Advertisement
১৭ মে ২০২৪
রতুয়া ২ পঞ্চায়েত সমিতি

হাইকোর্টের রায়ে পুনর্বহাল পুরনো সভাপতি

পঞ্চায়েত সমিতির কংগ্রেস সভাপতিকে পদের অযোগ্য ও দুর্নীতিগ্রস্ত বলে অনাস্থা পেশ করেছিল তৃণমূল। সেই অনাস্থায় হেরে অপসারিত সভাপতি দ্বারস্থ হয়েছিলেন হাইকোর্টের। প্রথমে অনাস্থা সভার উপর স্থগিতাদেশ জারি করে হাইকোর্টয় মামলার চূড়ান্ত রায়ে তৃণমূলের অনাস্থা সভা বাতিল করে অপসারিত কংগ্রেস সভাপতিকে ফের পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মালদহের রতুয়া-২ পঞ্চায়েত সমিতির ঘটনা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৫৩
Share: Save:

পঞ্চায়েত সমিতির কংগ্রেস সভাপতিকে পদের অযোগ্য ও দুর্নীতিগ্রস্ত বলে অনাস্থা পেশ করেছিল তৃণমূল। সেই অনাস্থায় হেরে অপসারিত সভাপতি দ্বারস্থ হয়েছিলেন হাইকোর্টের। প্রথমে অনাস্থা সভার উপর স্থগিতাদেশ জারি করে হাইকোর্টয় মামলার চূড়ান্ত রায়ে তৃণমূলের অনাস্থা সভা বাতিল করে অপসারিত কংগ্রেস সভাপতিকে ফের পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মালদহের রতুয়া-২ পঞ্চায়েত সমিতির ঘটনা। শুক্রবার আদালত ওই নির্দেশ আসে। সোমবার সমিতির দফতরে সভাপতির চেয়ারেও বসেছেন সেই কংগ্রেস সভাপতি। চাঁচলের মহকুমাশাসক পোন্নমবলম এস বলেন, “ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক বিষয়টি দেখছেন।” ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক জয়ন্ত মণ্ডল বলেন, “কোনও অভিযোগ না তুলে সভাপতিকে শুধুমাত্র সরাতেই অনাস্থা পেশ করলে তা টিঁকে যেত। তিনি যে সভাপতির পদে অযোগ্য বা দুর্নীতিগ্রস্ত তা প্রমাণিত নয়। আদালত অপসারিত সভাপতিকে দায়িত্ব দিতে বলেছে। আদালতের নির্দেশ মেনে কাজ হবে।”

প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত নির্বাচনে সমিতির ২৪টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ২১টি, বামেরা দু’টি ও তৃণমূল একটি আসন পায়। সভাপতি হন কংগ্রেসের তজিবুর রহমান। সফিউল আলম নামে এক কংগ্রেস সদস্যকে দলবিরোধী কাজের জন্য বহিষ্কার করার পর তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। তার পর ২০ জন কংগ্রেস সদস্যদের মধ্যে সম্প্রতি ১১ সদস্য দল ছাড়ায় কংগ্রেস বোর্ড সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে। পরে তাঁরা তৃণমূলে যোগ দেন। এর পর তৃণমূলের ১৩ সদস্য কংগ্রেস সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা পেশ করেন। গত ১৯ নভেম্বর সভাপতি অনাস্থায় হেরে অপসারিত হওয়ার পরেই আদালতের দ্বারস্থ হন। প্রশাসন জানায়, যে অভিযোগে সভাপতিকে অপসারিত করা হয়েছিল তার কোনও প্রমাণ নেই। তাই আদালত অনাস্থা বাতিল করে দিয়েছে। সভাপতি তজিবুর রহমান বলেন, “আমার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ যে ভিত্তিহীন, সেটাই আদালতকে জানিয়েছিলাম।” রতুয়া-২ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি নিমাই বসাক বলেন, “কিছু বিশ্বাসঘাতক সদস্যদের ভাঙিয়ে নিয়ে ক্ষমতার লোভেই নীতিহীন তৃণমূল এসব করছে। আদালতে সেটাই প্রমাণ হয়েছে। দলত্যাগী পূর্ত কর্মাধক্ষ্য আনিরুল ইসলাম বলেন, “এই পরিস্থিতিতে দল যা বলবে তা মেনে চলব।” ব্লক তৃণমূল সভাপতি মহম্মদ নৈমুদ্দিন বলেন, “শুনেছি আদালত অপসারিত সভাপতিকে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছে। তবে ফের যে কোনও সময় অনাস্থা ডাকা যাবে বলে শুনেছি। আদালতের নির্দেশ হাতে পাইনি। ওটা পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”

এদিকে আদালতের নির্দেশে সভাপতি পদে ফিরলেও ফের তাঁর বিরুদ্ধে নতুন করে অনাস্থা পেশ করা যাবে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সভাপতি পদে ফিরলেও তাঁর সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। সভাপতির দাবি, একবার অনাস্থা হয়ে যাওয়ায় পঞ্চায়েত আইনে এক বছর আর অনাস্থা ডাকা যাবে না। তৃণমূলের দাবি, আদালত ওই অনাস্থা সভাকেই বাতিল করে দিয়েছে। ফলে এক্ষেত্রে পঞ্চায়েত আইন প্রযোজ্য হবে না। ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক বলেন, “আদালতের নির্দেশ মেনেই যা করার করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

high court president chachal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE