Advertisement
০১ মে ২০২৪
Cattle Smuggling

কাদের ‘দৌলতে’ পাচার, তরজা

Representative Image

—প্রতীকী ছবি।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৪৪
Share: Save:

জেলা কোচবিহারে কান পাতলেই শোনা যায়, পাচারের কারবারের ‘মাথারা’ বসে থাকে শহরে। তারা অত্যন্ত প্রভাবশালী। তারা সব সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। শুধু তা-ই নয়, এই পাচারে রয়েছে রয়েছে রাজনৈতিক যোগ, এমন অভিযোগও ঘুরে বেড়ায় সর্বত্র। যা নিয়ে রয়েছে তরজাও। পুলিশ-বিএসএফ অবশ্য সে সবের মধ্যে ঢুকতে চায় না। তারা দাবি করে, পাচার রুখতে তাদের চেষ্টার কোনও ত্রুটি নেই। শীত পড়তেই সীমান্তের পাহারাও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএসএফ কর্তারা। বিএসএফ সূত্রেই জানা গিয়েছে, সাধারণত এক কিলোমিটার পথ পাহারার জন্য পাঁচ থেকে ছ’জন জওয়ানকে মোতায়েন করা হয়। এ ছাড়া, টহলদারি ভ্যান বা মোটরবাইক নিয়েও জওয়ানেরা ঘোরাফেরা করেন। কুয়াশা বাড়তেই কিলোমিটার প্ৰতি জওয়ান সংখ্যা আট জন করে দেওয়া হয়েছে। বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে টহলদারির সংখ্যাও। সেই সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়েও পাচার রোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। পাচারকারীদের চিহ্নিত করতে ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোন। বিএসএফের কর্তা বলেন, "কুয়াশার জন্য ড্রোন কিছুটা কম কাজ করে। তার পরেও বেশ কিছু ছবি আমরা পেয়ে থাকি। যা থেকে পাচারকারীদের হাতে-নাতে ধরতে সুবিধে হয়।"

গরু পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূমের শাসক দলের দাপুটে ওই নেতার বেশ কয়েক জন ঘনিষ্ঠও গ্রেফতার হয়েছে। তার পর থেকে রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে গরু পাচার নিয়ে আক্রমণের তীব্রতা বাড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত একাধিক পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে তৃণমূল। সে সব ছবি তুলে ধরে, তৃণমূল পাচারকারীদের পক্ষে বলেই দাবি করে বিজেপি। অভিযোগ রয়েছে, ভিন‌্-রাজ্য থেকে কখনও বাসে বা ট্রেনে কোচবিহারের বাংলাদেশ সীমান্তে লাগোয়া এলাকায় পৌঁছয় গরু। ওই রুটের একাধিক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার পকেটে চলে যায় কমিশন। অভিযোগ রয়েছে, বিএসএফ-পুলিশের একটি অংশের বিরুদ্ধেও। অনেকে প্রশ্ন তোলেন, নিরাপত্তায় কিছুটা ফাঁক না থাকলে কি করে পাচার সম্ভব?

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্ৰতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বাড়ি কোচবিহারের বাংলাদেশ সীমান্ত মহকুমা দিনহাটায়। সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে মৃত্যুর ঘটনায় নিশীথের বাড়ি ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছিল তৃণমূল। তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, "সীমান্তে পাহারার কাজ করে বিএসএফ। তাদের নজর এড়িয়ে কী করে পাচার হয়। তার দায়িত্ব কার? সে দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে স্বরাষ্ট্র দফতরের যাঁরা দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁদের পদত্যাগ করা উচিত। আর এখান থেকেই বোঝা যায়, কমিশন কোথায় যাচ্ছে।" বহু চেষ্টাতেও নিশীথের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। উদয়নের অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, "তৃণমূল যে পাচারকারীর পক্ষে তা বার বার প্রমাণ হয়েছে। বিএসএফের কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে ওরা। পাচারকারীর পক্ষে সওয়াল করার অর্থ যে কমিশন, তা বলে দিতে হয় না।"

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BSF Anubrata Mondal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE