উত্তরবঙ্গে বন্ধ চা বাগানগুলির পরিস্থিতিকে ‘দুর্ভিক্ষ পীড়িত’ বলে বর্ণনা করে সরকারি হস্তক্ষেপের দাবি তুললেন সমাজকর্মী বিনায়ক সেন। না হলে বাগানে মৃত্যু মিছিল চলবে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিসের (পিইউসিএল) সহ-সভাপতি বিনায়কবাবু গত বছরের জুলাই থেকে তরাই, ডুয়ার্সের বিভিন্ন বন্ধ চা বাগানে ঘুরে দেখতে শুরু করেছেন। তাঁকে সহযোগিতা করছেন শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, বীরপাড়া ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন ছাড়াও একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। রবিবার শিলিগুড়িতে তাঁরা প্রাথমিক সমীক্ষার একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন।
বিনায়কবাবুর কথায়, “বন্ধ চা বাগানের অবস্থাকে দুর্ভিক্ষ ছাড়া বলার ভাষা নেই। বাগান নিয়ে কিছু বললেই তা বিরোধীদের চিত্কার বলে বলা হয়। কিন্তু আমি কোনও রাজনীতির কথা বলব না। শুধু বলব, সরকারের এখনই সজাগ হয়ে হস্তক্ষেপ করা প্রয়োজন।” তিনি জানান, আমরা একটি রিপোর্ট তৈরি করেছি। তা রাজ্য সরকার, কেন্দ্রীয় সরকারকে দেব। এখনই ব্যবস্থা না হলে মৃত্যুর মিছিল ঠেকানো যাবে না।
গত তিনদিন ধরে বিনায়কবাবু রেডব্যাঙ্ক, বান্দাপানি, সুরেন্দ্রনগর বাগানে যান। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে প্রতিনিধিরা সমীক্ষা করেন। তাতে ডায়না, কাঠালগুলি, রায়পুর বাগানকেও অর্ন্তভুক্ত করা হয়। দলটি চা শ্রমিক পরিবারগুলির ‘বডিমাস ইনডেক্স’ বা বিএমআই সেনসাস করেছেন। প্রতি মানুষের কিলোগ্রাম ওজনকে স্কোয়ার মিটার উচ্চতা দিয়ে ভাগ করে বিএমআই মেলে। এর ফলে সেখানকার খাদ্যভাব, পুষ্টি, চিকিত্সা পরিষেবার বিষয় বোঝা যায়। এই প্রসঙ্গে বন্ধ রায়পুর এবং ঢেকলাপাড়া চা বাগানের তথ্য উল্লেখ করেছেন বিনায়কবাবুরা। সঙ্গে ছিলেন শিলিগুড়ি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের অভিজিত্ মজুমদারও। তিনি বলেন, “সরকারি চাল বা মোবাইল হেলথ ক্লিনিকের কথা বারবার বলা হচ্ছে। তবে আমরা দেখছে তা একেবারে অপ্রতুল। আন্তর্জাতিক স্তরেও পরিস্থিতির কথা তুলে ধরব।”
এই প্রসঙ্গে রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবে’র মন্তব্য, “বন্ধ বাগান খোলার চেষ্টা হচ্ছে। আর ওঁরা রিপোর্ট দিলে তা আমরা অবশ্যই দেখব। প্রয়োজন হলে ব্যবস্থাও হবে।” বাগানগুলিতে ১০০ দিনের কাজ, খাদ্য সরবরাহ, অঙ্গনওয়ারি সেন্টার, মিডড মিল, স্বাস্থ্য শিবির, পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে মন্ত্রী দাবি করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy