জঙ্গলে শীত ও বর্ষায় দাপট বাড়ে চোরাশিকারিদের। অতীতেও তার প্রমাণ পেয়েছেন বনকর্মীরা। এ বারও কুয়াশার সুযোগ নিয়ে হাতি-গণ্ডার-চিতাবাঘ মারতে ডুয়ার্সের জঙ্গলে প্রায় ১০ জন চোরাশিকারির একটি দল ঢুকেছে বলে বন দফতরকে সতর্ক করলেন গোয়েন্দারা। অরুণাচল-অসমের কয়েক জন শিকারি এবং উত্তরবঙ্গ ও নেপালের অন্তত দু’জন দলে রয়েছে বলে সন্দেহ কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কনট্রোল ব্যুরো’-র (ডব্লিউএলসিসিবি) গোয়েন্দাদের। তাই বক্সা, জলদাপাড়া, গরুমারা, চাপড়ামারি, জয়ন্তীর মতো এলাকায় শুরু হয়েছে ‘অপারেশন অল আউট’।
বন দফতর সূত্রে খবর, জঙ্গল এলাকায় যানবাহনে লাগাতার তল্লাশি চালাচ্ছেন তাঁরা। প্রাণীর দেহাংশের অস্তিত্ব টের পেতে প্রশিক্ষিত কুকুরও আনা হয়েছে। বনাঞ্চলে বেশ কিছু সিসি ক্যামেরা আছে। আরও বসানোর কাজ চলছে। উত্তরবঙ্গের চিফ কনজারভেটর অব ফরেস্টস (ওয়াইল্ড লাইফ) উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, ‘‘চোরাশিকারীদের দলটি ঢুকে পড়েছে বলে স্পষ্ট সতর্কবার্তা মিলেছে। ডব্লিউএলসিসিবির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আরও দু’টি ডগ স্কোয়াড আনা হচ্ছে। দলটিকে ধরতে ‘অল আউট’ চেষ্টা করছি।’’ বন দফতর ভুটান ও নেপাল সীমান্ত পাহারায় থাকা সশস্ত্র সীমা বলের (এসএসবি) সঙ্গেও তথ্য আদানপ্রদান বাড়িয়েছে।
ফি বছর শীতে বিকেল নামলেই পাহাড় ও ডুয়ার্সের বনাঞ্চল ঢেকে যায় ঘন কুয়াশায়। দু’শো মিটার দূরের কিছুও ঠাহর করা যায় না। শীতে বনলাগোয়া বস্তিতে ধানের লোভে হাতির হানাও নিয়মিত ঘটনা। তাদের তাড়াতে বিকট শব্দে পটকা ফাটানোও চলে। তাকে কাজে লাগিয়ে গুলি চালিয়ে চোরাশিকারের ঘটনাও অতীতে ঘটেছে। এ বারেও সেই একই ছকে বুনোজন্তু শিকার করা হতে পারে বলে আশঙ্কা বন বিভাগের। তাই পটকা ফাটানোর সময়ে পাহারায় থাকা কর্মীদের অতি সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে বন বিভাগ। বন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারির মধ্যে বক্সা, গরুমারা, জলদাপাড়ায় অতীতে অন্তত সাতটি হাতি, ছ’টি গণ্ডার, পাঁচটি চিতাবাঘ শিকারের ঘটনা ঘটেছে। গত বছরও গরুমারার গরাতিতে ২টি গণ্ডার মেরে খড়্গ নিয়ে দেহ পুঁতে চলে যায় উত্তর পূর্বের শিকারিরা। এ বছরের জানুয়ারি থেকে চোরাশিকারি সন্দেহে ৬৬ জনকে ধরা হয়। অনেকে জামিনও পেয়েছে। গত ১৯ অক্টোবর মেন্দাবাড়ি থেকে ধৃত সঞ্জয় রাভার দলও সন্দেহের তালিকায়। এদের কাছে এ কে ৪৭ রাইফেল ও প্রায় ৫০ রাউন্ড কার্তুজ মিলেছিল। অতীতে একাধিকবার চোরাশিকারে যুক্ত সন্দেহে ধৃত আদতে জয়গাঁর বাসিন্দা রতিরাম শর্মার কিছু ‘এজেন্ট’-এর নামও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy