অ্যাসিড-কাণ্ডে ধৃত মূল অভিযুক্ত মনোজকুমার সিংহকে জলপাইগুড়ি আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। —নিজস্ব চিত্র।
সেবক রোডে পানশালার দুই তরুণী গায়িকাকে অ্যাসিড ছুড়ে মারার ঘটনার ১৩ দিন পরেও অ্যাসিড সংগ্রহ কোথা থেকে তা জানতে পারেনি পুলিশ। অ্যাসিড ছোড়ার সময়ে দুষ্কৃতীরা কোন মোটরবাইক চেপে এসেছিল, সেগুলির মালিকই বা কে কিছুই জানতে পারেনি পুলিশ।
যদিও, এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মনোজকুমার সিংহকে তিন দিন আগেই হরিয়ানা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারপরেও কোনও নতুন তথ্য পুলিশের হাতে আসেনি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে অভিযুক্তকে নিয়ে ভক্তিনগর থানার পুলিশের দলটি শিলিগুড়ি এসে পৌঁছায়।
বুধবার সকালে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগ মোহন এক সাংবাদিক বৈঠক করে এ বিষয়ে জানান। তবে পুলিশের দাবি বাইক চালকের খোঁজ পেয়েছেন। কিন্তু এদিনও তাঁরা নাম জানাতে পারেননি। পুলিশ কমিশনার জগ মোহন বলেন, “অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য সংগ্রহ করে হবে। দ্রুত মামলাটির সমাধান করে ফেলা যাবে বলে আমি আশাবাদী।” ধৃতদের বিরুদ্ধে অ্যাসিড ছোড়া ও ইচ্ছাকৃতভাবে জখম গুরুতর জখম করার অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
ধৃত মূল অভিযুক্তকে ৭ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা আদালত। বুধবার অভিযুক্তকে জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে পেশ করা হয়েছিল। ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানালে সাত দিনের মঞ্জুর করেন বিচারক।
পুলিশ জানিয়েছে, শিলিগুড়ির সেবক রোডের একটি পানশালায় যাতায়াতের সূত্রে তরুণী গায়িকার সঙ্গে অভিযুক্ত মনোজের যোগাযোগ হয়েছিল দুই যুবকের মাধ্যমে। শিলিগুড়ির বাসিন্দা ওই দুই যুবককেও পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই তরুণীর সঙ্গে এক যুবকের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। মনোজও ওই তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলতে চেষ্টা শুরু করে বলে অভিযোগ। তরুণীর কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে অভিযুক্ত ওই তরুণীর বাড়িতেও গিয়ে নানা প্রস্তাব দেয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। তাতেও ব্যর্থ হয়। বিয়ে করতে চেয়েও চাপ দিতে থাকে বলে অভিযোগ। তরুণী তাকে অস্বীকার করায় বেঁধে রেখে মারধরও করে অভিযুক্ত বলে অভিযোগ।
গত ১১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সেবক রোডের একটি পেট্রল পাম্পের সামনে অ্যাসিড ছোড়ার ঘটনাটি ঘটে। ভিতরে ছিলেন তিন তরুণী গায়িকা ও গাড়ির চালক। গাড়িতে করে গায়িকাদের সেবক রোডের পানশালায় পৌঁছে দিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে পুলিশ জেনেছে। অ্যাসিডে পুড়ে জখম হন দুই তরুণী গায়িকা ও গাড়ির চালক। আপাতত অবশ্য তাঁরা অনেকটা সুস্থ রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও অপরজনের চিকিত্সা চলছে।
অভিযোগ, তরুণী গায়িকা ও তার পরিবারকে সেনা কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে ছিল অভিযুক্ত মনোজ। পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে, শালুগাড়ায় সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সামগ্রী সরবরাহের কাজ করত সে। জখম দুই তরুণীর মধ্যে একজন লুধিয়ানার বাসিন্দা ছিলেন। তাঁকে আগেই পরিবারের লোকেরা বাড়িতে নিয়ে গিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy