মেটেলিতে যৌথ মঞ্চের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
ন্যূনতম বেতন কাঠামো গড়ে তোলা ও দ্রুত মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সোমবার উত্তরবঙ্গে চা বাগান গুলিতে একদিনের কর্মবিরতি পালন করলেন চা শ্রমিকরা। বিভিন্ন সরকারী দফতরের সামনে বিক্ষোভও দেখালেন তারা। প্রশাসনের কর্তাদের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে হস্তক্ষেপের দাবি জানায় ২৩টি শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ। একদিনের কর্মবিরতিতে ডুয়ার্স জুড়ে ভাল প্রভাব পড়েছে বলে শ্রমিক সংগঠন গুলোর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। আগামী ১১ এবং ১২ নভেম্বর উত্তরবঙ্গের প্রতিটি চা বাগানের ধর্মঘট এবং ১২ নভেম্বর দার্জিলিঙ , জলপাইগুড়ি , আলিপুরদুয়ার , উত্তরদিনাজপুর এই চার জেলাতে সাধারণ ধর্মঘটেরও ডাক দিয়েছে যৌথমঞ্চ।এই ঘোষিত আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসাবেই সোমবারের কর্মবিরতি সফল হয়েছে বলে মঞ্চের তরফে দাবি করা হয়েছে।
এদিন বেশ কিছু চা বাগানে যৌথমঞ্চের বিরোধী তৃণমূল কংগ্রেসের চা শ্রমিক সংগঠনকেও কর্মবিরতি পালন করতে দেখা গিয়েছে। যৌথমঞ্চের প্রথমসারির নেতা তথা সিটুর জলপাইগুড়ি জেলা সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল আলম বলেন, চা শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধভাবে কর্মবিরতি পালন করায় পাহাড়, তরাই,ডুয়ার্স জুড়ে ব্যাপক সাড়া মিলেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের চা শ্রমিক সংগঠনও কর্মবিরতি পালন করায় আন্দোলন আরও জোরালো হয়েছে বলেও জিয়াউল বাবু দাবি করেন। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের চা শ্রমিক সংগঠন তরাই ডুয়ার্স প্ল্যানটেশন ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বাদল দাশগুপ্ত অবশ্য কর্মবিরতিতে অংশ নেননি বলেই দাবি করেন। তিনি বলেন,“ তরাই, ডুয়ার্সের অধিকাংশ চা বাগানেই তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থিত শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছেন।” মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে তাঁরা রাজ্য সরকারের উপরেই আস্থাশীল বলেও জানান তিনি।
আরএসপির শ্রমিক সংগঠনের তরফে আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিধায়ক নির্মল দাস বলেন, “বর্তমানে চা শ্রমিকরা ৯৫ টাকা করে দৈনিক মজুরি পান। যা বর্তমান বাজারের দ্রব্যমূলের তুলনায় অনেক কম। আর্ন্তজাতিক শ্রম সংস্থা জানিয়েছে, চা শ্রমিকদের ক্ষেত্রে মাসে ন্যূনতম দশ হাজার টাকা বেতন হওয়া উচিত। যদি দ্রুত আমাদের মজুরি বৃদ্ধির দাবি না মানা হয় তাহলে ১১ ও ১২ নভেম্বর আমরা উত্তরবঙ্গে সাধারণ ধর্মঘট পালন করার জন্য জনসাধারণের কাছে আবেদন করব।”
এদিকে সোমবারই চা বাগিচা রয়েছে এমন রাজ্যগুলির শ্রমিক মালিক প্রতিনিধিদের নিয়ে গুয়াহাটিতে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় শিল্প বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। ন্যূনতম বেতন কাঠামো , চা বাগান গুলোতে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প চালু , জমি সমস্যার সমাধান, রুগ্ন বাগানে সরকারি উদ্যোগ, ডলোমাইট উত্তোলনে চা বাগানের ক্ষতি এই সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে। বৈঠক শেষে প্রতিটি চা শ্রমিক সংগঠনই আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে বলে জানিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy