শিলিগুড়ির সরকারি পলিটেকনিক কলেজের আটজন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে একসঙ্গে বদলির প্রতিবাদে ক্লাস বয়কট করে আন্দোলনে নামল ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। কলেজের গেট বন্ধ করে বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন ছাত্রছাত্রীরা। মূলত টিএমসিপিই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়। যদিও তৃণমূল বা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা কলেজের ছাত্র সংগঠনের তরফে কোনও কর্মসূচি নেওয়া হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু বদলির প্রতিবাদে ক্লাস বয়কট করে আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন তারা।
শিক্ষকদের বদলির নিয়ম রয়েছে। বদলি হওয়া শিক্ষকদের পরিবর্তে চারজন নতুন শিক্ষককে নেওয়া হয়েছে। শিক্ষকের অভাবে সমস্যার কথা জানিয়ে কারিগরি শিক্ষা দফতরের অধিকর্তাকে বিস্তারিত জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষও। তার পরেও ক্লাস বয়কট করে আন্দোলন এবং অরাজক পরিস্থিতি তৈরির জন্য কলেজের টিএমসিপির নেতাদেরকেই দায়ী করেছে বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলি। সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তাদেরই ছাত্র সংগঠনের ছাত্র-ছাত্রীরা আন্দোলনে সামিল হওয়ার ঘটনাকে কটাক্ষ করেছেন বিরোধী সংগঠনগুলি।
কলেজের টিএমসিপি নেতা তথা ছাত্র সংসদের সহকারি সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ মণ্ডল বলেন,“এ দিন ক্লাস বয়কট করে আন্দোলন করার ব্যাপারে আমাদের সমর্থন রয়েছে। তবে সংগঠনের তরফে কোনও আন্দোলন করা হয়নি। এর সঙ্গে দল ও সংগঠনের যোগও নেই। ৮ জন শিক্ষক একযোগে বদলি হলে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার সমস্যা হবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনতেই ক্লাস বয়কট করে আন্দোলনে নামা হয়েছে।” কিন্তু ক্লাস বয়কট না করে তো অন্যভাবে সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো যেতে পারত? ছাত্র নেতা জানান, তাঁদের হাতে সময় নেই। কেন না নির্দেশ মতো ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিক্ষকেরা নতুন কলেজে যোগ দেবেন। তাই এই সময়ের মধ্যেই যা কিছু করতে হবে। শিক্ষাবর্ষের মাঝপথে শিক্ষক-শিক্ষিকারা চলে গেলে তাঁদের সমস্যার পড়তে হবে বলে পড়ুয়াদের একাংশ মনে করছেন। এসএফআই-এর জেলা সম্পাদক সৌরভ দাস বলেন, “একসঙ্গে শিক্ষকরা বদলি হয়ে গেলে পড়ুয়াদের সমস্যা হবে। আমরাও চাই না পর্যাপ্ত শিক্ষক না পাঠিয়ে বদলি করা হোক। তবে শিক্ষা ক্ষেত্রে নৈরাজ্য, ক্লাস বয়কট, ধর্মঘট এ সবও আমরা চাই না।”
কলেজের অধ্যক্ষ শুভাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, “এমনিতেই পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। তাই কিছুটা সমস্যা হবেই। কারিগরি শিক্ষা বিভাগের আধিকারিককেও জানানো হয়েছে। আশা করি, তিনি ব্যবস্থা করবেন। তবে ছাত্রদের আমরা বুঝিয়েছি যাতে তারা ক্লাস বয়কট না করে।” শিক্ষক বদলি নিয়ে অবশ্য সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বে ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের পড়ুয়ারা। তিনটি শিক্ষাবর্ষে ১৮০ জন পড়ুয়া রয়েছে ওই বিভাগে। কলেজ সূত্রে খবর, ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন বিভাগে পাঁচ জন শিক্ষিক-শিক্ষিকা ছিলেন। তাঁদের মধ্যে দু’জন বদলি হচ্ছেন। তাঁর বদলে আপাতত কেউ আসছেন না। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পাঁচজন শিক্ষকের মধ্যে দু’জন বদলি হচ্ছেন। একজন নতুন শিক্ষক সেই জায়গায় আসছেন। ফার্মেসি বিভাগেও দু’জন চলে যাচ্ছেন। নতুন একজন শিক্ষক আসছেন। কম্পিউটর সায়েন্স এবং ভৌত বিজ্ঞান বিভাগেও একজন করে শিক্ষক চলে যাচ্ছেন। তাদের বদলে নতুন শিক্ষক আসছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy