী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রানি বর্মন পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে ওই অভিযোগ জানিয়েছেন। কংগ্রেস ও সিপিএমের অভিযোগ, তৃণমূল জোর করে ওই পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করার জন্য বিরোধী দলের সদস্য ও সদস্যাদের নানা প্রলোভন ও ভয় দেখিয়ে দলে টেনে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার ছক করেছে। কংগ্রেসের ও সিপিএমের দুই পঞ্চায়েত সদস্য সদস্যা তৃণমূলে যোগ দিতে রাজি হননি। সেই কারণে, কংগ্রেসের ওই পঞ্চায়েত সদস্য ও সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীকে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা অপহরণ করে আটকে রেখেছে।

তবে রায়গঞ্জ থানার আইসি গৌতম চক্রবর্তীর দাবি, প্রাথমিক তদন্তে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে বা শূন্যে গুলি ছুড়ে কাউকে অপহরণ করার অভিযোগের সত্যতা মেলেনি। তবুও পঞ্চায়েত প্রধানের অভিযোগের ভিত্তিতে অজ্ঞাতপরিচয় একদল লোকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পঞ্চায়েত সদস্য সহ দুজনকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাঁরা স্বেচ্ছায় একটি রাজনৈতিক দলের কর্মীদের সঙ্গে এলাকার বাইরে রয়েছেন বলে দাবি করেছেন। পুলিশ তাঁদেরকে বাড়িতে পৌঁছে দিতে চাইলেও তাঁরা রাজি হননি। পুলিশ তাঁদের বয়ান ভিডিও রেকর্ড করে রেখেছে। তদন্তের স্বার্থে পরবর্তীতে প্রয়োজনে সেই ভিডিও ফুটেজ আদালতে পেশ করা হবে।

উল্লেখ্য, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে গৌরি গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ২০টি আসনের মধ্যে ১৩টি আসন দখল করে পঞ্চায়েতের ক্ষমতা পুনর্দখল করে কংগ্রেস। বামফ্রন্ট চারটি, সমাজবাদী পার্টি দুটি ও এক নির্দল একটি আসন দখল করে। কংগ্রেস ও সিপিএমের অভিযোগ, সোমবার দুপুরে আচমকা তৃণমূলের একদল অজ্ঞাতপরিচয় কর্মী একটি ছোটগাড়ি নিয়ে পঞ্চায়েত কার্যালয়ের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। এরপর অভিযুক্তরা পঞ্চায়েতের কার্যালয়ে ঢুকে বিশাহার সংসদের কংগ্রেস সদস্য মাফুজ আলম ও এলেঙ্গিয়া সংসদের সিপিএম সদস্যা সাবিনা খাতুনের স্বামী কলিমুদ্দিন শেখকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে খুনের হুমকি দিয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে অপহরণ করে অন্যত্র চলে যায় বলে অভিযোগ। অভিযুক্তরা যাওয়ার সময়ে শূন্যে এক রাউন্ড গুলি চালায় বলেও অভিযোগ। যদিও ঘটনাস্থল থেকে কোনও কার্তুজের খোল পাওয়া যায়নি বলে পুলিশের দাবি।

রায়গঞ্জ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি ও সিপিএমের রায়গঞ্জ লোকাল কমিটির সম্পাদক নীলকমল সাহা বলেন, তৃণমূল জোর করে ওই পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করার জন্য বিরোধী দলের সদস্য ও সদস্যাদের নানা প্রলোভন ও ভয় দেখিয়ে দলে টেনে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার চক্রান্ত করেছে। মাফুজবাবু ও সাবিনাদেবী তৃণমূলে যোগ দিতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘‘তার জন্যই মাফুজবাবু ও সাবিনাদেবীর স্বামী কলিমুদ্দিনবাবুকে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ওই দিন আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে খুনের হুমকি দিয়ে অপহরণ করে তাদের ডেরায় আটকে রেখেছে।’’

রায়গঞ্জ ব্লক তৃণমূল সভাপতি পূর্ণেন্দু দে কংগ্রেস ও সিপিএমের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তাঁর পাল্টা দাবি, কংগ্রেস পরিচালিত ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের অনুন্নয়ন ও দুর্নীতির প্রতিবাদে তৃণমূলে যোগ দিয়ে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার জন্য কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের বেশ কিছু পঞ্চায়েত সদস্য গ্রামের বাইরে গিয়ে পরিচিতদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলে যোগ দিলে তাঁরা কংগ্রেস ও সিপিএমের হামলার শিকার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা না আনা পর্যন্ত গ্রামের বাইরেই থাকতে চান বলে আমাদের জানিয়েছেন।’’ পূর্ণেন্দুবাবুর কটাক্ষ, ‘‘দিনের আলোয় দুষ্কৃতীরা পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকে দুজনকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে অপহরণ করে শূন্যে গুলি চালিয়ে এলাকা ছেড়ে চলে গেল, আর বাসিন্দারা কেউ কিছুই দেখলেন না! অস্তিত্বহীন কংগ্রেস ও সিপিএম এরকম বলিউডি গল্প ফেঁদে সবার হাসির খোরাকে পরিণত হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

kidnapped Allegation TMC CPM Raigunje
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE