Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

দ্রুত আধার মামনি, রাজুর

দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট ব্লকের ডাঙা পঞ্চায়েতের বদলপুর এলাকার হতদরিদ্র দিনমজুর বাবা চঞ্চল মন্ডল ও মা মীনাদেবীর দুই সন্তানের প্রতিবন্ধী ভাতাই মিলছে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৭ ০৯:০০
Share: Save:

জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী বড় মেয়ে মামনি বাড়িতে শয্যাশায়ী। ছোট ছেলে রাজুও পঞ্চম শ্রেণির পর থেকে চলার শক্তি হারিয়ে ধুঁকছে। মামনি তরুণী। রাজু কিশোর। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট ব্লকের ডাঙা পঞ্চায়েতের বদলপুর এলাকার হতদরিদ্র দিনমজুর বাবা চঞ্চল মন্ডল ও মা মীনাদেবীর দুই সন্তানের প্রতিবন্ধী ভাতাই মিলছে না। ফলে চিকিৎসা করাতে না পেরে চোখের সামনে তাদের ধীরে ধীরে মরতে দেখে দিশাহারা গরিব বাবা মা।

রাজুর প্রতিবন্ধী ভাতাই শুরু হয়নি। আর মামনির প্রতিবন্ধী ভাতা শুরু হলেও আধারকার্ড না হওয়ায় ব্যাঙ্ক থেকে টাকা মিলছে না। বিষয়টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে এলে বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে জেলাপ্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপরই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় প্রতিবন্ধী দুই ভাইবোনের আধারকার্ড তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। এ দিন দুপুরে অতিরিক্ত জেলাশাসক অমলকান্তি রায় ছুটে যান বদলপুরে রাজুদের বাড়িতে।

মিনাদেবী বলেন, ‘‘ছেলেমেয়েকে বাইরে নিয়ে গিয়ে আধারকার্ড করানো সম্ভব নয়। অথচ আধারকার্ড ছাড়া ব্যাঙ্ক মেয়ের প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা দিচ্ছে না।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক মিনাদেবীকে নগদ ৫ হাজার টাকা অর্থ সাহায্য তুলে দেন। এ ছাড়া, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর থেকে পরিবারটিকে বাসনকোসন ও জামা কাপড় সহ ১৭ রকমের ব্যবহারিক উপকরণ তুলে দেওয়া হয়। ব্লক থেকে প্রতি মাসে বরাদ্দের ২৪ কেজি চালও এ দিন দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে দেওয়া হয় দু’টি হুইলচেয়ার।অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, ‘‘ছেলেমেয়ে দু’টি সোজা হয়ে দাঁড়াতে পর্যন্ত পারে না।’’ মিনাদেবী জানান, দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে কলকাতা, শিলিগুড়ি থেকে দক্ষিণ ভারতের হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে তাঁদের জমি জায়গা সব বিক্রি করে দিতে হয়েছে। এখন দু’বেলা খাবারও জোগাড় হচ্ছে না।

মাটির দেয়াল ও ভাঙা টিনের ছাউনি দেওয়া বাড়িতে একফালি বারান্দায় শুয়ে কাটাতে হয় মামনিকে। বিছানা থেকে সে উঠতে পারে না। ছোট্ট শরীরটা থেকে মাঝে মধ্যে দুটি হাত কেঁপে ওঠে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বাড়িতে গিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা স্পট মেডিক্যাল বোর্ড করে প্রতিবন্ধী দুই ভাইবোনকে পরীক্ষা করেছেন। এসএসকেএমের মতো হাসপাতালে রাজুর চিকিৎসা সম্ভব বলে চিকিৎসকদের মতামত নিয়ে নবান্নতে পাঠিয়েওছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE