বহিষ্কার করেও এড়ানো যাচ্ছে না অস্বস্তি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের বিরুদ্ধে ফের সরব হলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের বহিষ্কৃত নেতা শুভাশিস ওরফে সোনা পাল। তাঁর অভিযোগ, এক ঠিকাদারকে নিগ্রহে অভিযুক্তেরা বিপ্লববাবুর অনুগামী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
তিন শ্রমিককে কাজ থেকে ছাঁটাইয়ের জেরে বুধবার রাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুরে শ্রমিকদের হাতেই বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির ঠিকাদার বিশ্বজিৎ কর ও তার স্ত্রী শিপ্রাদেবী নিগৃহীত হন বলে অভিযোগ। বিশ্বজিৎবাবুর তরফে হরিরামপুর থানায় তৃণমূল নেতা তাজমুল হক, রহুল ইসলাম, রামকৃষ্ণ সরকার এবং শ্রমিক মঙ্গল চৌহান, অখিল মজুমদার ফিরদৌস সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযুক্ত নেতারা বিপ্লব মিত্রের অনুগামী বলে দাবি করে এ দিন সোনা পালের অভিযোগ, “এ বার অভিযুক্ত নেতাদের বিপ্লববাবু বহিষ্কার করেন কি না, তা দেখতে চাই।”
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা আইন পরিষদীয় সচিব বিপ্লব মিত্র। তাঁর দাবি, ওই দম্পতিকে মারধরের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। বিপ্লববাবুর অভিযোগ, ওই ঠিকাদারের অধীন শ্রমিকদের ৩০ দিন কাজ করিয়ে ২৫ দিনের মজুরি দেওয়া হচ্ছিল। তাছাড়া নিয়মমতো শ্রমিকদের পিএফের ব্যবস্থাও করা হয়নি। এতে শ্রমিকদের ক্ষোভ ছিল। তার উপরে বুধবার তিন জন পুরনো শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের নোটিশ ধরিয়ে নতুন তিন জনকে কাজে যুক্ত করার বিরুদ্ধে শ্রমিকেরা ক্ষেপে যান। দলের শ্রমিক নেতৃত্ব গিয়ে বিষয়টি নিয়ে ওই ঠিকাদারকে আপত্তি জানান। দু’পক্ষের মধ্যে ঝগড়া হলেও মারধরের কোনও ঘটনা ঘটেনি বলে বিপ্লববাবু দাবি করেন। তাঁর অভিযোগ, “পরে ঘটনাটিকে সাজিয়ে ওই ঠিকাদারকে দিয়ে সোনা পাল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মিথ্যা মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সঠিক তদন্ত করলে সব পরিষ্কার হবে।”
এ দিন বালুরঘাটের চকভবানীর বাসিন্দা ওই ঠিকাদার বিশ্বজিতবাবু ও তার স্ত্রী শিপ্রাদেবী বলেন, আমাদের অধীন ১২ জন শ্রমিক কাজ করেন। যে তিনজনকে ছাঁটাই করেছি, তাঁরা কাজ করেন না। উপরন্তু তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও রয়েছে। ফলে তাঁদের কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলে তৃণমূলের নেতারা তীব্র আপত্তি জানান। ওঁদের কথা মতো শ্রমিকদের নিতে হবে বলে দাবি করতে থাকেন। শ্রমিকেরা ক্ষেপে গিয়ে আমাদের উপর চড়াও হয়। শিপ্রাদেবীর কথায়, “আমরা ওই নেতাদের সকলকে চিনি না। তবে আমাদের অধীনে কর্মরত শ্রমিকেরাও হামলার ঘটনায় যুক্ত ছিলেন। ঘটনার পর আমরা ফিরে আসছিলাম। স্থানীয় কিছু লোকজন বললেন, থানায় অভিযোগ করতে। আমরা তো সকলকে চিনি না, তাই পরিচিত ওই তিন শ্রমিক-সহ নেতাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করি।”
বিপ্লব মিত্র অনুগামী বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা তাজমুল হক অবশ্য দাবি করেন, “ওই সময় সোনা পাল তাঁর অনুগামী লোকজনকে দিয়ে আমাদের নাম অভিযোগে ঢুকিয়ে দেন।” সোনা পালের পাল্টা অভিযোগ, “ঘটনার সময় বিদ্যুৎ বন্টন অফিসে সকলেই উপস্থিত ছিলেন। দলের জেলা সভাপতির অনুগামী বলে পুলিশও এখন হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে।”
ওই ঘটনায় মারধরের অভিযোগটিকে হরিরামপুর থানার পুলিশ এখনও এফআইআর হিসাবে নথিভুক্ত করেনি বলেও অভিযোগ উঠেছে। জেলা পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy