রাস্তার উপরে পড়ে রয়েছে দেহ। — নিজস্ব চিত্র
ভর দুপুরে বাজারের মধ্যে এক মহিলা-সহ দু’জনকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে দার্জিলিং জেলা পুলিশের নকশালবাড়ি থানার হাতিঘিসা বাজারে ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, নিহকদের নাম চম্পা সার্কি (৪০) এবং মুন্সি বাসকি (৪৫)। এদের মধ্যে চম্পাদেবীর বাড়ি হাতিঘিসা লাগোয়া মিনগাড়া এলাকায়। সেফদুল্লাজোতের বাসিন্দা মুন্সির ওই বাজারেই মুর্গির দোকান ছিল। অভিযুক্তের নাম শম্ভু বসাক এবং বাড়ি শিলিগুড়ি ইস্টার্ন বাইপাসের আশিঘর এলাকায় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের দাবি, অভিযুক্ত মানসিক ভাবে অসুস্থ বলেই মনে হয়েছে। নিহতের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। হঠাৎ মুর্গির দোকান থেকে ধারাল অস্ত্র নিয়ে তিনি বাজারে চড়াও হন বলে অভিযোগ। পুলিশ খোঁজ শুরু করলেও রাত অবধি আশিঘর এলাকার অভিযুক্তের বাড়ির খোঁজ মেলেনি। ঘটনার পর বাসিন্দাদের একাংশের গণপ্রহারে জখম ওই ব্যক্তিকে প্রথমে নকশালবাড়ি হাসপাতাল পরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, ‘‘খুনের কোনও কারণ বোঝা যায়নি। নিহত, অভিযুক্তরা কেউ কারও পরিচিত নয় বলেই এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে। অভিযুক্তকে বাসিন্দারা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। উনি মানসিক ভাবে অসুস্থ বলেই মনে হচ্ছে। চিকিৎসকেরা বিষয়টি দেখছেন। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, হাতিঘিসা পঞ্চায়েত অফিসের সামনেই বড় বাজার রয়েছে। চা বাগিচা এলাকা হওয়ায় দুপুরের পর থেকেই বাজারে ভিড় শুরু হয়। এ দিনই জমজমাট বাজার চলছিল। পাশেই ৩১ সি জাতীয় সড়ক। সেখানেই অভিযুক্ত দুপুর থেকে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এর আগে কোনওদিনই অভিযুক্তকে এলাকায় দেখা যায়নি। অভিযুক্ত একা একা ঘুরে ঘুরে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছিলেন। কী ভাবে এলাকায় তিনি এলেন, তা-ও পরিষ্কার নয়। সেই সময় রাস্তার পাশে মুর্গির দোকানের ভিতরে ছিলেন মুন্সি। অভিযুক্ত হঠাৎ দোকানের সামনে গিয়ে মুর্গি কাটার ধারালো অস্ত্রটি হাতে তুলে নেন। তার পরে লাফালাফি শুরু করে। মুন্সি টের পেয়ে বাইরে আসতেই অভিযুক্ত তাঁর মাথায় প্রথম কোপ মারে বলে অভিযোগ।
লোকজন বিষয়টি দেখে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেন। নিহত চম্পাদেবীও দোকানের পাশের রাস্তা দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। অভিযুক্ত তাঁকেও তাড়া করে মাথায় কোপ বসিয়ে দেন। এই দেখে লাঠিসোটা নিয়ে লোকজন দল বেঁধে অভিযুক্তের পিছনে তাড়া করে। অভিযুক্তের হাত থেকে ধারালো অস্ত্রটি পড়তেই তাকে গণধোলাই শুরু হয়। বাঁশ, লাঠি দিয়েও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে অভিযুক্তকে উদ্ধার করে নকশালবাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মুন্সি ও চম্পাদেবীর রাস্তাতেই প্রচন্ড রক্তক্ষরণ হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy