গত তিন বছরে অন্তত ৩০ বার শিলিগুড়িতে এসেছেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেও কেন লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল হয়নি, কর্মিসভায় তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি মুকুল রায়। এর আগে লোকসভা ভোটের পরে মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়িতে এসে বলেছিলেন, ‘এখানকার মানুষের উপরে অভিমান হয়েছে।’ হারের পরে শিলিগুড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রথম কর্মিসভায় শনিবার মুকুলবাবু জানান, মুখ্যমন্ত্রী এতবার শিলিগুড়িতে আসার পরে ফল ভাল হবে বলেই তাঁরা প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু তা হয়নি।
এদিন সভায় উত্তরবঙ্গের সব জেলার প্রতিনিধিরাই ছিলেন। দলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেব আগাগোড়া মুকুলবাবুর পাশেই বসেছিলেন। সভায় প্রথমেই বক্তৃতা দেন জলপাইগুড়ির জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী। প্রদেশ নেতাদের কথা মেনে বুথ ভিত্তিক ক্লাস্টার গড়ে কী ভাবে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার আসনে সাফল্য পেয়েছেন, তা নিয়ে আলোচনা হয়। পরে মুকুলবাবু জানান, ২০০৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিং আসনে বিজেপি জিতেছিল। এ বারও জিতেছে। সেটা নতুন কিছু নয়। তাঁর কথায়, বরং সেই সময়ের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে তৃণমূল ভাল ফল করেছে। লোকসভা কেন্দ্রের কিছু এলাকায় ফল ভাল হয়নি।
লোকসভা আসনে হারলেও পাহাড়ে তাদের ৯০ হাজারের বেশি ভোটপ্রাপ্তিকে ‘ভাল ফল’ বলে তুলে ধরে কর্মীদের চাঙ্গা করতে সচেষ্ট হন মুকুলবাবু। আবার বিজেপি-র সমালোচনা করতে গিয়ে পেট্রোল, ডিজেল-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি, রাজ্যে ১৩৬ টি বিধানসভায় বিজেপি-র জামানত জব্দ হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। জানান, আরও ৭০ টি বিধানসভায় ১ শতাংশের কম ভোট পেলে সেগুলিতেও জামানত জব্দ হত বিজেপি-র। রাজ্যে বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকদের উপর তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ নিয়ে মুকুলবাবুর প্রতিক্রিয়া, “বিজেপি মিথ্যে বলছে।”
সামনে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ এবং পুরসভার নির্বাচন। তৃণমূলের অন্দরের খবর, বিজেপি যদি ফল ধরে রাখে তা হলে মহকুমা পরিষদ, পুরসভায় ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন পূরণ হবে না বলে আশঙ্কা করেছেন দলের অনেকেই। উপরন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না থাকাও আর একটি বড় সমস্যা বলে তৃণমূল নেতাদের আলোচনায় উঠে এসেছে॥ এ বার কী করতে হবে, এ দিন কর্মিসভায় সেই পরামর্শ দেন মুকুলবাবু। তিনি সভায় জানান, জলপাইগুড়ি লোকসভার লড়াইয়ের মডেলে কর্মীদের কাজে নেমে পড়তে হবে।
এ দিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবও শিলিগুড়ি লোকসভা আসনটি জিততে না পারার কারণ হিসাবে জানান, মানুষের মনের ভাব যে দল বুঝতে পারেনি, তা স্বীকার করতে হবে। সামনে যে নির্বাচন রয়েছে তার জন্য বাসিন্দাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy