আহত সমীর। —নিজস্ব চিত্র।
মদের আসর থেকে উড়ে আসছে অশ্লীল গালিগালিজ। প্রতিবাদ করে মদ্যপদের হাতে আক্রান্ত হলেন এক সব্জি ব্যবসায়ী। অভিযোগ, মদের বোতল দিয়ে মাথায় ও পিঠে আঘাত করা হয় ওই ব্যবসায়ীর। শনিবার রাতের এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদহের মোথাবাড়ি ফাঁড়ির জিতুটোলা গ্রামে। ঘটনায় আক্রান্ত ওই ব্যবসায়ী গুরুতর জখম অবস্থায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহতের নাম সমীর মণ্ডল। তিনি মোথাবাড়ির কাঁঠালবাড়ি বাজারে সব্জি বিক্রি করেন।
অভিযোগ, ওই দিন রাতে সব্জি বিক্রি করে ফেরার পথে তাঁর কাছ থেকে টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় মদ্যপ তিন যুবক। রবিবার সকালে থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তর খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিয়াচক ২ ব্লকের পঞ্চানন্দপুর ২ গ্রামপঞ্চায়েতের জিতুটোলা গ্রামের বাঁধের উপরে দীর্ঘ দিন ধরে বেআইনি ভাবে একটি মদের ঠেক চলছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় এক ব্যক্তি ওই ঠেকটি চালাচ্ছেন। এ ছাড়া ওই গ্রামে বেআইনি মদের ঠেকের সংখ্যা বাড়ছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, ঠেক নিয়ে মদ নিয়ে বাঁধের উপরেই প্রকাশ্যে মদের আসর বসানো হয়। এমনকী, দিনের বেলাতেও মদের আসর বসে বলে অভিযোগ। ফলে গ্রামের মহিলাদের বাঁধ দিয়ে চলাই দায় হয়ে উঠেছে বলে দাবি গ্রামবাসীদের। এ দিন রাতে আটটা নাগাদ কাঁঠালবাড়ি বাজার থেকে সব্জি বিক্রি করে বাড়ি ফিরছিলেন ওই গ্রামেরই বাসিন্দা সমীরবাবু। সমীরবাবু সপরিবারে বাঁধের ধারেই বসবাস করেন। তাঁরা চার ভাই বোন। সমীরবাবুই বড়। তাঁদের বাড়ি থেকে মাত্র ১০ মিটার দূরেই মদের ঠেক চলে বলে অভিযোগ।
মদের আসরের মধ্যে মদ্যপেরা নিজেদের মধ্যে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। যার ফলে সমস্যায় পড়তে হয় পড়শিদের। এদিন রাতে ওই গ্রামপঞ্চায়েতের হরিবোনটোলা গ্রামের বাসিন্দা শ্যামল মণ্ডল সহ তিন যুবক প্রকাশ্যেই মদ্যপান করছিলেন। আর অশ্লীল ভাষায় নিজেদের মধ্যে গালিগালাজ করছিলেন। প্রতিবাদ করেন সমীরবাবু। সেই সময় মদ্যপেরা মদের বোতল দিয়েই সমীরবাবুর মাথায় আঘাত করে। মাথার উপরেই মদের বোতল ভাঙা হয়। তারপর ভাঙা বোতল দিয়ে পিঠে আঘাত করা হয় সমীরবাবুর। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি মাঠিতে লুটিয়ে পড়লে দুষ্কৃতীরা তাঁর কাছে থাকা নগদ পাঁচ হাজার টাকা এবং একটি মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরিবার ও গ্রামবাসীরা উদ্ধার করে তাঁকে নিয়ে যান বাঙিটোলা গ্রামীণ হাসপাতালে। ওই ব্যবসায়ীর আঘাত গুরুতর থাকায় রাতেই তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সমীরবাবু বলেন, মদের ঠেক তুলে দেওয়ার জন্য একাধিকবার বলা হয়েছিল। তারপরেও চলছে ঠেক।
এ দিন ফের বলতে গেলে আমার উপরে হামলা চালানো হয়। থানাতে সমস্ত ঘটনাটি লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। এ দিকে, এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী সমিতির মালদহ জেলা সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত। রাস্তায় দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। তবুও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করছে না।’’ পুলিশসুপার অর্ণববাবু বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের পাশাপাশি মদ, জুয়ার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ধড়পাকড় চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy