Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

গুরুঙ্গ নয়, বিনয়ের সঙ্গে আছি: মনোজ

সেই জন্য উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহ— এই তিন জেলার নানান জনজাতি বা আদিবাসী সংগঠনের সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি থেকে এসেছিলেন মনোজ।

আদালত চত্বরে মনোজ শঙ্কর। বৃহস্পতিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

আদালত চত্বরে মনোজ শঙ্কর। বৃহস্পতিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৪১
Share: Save:

আপনি কি বিমল গুরুঙ্গের সঙ্গে আছেন?

‘‘আমি কারও সঙ্গে নেই।’’

তা হলে কি আপনি বিনয় তামাঙ্গের সঙ্গে আছেন?

‘‘হ্যাঁ, আমি বিনয় তামাঙ্গের সঙ্গে আছি। যে কাজ করবে, যে উন্নয়ন করবে, আমি তার সঙ্গেই থাকবো,’’ বললেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দিল্লির নেতা মনোজ শঙ্কর।

বুধবার দিল্লিতে গ্রেফতার করে রাতেই মনোজকে কলকাতায় নিয়ে আসে সিআইডি। বিমানবন্দরে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দেন ওই মোর্চা নেতা।

সিআইডি সূত্রের খবর, গ্রেটার কোচবিহার-সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জনজাতিকে নিয়ে একযোগে আন্দোলনের ছক কষছিলেন মোর্চার নেতারা। সেই জন্য উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহ— এই তিন জেলার নানান জনজাতি বা আদিবাসী সংগঠনের সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি থেকে এসেছিলেন মনোজ।

বৃহস্পতিবার ওই মোর্চা নেতাকে আলিপুর আদালতে তোলা হয়। বিচারক তিন দিনের ‘ট্রানজিট রিমান্ড’-এর নির্দেশ দেন। এই সময়ের মধ্যে মনোজকে দার্জিলিঙে নিয়ে গিয়ে তদন্ত চালাতে পারবে সিআইডি। রাতেই তাঁকে নিয়ে শিলিগুড়ি রওনা হন গোয়েন্দারা।

তবে দিল্লি থেকে মনোজকে কলকাতায় আনতে খানিকটা বেগ পেতে হয়েছে তদন্তকারীদের। সিআইডি জানিয়েছে, গ্রেফতারের পরে মনোজকে সফদরজং থেকে দিল্লি বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়ার পথে বারবার মোর্চা-সমর্থকদের বিক্ষোভের সামনে পড়তে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত দু’বার গাড়ি বদল করে বিমানবন্দরে পৌঁছন গোয়েন্দারা। কিন্তু তাঁরা রাতের নির্ধারিত বিমান ধরতে পারেননি। পরে অন্য বিমানে ধৃতকে কলকাতায় আনেন তদন্তকারীরা।

আরও পড়ুন:এক ক্লিকে বাড়িতেই মিলবে কোচবিহারের কালোভাত

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আবেদন জানিয়ে পাহাড়ের তিন জেলা ও কোচবিহার ঘুরে বিভিন্ন জনজাতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মনোজ। যদিও তিনি যাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন, তাঁরা প্রথম দিকে অন্তত গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনে সায় দেননি।

তাতে দমে যাননি মনোজ। বাংলা ভাগ করে গোর্খাল্যান্ডের সমর্থন আদায়ের জন্য উত্তর ভারতের কিছু রাজ্যের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখে চলছিলেন তিনি। হিমাচলপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে বসবাসকারী গোর্খাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকাও সংগ্রহ করতেন ওই নেতা। গোয়েন্দাদের দাবি, দিল্লিতে বসেই মোর্চার যাবতীয় সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতেন মনোজ। এতটাই তাঁর প্রভাব ছিল যে, তাঁর পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতেন গুরুঙ্গও। এমন এক নেতার গ্রেফতারিতে মোর্চা বেশ বিপাকে পড়বে এবং মোর্চার আর্থিক জোগানও ধাক্কা খাবে বলে মনে করছেন তদন্তকারী গোয়েন্দারা।

শুধু মনোজ নন, পাহাড়ে বিভিন্ন প্রকল্প যুক্ত ঠিকাদারেরা মোর্চার আন্দোলন সমর্থন করে বড় অঙ্কের টাকা দিচ্ছেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। প্রতি মাসেই মোটা অঙ্কের টাকা পৌঁছে যাচ্ছে মোর্চার তহবিলে। ওই ঠিকাদারদের তালিকা তৈরি হচ্ছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE