Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Fraudulence

চাকরি-প্রতারণাতেও অভিযুক্ত জাল পাসপোর্ট কাণ্ডে ধৃত বরুণ

সিবিআই সূত্রের খবর, ২০১২ সালে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে সাড়ে চার লক্ষ টাকা করে নিয়ে বরুণ কোল ইন্ডিয়ায় চাকরির বন্দোবস্ত করে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বলে অভিযোগ।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:৪০
Share: Save:

পাসপোর্ট জালিয়াতি চক্রের অন্যতম চাঁই নকশালবাড়ির বাসিন্দা বরুণসিংহ রাঠৌরের বিরুদ্ধে দশ বছর আগে টাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থায় চাকরি দেওয়ার টোপের অভিযোগ সামনে এসেছিল। দার্জিলিং জেলা পুলিশের কাছে এ নিয়ে অভিযোগও জমা পড়েছিল। অভিযোগকারীদের টাকা ফিরিয়ে সেই যাত্রায় কোনও মতে রেহা‌ই মিলেছিল সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়া বরুণের। যদিও মামলা আর পরে এগোয়নি। অভিযোগ অস্বীকার করেছিল অভিযুক্ত। পাসপোর্ট কেলেঙ্কারির পর সিবিআইয়ের হাতেই পুরনো এই সব তথ্য সামনে এসেছে। সেখানে পঞ্চায়েত দফতরে জাল নথি তৈরি থেকে কেন্দ্রীয় সংস্থায় নিয়োগের টোপের ঘটনাও রয়েছে।

সিবিআই সূত্রের খবর, ২০১২ সালে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে সাড়ে চার লক্ষ টাকা করে নিয়ে বরুণ কোল ইন্ডিয়ায় চাকরির বন্দোবস্ত করে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, আসানসোলে নিয়ে গিয়ে ভুয়ো নিয়োগ প্রক্রিয়ারও বন্দোবস্ত করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। শেষে ধরা পড়ে অভিযুক্ত অন্তত ৩০ জনের টাকা ফেরত দিয়েছিল বলে খবর। এর পরে ২০১৩ সাল থেকে বরুণ পাসপোর্ট তৈরির ব্যবসা ফেঁদে বসেছিল। নকশালবাড়ি থানা থেকে ১০০ মিটারের মধ্যে পানিঘাটা মোড়ে অভিযুক্তের বিরাট বাড়ি। পুলিশের নাকের ডগায় বসে সে পাসপোর্ট জালিয়াতির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিল বলে অভিযোগ।

রবিবার সিবিআইয়ের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বরাবর জালিয়াতির অভিযোগ মিলছে। পঞ্চায়েত স্তরে জাল নথিপত্র তৈরি, কেন্দ্রীয় সংস্থায় ভুয়ো চাকরির অভিযোগের পরে এ বার পাসপোর্ট কেলেঙ্কারি সামনে এল।’’

গত শনিবার সকাল থেকে গ্যাংটক, শিলিগুড়ির পর নকশালবাড়িতে সিবিআই অভিযান শুরু হয়। কলকাতা, উলুবেড়িয়া মিলে ৫০ জায়গায় হানা দেন সিবিআই অফিসারেরা। প্রচুর সংখ্যক পাসপোর্ট, জাল আধার কার্ড, ভোটের কার্ড, অশোক স্তম্ভের ছবি দেওয়া একাধিক ‘সিল’ উদ্ধার হয়। গভীর রাত অবধি তল্লাশি চলে। রাতেই বরুণকে সিবিআই হেফাজতে নিয়ে নেয়। তার এক সঙ্গী এবং চালককেও টানা জেরা করা হয়েছে। তবে তাদের গ্রেফতার করা হয়নি। কলকাতার ড়েপুটি পাসপোর্ট অফিসার, গ্যাংটকের পাসপোর্ট সুপার এবং এজেন্ট বরুণ মিলিয়েই চক্রটি বছর পর বছর ধরে চালাচ্ছিল বলে অভিয‌োগ।

তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, বরুণের আদতে বিহারের মধুবনী জেলার বাসিন্দা। তার দাদু সেখান থেকে নকশালবাড়িতে এসে একটি সিনেমা হলে চাকরি করতেন। নকশালবাড়ির পানিঘাটা মোড়ে অভিযুক্ত কয়েক কোটি টাকা দিয়ে জমি কিনে বিরাট বাড়ি তৈরি করেছিল। এ দিন ভোরে সিবিআই অফিসারেরা অভিযুক্তদের নিয়ে শিলিগুড়ি থেকে বার হন। ঘুরপথে তাঁরা সিকিমের গ্যাংটকে পৌঁছন। সেখানে সিবি‌আই আদালতে অভিযুক্তদের তুলে হেফাজতে নেওয়া হয়। সিকিমের রাজধানী শহরেও কয়েকজনের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অফিসারেরা। আর একটি অফিসারদের দল সমতলেই বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগ করছেন। এই চক্রে দা‌র্জিলিং, কালিম্পং, সুকনা, আলিপুরদুয়ারের কিছু লোকজনের নাম অফিসারেরা পেয়েছেন। সেগুলি খতিয়ে দেখার কাজ চলছে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

fake passport Siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE