পানীয় জল সরবরাহের সমস্যা নিয়ে দফতরে বৈঠকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
শিলিগুড়ি পুরসভার সংযোজিত এলাকার ৩৬-৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ থাকায় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ চলছেই। সোমবার একটি নতুন পাম্প এসে পৌঁছেছে। তবে তা চালু করতে কোম্পানির লোক আসবে। তাঁরা পাম্পটি বসিয়ে চালু করে দিয়ে গেলে তবেই জল সরবরাহ সম্ভব হবে। পরেশনগর এলাকায় খারাপ হয়ে পড়া ২টি পুরনো পাম্পের একটি এ দিন সারানোর চেষ্টা শুরু করছে জন স্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর। তা ঠিক করে মঙ্গলবার সকাল থেকে কিছু এলাকায় জল সরবরাহ করার চেষ্টা হচ্ছে বলে পুরসভার তরফে জানানো হয়। গত ১৩ দিন ধরে জল সরবরাহ সমস্যা না মিটলেও তা নিয়ে বৈঠক চলছেই। এ দিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে পুরসভার আধিকারিক ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। তাতেও এখনই সমস্যা মেটানোর কোনও ব্যবস্থা করা যায়নি।
বৈঠকের পর উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, ‘‘চলতি সপ্তাহের মধ্যেই প্রতিটি ওয়ার্ডে জল মিলবে বলে আশা করছি। দুটি পাম্প মেশিন আনা হচ্ছে। দু এক দিনের মধ্যেই তা চলে আসবে।” সমস্যার জন্য বিগত কংগ্রেস পুরবোর্ড এবং তার আগের বাম পুরবোর্ডকেই দায়ী করেছেন তিনি। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে শিলিগুড়ি পুরসভায় তারা বছর দেড়েক ক্ষমতায় ছিলেন। জল সরবরাহ দফতরও তাঁদের হাতে ছিল। কিন্তু সে সময় পরেশনগর এলাকায় যে পাম্প খারাপ হওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে তার বিস্তারিত জানা ছিল না বলে দাবি করেন। তা ছাড়া সময়ের অভাবেও সব কিছু করে ওঠা যায়নি।
এ দিন মন্ত্রী আশ্বাস দেন, শহরের পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থার জন্য মেগা প্রকল্প খুব শীঘ্রই শুরু হবে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে ৩১২ কোটি টাকার ওই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। তাতে ১৫ দিনের জন্য জল ধরে রাখতে দুটি জলাধার তৈরির কথাও রয়েছে। কোনও সমস্যা দেখা দিলেও যাতে অন্তত ১৫ দিন জলাভাব না হয়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী একের পর এক বৈঠক করলেও পানীয় জল সরবরাহ সমস্যা না মেটায় কটাক্ষ করেছেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “ প্রতি বছর শুখা মরসুমে জল সরবরাহের সমস্যা মেটাতে রাজ্য সরকারের পুরদফতর থেকে ‘স্পট সোর্স’ খাতে অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। আমি বহুবার শিলিগুড়ি পুরসভাকে এই খাতে টাকা এনে দিয়েছি। উনি কেন সেই খাতে টাকা আনছেন না তা বুঝতে পারছি না। আসলে কাজের চেয়ে উনি দোষারোপ করায় বেশি মনোযোগী।”
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর,পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সংযোজিত এলাকার ৩৬-৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে পরেশনগর এলাকায় পাম্প থেকে এবং ৩১-৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে শক্তিগড় এলাকার পাম্প থেকে জল সরবরাহ হয়। গত ২৮ মে থেকে পরেশনগরের ২টি পাম্প খারাপ হয়ে পড়েছে। পুরনো ওই দুটি পাম্পই বদলে দিতে হবে। জলাধার তৈরির কাজ শেষ না হওয়ায় এই পাম্প থেকে সরাসরি জল সরবরাহ হয়। জলের চাপ বেশি। সে কারণেই পাম্প তাড়াতাড়ি খারাপ হচ্ছে বলে দাবি। ২০০৮ সালে পরেশনগরে দুটি পাম্প লাগানো হয়েছিল। ২০১০ সালে তা খারাপ হলে বদলে দেওয়া হয়। ফের খারাপ হওয়ায় এই বিপত্তি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy