Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Siliguri

ডেঙ্গিতে মৃত্যু শাসক নেতা-সহ দু’জনের

রবিবার নার্সিংহোমে গিয়ে বিষ্ণুকে দেখে আসেন মেয়র গৌতম দেব। চিকিৎসকের সঙ্গেও কথা বলেন। ওই দিনই তাকে ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়।

সোমবার নার্সিংহোমের সামনে মেয়র গৌতম দেব। নিজস্ব চিত্র

সোমবার নার্সিংহোমের সামনে মেয়র গৌতম দেব। নিজস্ব চিত্র

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২২ ০৮:৪৭
Share: Save:

ফের ডেঙ্গিতে দু’জনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে শিলিগুড়িতে। তাঁদের এক জন তৃণমূল নেতা, অপর জন তৃণমূলের কর্মী। সোমবার শিলিগুড়ির ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই দু’জন শহরের দু’টি নার্সিংহোমে মারা যান। দু’জনেই ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরিবার-পরিচিত এবং দল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের একজন বিষ্ণুপদ সাহা (৫৬)। বাড়ি ডাবগ্রাম এলাকায়। তিনি ওয়ার্ড তৃণমূলের দীর্ঘদিনের সভাপতি। ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদকও। তিনি সূর্যনগর মাস্টার প্রীতনাথ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি, স্থানীয় জাগরণী সঙ্ঘের সভাপতি। ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদক হিসাবে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের কাজ তিনিই তদারকি করতেন। অভিযোগ, কালীপুজো থেকে জ্বর হলেও গুরুত্ব দেননি। চিকিৎসককে ফোন করে ওষুধ খান। তিন দিন পর পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়ে। শনিবার বিকেলে কলেজপাড়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। ওই রাতেই তাঁকে সেবক মোড় লাগোয়া একটি নার্সিংহোমে নেওয়া হয়। এ দিন সেখানেই মারা যান। মৃত্যুর শংসাপত্রে ‘সেপসিস উইথ মাল্টি অর্গান ফেলিওর’ লেখা রয়েছে।

মৃত অপর জনের নাম নান্টু পাল (৩৯)। বাড়ি সত্যজিৎ রায় লেনে। তাঁর কাকা প্রণব পাল জানান, গত বুধবার থেকেই জ্বরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। একবার রক্ত পরীক্ষা করালেও ডেঙ্গি ধরা পড়েনি। পরে রবিবার ফের রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়ে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ওই দিন নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। যকৃতের অসুখে বছরখানেক ধরে ভুগছিলেন। তিনি তৃণমূলের কর্মী ছিলেন। রবিবার নার্সিংহোমে গিয়ে বিষ্ণুকে দেখে আসেন মেয়র গৌতম দেব। চিকিৎসকের সঙ্গেও কথা বলেন। ওই দিনই তাকে ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়। মেয়র বলেন, ‘‘খুব দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে আমরা সমস্ত দিক থেকে চেষ্টা করছি।’’ মৃতের বাড়ি এবং ওয়ার্ড তৃণমূলের অফিসে যান মেয়র। শিলিগুড়িতে ডেঙ্গি এবং ডেঙ্গি সন্দেহে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২০ জন। তাতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তৃণমূল নেতা মদন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তায় সকলেই।’’ শহরে আক্রান্ত চার হাজার ছুঁতে চলায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। তিনি এ দিন বিষ্ণুর বাড়িতে যান।

তবে স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্তকে দেখা যায়নি। তিনি দেরিতে খবর পান বলে জানান। বিজেপি বিধায়ক বলেন, ‘‘বিষয়টি তৃণমূল কর্মী হিসাবে দেখছি না। যে ভাবে মানুষ ডেঙ্গি আক্রান্ত হচ্ছেন, মারা যাচ্ছেন তাতে আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে। একটা কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি, পুরবোর্ড একেবারেই অদক্ষ এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থ। খেলা-মেলাতেই তারা বেশি উৎসাহী।’’ অভিযোগ, ডেঙ্গি সংক্রমণের তথ্য লুকনো হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের টিম এলেও তারা কী রিপোর্ট দিল তা জানানো হল না। সচেতনতা, স্প্রে-সহ ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের কাজ যথাযথ হচ্ছে না।

‘‘বিষয়টি তৃণমূল কর্মী হিসাবে দেখছি না। যে ভাবে মানুষ ডেঙ্গি আক্রান্ত হচ্ছেন, মারা যাচ্ছেন তাতে আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Siliguri dengue death TMC workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE