ব্যবসায়িক ভিত্তিতে গোলমরিচের চাষ হবে এ বার উত্তরবঙ্গেও। দক্ষিণ ভারত বিশেষ করে কেরলে গোলমরিচ চাষ করে লাভবান হয়েছেন অনেক কৃষকই। তাই কেরলের কোচিন স্পাইস বোর্ডের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিঙে গোলমরিচ চাষের উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য উদ্যানপালন দফতর। ওই দফতরের তরফে দাবি করা হয়েছে, ইতিমধ্যেই পরীক্ষামূলক ভাবে কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতে গোলমরিচ চাষ করা হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, কেরালায় উৎপন্ন গোলমরিচের তুলনায়, রাজ্যের এই তিন জেলায় উৎপন্ন গোলমরিচের গুণগত মান অনেক ভাল। উদ্যান পালন দফতরের কোচবিহার জেলা আধিকারিক খুরশিদ আলম বলেন, “গোলমরিচ চাষ করে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলি লাভবান হয়েছে। উত্তরবঙ্গে সামান্য কিছু জায়গায় গোলমরিচ চাষ হলেও, ব্যবসায়িক ভিত্তিতে চাষ হয় না। এ বারে সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাঁচ বছরের লক্ষ্য নিয়ে আমরা নামছি।” তিনি জানান, গোলমরিচ বিক্রির দায়িত্ব নেবে স্পাইস বোর্ড।
উদ্যানপালন দফতর সূত্রের খবর, কেরালা, তামিলনাড়ু, কর্ণাটকের গোলমরিচের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বিদেশে। সেখানে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে মরিচ চাষ হয়। কেরালায় তার মান সবচেয়ে ভাল। বিদেশে ওই মরিচ রফতানির পরেও চাহিদা থেকে যাওয়ায় এ বার উত্তরের তিন জেলাতে গোলমরিচ চাষের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উদ্যানপালন দফতর সূত্রে দাবি করা হয়েছে, মরিচ চাষের জন্য আলাদা করে কোনও জমির প্রয়োজন নেই। কোচবিহারে প্রায় দু’হাজার হেক্টর জমিতে সুপারি বাগান রয়েছে। রয়েছে নারকেল বাগানও। চা, সুপারি ও নারকেল চাষিদের প্রথম দিকে গোল মরিচ উৎপাদনের জন্য উৎসাহ দিতে হবে। এ ছাড়াও দফতরের গবেষণাকেন্দ্রে গোল মরিচের চারা করে তা চাষিদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। পাঁচ বছরের মধ্যে ওই চাষ তিন জেলার সমস্ত জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে দফতর। উদ্যানপালন দফতরের এক কর্তা বলেন, “চা বাগান এবং সুপারি বাগানে ওই চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলেই উৎপাদনের মাত্রা বেড়ে যাবে। ভাল বাজার পেলে চাষিরা উৎসাহিত হবে। ‘স্পাইস বোর্ড’ বাজারের দায়িত্ব নেওয়ায় দ্রুত ওই চাষে সফলতা আসবে বলে আশা করছি।
উদ্যান পালন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, কোচবিহারে ১২০ হেক্টর জমিতে বর্তমানে গোল মরিচ চাষ হয়। স্থানীয় ভাবে সেগুলির বিক্রির বাজার না থাকায় চাষিদের ওই চাষে উৎসাহ নেই। কোচবিহারে খুচরো বাজারে গোল মরিচ প্রায় হাজার টাকা কিলো দরে বিক্রি হয়। এই বাজারে তা আসে মেঘালয় এবং দক্ষিণের রাজ্যগুলি থেকে।
মারুগঞ্জের কৃষক বিকাশ সরকারের প্রায় সাত বিঘা জমিতে সুপারি বাগান রয়েছে। ওই জমিতে তিনি গোল মরিচ চাষ করেন। তিনি জানান, তাঁর প্রায় তিন হাজার সুপারি গাছ রয়েছে। সেই গাছেই গোল মরিচ চাষ হয় একটি গাছ থেকে প্রায় পাঁচশ গ্রাম গোল মরিচ পাওয়া যায়। ৩০০ টাকা কেজি দরে স্থানীয় বাজারে তিনি তা বিক্রি করেন। তিনি বলেন, “চাহিদা বাড়লে চাষ আরও বাড়াব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy