Advertisement
১৯ মে ২০২৪

রাজনীতির নতুন ভূমিতে সৌমিত্র, কটাক্ষ সিপিএমের

একজন গায়ক। অন্যজন চিকিৎসক। দু’জনের কেউ এতদিন সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলেন না। একজন ‘ভূমি’ খ্যাত সৌমিত্র রায়। আর অপরজন কলকাতার বিআরসিংহ হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসক মোয়াজ্জেম হোসেন। এবার তাঁদেরই মালদহের মতো রাজনীতি সক্রিয় জেলায় প্রার্থী করে চমক দিল তৃণমূল নেতৃত্ব।

পীযূষ সাহা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৪ ০৭:৪৫
Share: Save:

একজন গায়ক। অন্যজন চিকিৎসক।

দু’জনের কেউ এতদিন সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলেন না। একজন ‘ভূমি’ খ্যাত সৌমিত্র রায়। আর অপরজন কলকাতার বিআরসিংহ হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসক মোয়াজ্জেম হোসেন। এবার তাঁদেরই মালদহের মতো রাজনীতি সক্রিয় জেলায় প্রার্থী করে চমক দিল তৃণমূল নেতৃত্ব। উত্তর মালদহ কেন্দ্র থেকে সৌমিত্রবাবু এবং দক্ষিণ মালদহ কেন্দ্র থেকে মোয়াজ্জেমবাবু লড়াই করবেন।

বিপক্ষে বামফ্রন্টের প্রার্থী তালিকায় চোখ বোলালে দেখা মিলছে, দুঁদে সিপিএম নেতা তথা বিধায়ক খগেন মুর্মু বা প্রাক্তন সাংসদ আবু হাসনৎ খানের। তেমনই কংগ্রেসের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে ইতিমধ্যে নাম উঠে এসেছে বর্তমান দুই সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী এবং মৌসন বেনজির নূরের মতো নেতানেত্রীর। আর সেখানেই রাজনীতির ময়দানে ‘আনকোরা’, কিন্তু চমকে ভরা এই দুই মুখকে সামনে রেখে মালদহে জয়ের লড়াই-এ নেমে পড়ল তৃণমূল।

গম্ভীরার দেশ মালদহে গানওয়ালা ভূমি-র সৌমিত্রবাবুকে প্রার্থী খুশী জোয়ার জেলার শিল্পী মহলে। স্থানীয় শিক্ষক তথা বিশিষ্ট শিল্পী উৎপল গুন বলেন, “সৌমিত্র রায় মালদহের ভূমিপুত্র। তাঁকে তৃণমূল প্রার্থী করায় আমরা গর্বিত। এতে সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা উপকৃত হবেন বলে আমি মনে করি।” আর ফুলবাড়ি গম্ভীরা দলের অসীম রায় বলেন, “জেলার গম্ভীরা শিল্পীদের দুর্দশরা কথা সকলেই জানেন। কিন্তু কেউ আমাদের পাশে দাঁড়ায় না। এবার তৃণমূল এমন একজনকে প্রার্থী করল, যিনি শিল্পীদের দুর্দশার কথা বুঝবেন।”

মালদহের চক্ষু বিশেষজ্ঞ প্রয়াত পিনাকীরঞ্জন রায়ের ভাই সীতাংশু রায়ের ছেলে সৌমিত্রবাবু। তাঁর খুড়তুতো ভাই চিকিৎসক ধূর্জটি রায় বলেন, “ছোটবেলায় পড়াশুনো করতে দাদাকে কার্শিয়ংয়ে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে পড়াশোনা শেষ করে কলকাতায় ফিরে গানবাজনায় মেতে উঠেন। বাকিটা মানুষ জানে।” আর সৌমিত্রবাবু নিজে বললেন, “দিদির সঙ্গে মানুষ আছেন। দিদি যে ভাবে বলছেন, সেই ভাবেই চলছি। আপাতত এর বেশি আর কী বলব।”

একই ভাবে দক্ষিণ মালদহ লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন মালদহেরই আর এক ভূমিপুত্র রেলের বিআরসিংহ হাসপাতালের স্ত্রী বিভাগের প্রধান চিকিৎসক মোয়াজ্জেম হোসেন। প্রার্থী হতেই বুধবার তিনি চাকরি থেকে স্বেচ্ছাবসরের জন্য আবেদন করে। তাঁর বাবা মহম্মদ জয়নাল আবেদিন মালদহের ভগবানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৫ বছর কংগ্রেস প্রধান ছিলেন। তাই রাজনীতির পাঠ বাড়ি থেকেই শুরু করেছিলেন।

প্রার্থী হতে পেরে দারুণ খুশি তিনি। মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “আমি যখন অষ্টম শ্রেণি থেকে কংগ্রেসের পতাকা ধরেছিলেন। গনিখান চৌধুরীর সঙ্গে আমার খুব ঘনিষ্ঠতা ছিল। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় যে ভাবে রাজ্যের উন্নয়নে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন, তা দেখে আমি তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হয়েছি। উনি আমাকে প্রার্থী করায় আমি কৃতজ্ঞ। মালদহ আমার জন্মভূমি। এই জন্মভূমির জন্য আমি কিছু করতে চাই।”

তবে জেলার রাজনীতির লোকেরা যথারীতি কিছুটা সাবধানী আবার আক্রমণত্মকও।

যেমন জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী তথা সাংসদ মৌসম বেনজির নূর। তিনি বলছেন, “কোনও প্রার্থীর বিরুদ্ধে আমি এখনই কিছু বলব না। সময়মত বিরোধীদের সম্পর্কে বলব। আমি কী করেছি, কী পারিনি, তা জনগনের কাছে বলব।” আর মালদহ-উত্তর কেন্দ্রের বামফ্রন্ট প্রার্থী তথা জেলার সিপিএম নেতা খগেন মুর্মু বলেন, “এখন নায়ক, গায়ক না হলে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়া যায় না। তৃণমূলের নিচুতলা থেকে জেলার কেউ প্রার্থী হতে পারলেন না। আর তৃণমূল প্রার্থী সম্পর্কে বলব, টাকার বিনিময়ে গান করা যায়। জণগনের কাজ করা যায় না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

loksabha vote soumitra cpm pijush saha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE