সভা করার ছাড়পত্র পাওয়ার আগেই সভার প্রচারের লিফলেট বিলি শুরু করেছে সিপিএম। অনুমতি ছাড়াই এই লিফলেট বিলি করাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। শিলিগুড়ি পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি সিপিএমের জনসভার আয়োজন করেছে সিপিএম। তাতে উপস্থিত থাকার কথা রায়গঞ্জের সাংসদ মহম্মদ সেলিম ও প্রাক্তন জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী মানব মুখোপাধ্যায়-সহ স্থানীয় নেতাদের। শিলিগুড়ির টিকিয়াপাড়ার রেল ময়দানে এই সভা হবে বলে লিফলেটে ছাপা হয়েছে। কিন্তু রেলের পক্ষ থেকে অনুমতি পাওয়া গেলেও পুলিশের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র মেলেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অবশ্য স্বীকারও করেছেন সিপিএম নেতারা। তবে তাঁরা পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের দিকে। তাঁর নির্দেশেই পুলিশ অনুমতি দিতে গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ। যদিও এমন অভিযোগ সিপিএমের মনগড়া বলে উড়িয়ে দিয়েছেন গৌতমবাবু।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “প্রয়োজনীয় সমস্ত কাগজপত্র ছাড়া কোনও রকম অনুমতি দেওয়া হবে না। তবে নথি ঠিক থাকলে অনুমতি দিতে কোনও আপত্তি নেই।” তবে যানজট অথবা সাধারণ মানুষের সমস্যা করে কোনও জনসভা বা মিটিং মিছিলের অনুমতি দেওয়া হবে না।”
প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএমের দার্জিলিং জেলা কমিটির সদস্য অশোক ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, তাঁদের গত এক সপ্তাহ ধরে নানা রকম অছিলায় অনুমতি দিতে অস্বীকার করছে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ। একটা নথি জমা দিলে প্রতিদিন নতুন করে নথি চাওয়া হচ্ছে। এদিন তিনি বলেন, “এ সবই হচ্ছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর নির্দেশে। তিনি চান না অন্য কোনও দল রাজনৈতিক সমাবেশ করুক।” তৃণমূল ক্রমশ জনপ্রিয়তা হারানোয় অন্য দলকে এভাবে হেনস্থা করানোর জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ওই অভিযোগ ‘হাস্যকর’ বলে মন্তব্য করেছেন গৌতমবাবু। তিনি বলেন, “কে কোথায় সভা করবে তা আমি জানি না। কাউকে সভা করতে বাধা দিয়ে সভাকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে যাব কেন?” সিপিএমের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক আনন্দ পাঠকের মৃত্যুতে তিনিই দীনবন্ধু মঞ্চে সিনেমা প্রদর্শন বন্ধ করে শোকসভা করার অনুমতি দেওয়া হয়। শহরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বিজেপি, কংগ্রেস সভা-অনুষ্ঠান করছে। তাদের তো বাধা দেওয়া হয়নি!” অশোকবাবু অবশ্য জানিয়ে দেন, পুলিশ অনুমতি না দিলেও তাঁরা সভা করবেন। সেই কারণেই লিফলেট বিলি শুরু হয়েছে।” এ বিষয়ে মন্ত্রী গৌতমবাবু অবশ্য বলেন, “ওঁরা অনুমতির ধার ধারেন না। এর আগেও অনুমতি না নিয়ে মিছিল করেছেন। বিনা অনুমতিতে সভা করলে পুলিশ বিষয়টি নিশ্চয় দেখবে।” শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার অবশ্য বলেন, “শেষ পর্যন্ত যদি অনুমতি ছাড়াই সভা হয়, তা হলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি সিপিএমের শিলিগুড়ি জোনাল কমিটির আহ্বানেই এই সভার আয়োজন। শিলিগুড়ি পুরসভা, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নির্বাচন করা সহ কয়েকটি দাবি তুলে এই সমাবেশ হবে বলে সিপিএম সূত্রের খবর। ইতিমধ্যেই ৩৬ হাজার লিফলেট ছাপানো হয়েছে। শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছেলেরা এই লিফলেট নিয়ে হাজির হচ্ছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। অনুমতি পাবেন কি না তা ঠিক না থাকলেও সভা হচ্ছেই ধরে নিয়ে তা সফল করার জন্য সিপিএম কর্মীরা কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy