ধূপগুড়ি উপ নির্বাচনের বেশী দেরি নেই বৃষ্টিতে ছাতা নিয়ে রেগুলেটেট বাজারে গান ভোটের প্রচার সি পি আই এম প্রার্থী। —নিজস্ব চিত্র।
চা বাগান যার, ধূপগুড়ি তার। এ কথাই আপাতত জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের অন্দরে সবচেয়ে চর্চিত। শুধু তৃণমূল নয়, বিধানসভা উপনির্বাচনে ধূপগুড়ি জিততে বাম, বিজেপি সকলেরই নজরে চা বলয়ই।
এই উপ-নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা দু’লক্ষ ৬৮ হাজারের কাছাকাছি। এই বিধানসভা কেন্দ্রে বড় চা বাগান রয়েছে পাঁচটি। চা বাগান এলাকায় বুথ রয়েছে ৩০টি। প্রতি বুথে অন্তত হাজার করে ভোটার ধরলে, চা বাগানের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত এমন ভোটাদাতার সংখ্যা অন্তত ৩০ হাজার। এর সঙ্গে পরোক্ষ ভাবে চা বাগানের সঙ্গে যুক্ত অথবা চা বাগান এলাকার বাসিন্দা মেলালে, ভোটদাতার সংখ্যা পঞ্চাশ হাজারের কাছাকাছি। সে কারণেই রাজনৈতিক দলগুলি মনে করছে, কেউ যদি চা বাগানের ভোট একচেটিয়া ভাবে দখল করতে পারে, ধূপগুড়ি আসনে জয় হবে সেই দলেরই। গত বিধানসভা ভোটে এই আসনে জয়-পরাজয়ের ব্যবধান ছিল মাত্র সাড়ে চার হাজার। এই অল্প ব্যবধানে জয়ী আসনে চা বলয়ের ভোট পার্থক্য গড়ে দিতে পারে বলেই মনে করছে সব পক্ষই।
চা বলয়ের মন পেতে তৃণমূলের হাতিয়ার রাজ্য সরকারের ঘোষণা করা চা বাগানের জমির পাট্টা। চা বাগানে প্রচারের জন্য তারা আলাদা পদ্ধতি নিয়েছে। এই এলাকায় প্রচারের ভার পুরোটাই দলের শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বের উপরে বর্তেছে। এত দিন চা বলয়ে প্রচারে সমন্বয়ের অভাবের অভিযোগ তৃণমূলের অন্দরে উঠেছে বার বার। যাঁদের হাতে চা বলয়ে প্রচারের দায়িত্ব থাকত, তাঁদের চা বলয় চিনত না এবং চা বলয় যাঁরা চিনতেন, তাঁরা তৃণমূলের প্রচারের দায়িত্ব পেতেন না এমন অনুযোগও শোনা যেত। উপ-নির্বাচনে চা বলয়ের জন্য আলাদা বুথ সভা, আলাদা মিছিল এবং প্রতিটি চা শ্রমিকের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে প্রচার চালাচ্ছে শাসক দল। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি রাজেশ লাকড়া বলেন, “রাজ্য সরকার যে এত বড় একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে কথাই শ্রমিকদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে বলছি। চা বাগানের প্রচার চলছে আলাদা ভাবে। চা বাগানের আর্শীবাদ যে পাবে, ধূপগুড়িতে জয়ও সেই পাবে।”
তৃণমূলের ঠিক উল্টো প্রচার করছে বামেরা। তাদের দাবি, চা বাগানের অব্যবহৃত জমি পুঁজিপতি তথা মালিকদের হাতে তুলে দিতে চায় তৃণমূল সরকার। সে কারণে অব্যবহৃত জমিতে ব্যবসার পরিকল্পনা করেছে সরকার। ধূপগুড়ির অদূরে একটি চা বাগানে সভা করে সিপিএমের চা শ্রমিক নেতা জিয়াউল আলম বলেন, “রাজ্য সরকার চা বাগানের জমি কেড়ে নিয়ে পুঁজিপতি মালিক শ্রেণির হাতে তুলে দিতে চাইছে। চা শ্রমিকদের অধিকার রাখতে আমরা তাঁদের সঙ্গে আছি।” গেরুয়া শিবিরের হয়ে চা বাগানে প্রচারে নেমেছে সঙ্ঘের একটি বড় দল। সঙ্ঘের একটি শাখা সংগঠন ধূপগুড়ির পাঁচটি চা বাগানে ইতিমধ্যেই প্রচার চালাচ্ছে। তার সঙ্গে সঙ্ঘের একটি সেবামূলক সংগঠনও উপ-নির্বাচন ঘোষণার পরে চা বাগানে সক্রিয় হয়েছে। বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী অবশ্য বলেন, “দলের নেতারা চা বাগানে জোরদার প্রচার চালাচ্ছেন। গত লোকসভা, বিধানসভার মতো এ বারেও চা বলয়ের সমর্থন আমাদের দিকেই থাকবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy