বড়জোড়া থানায় হামলায় অভিযুক্তদের তোলা হচ্ছে বাঁকুড়া আদালতে। নিজস্ব চিত্র
গরু চুরির অভিযোগে ধৃতদের ছেড়ে দেওয়ার দাবি ঘিরে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল থানা চত্বর। শুক্রবার রাতে বাঁকুড়ার বড়জোড়া থানায় এই ঘটনায় সাত পুলিশকর্মী জখম হন। বাঁকুড়া থেকে পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। দু’জন মহিলা-সহ সাত বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, “বিক্ষোভকারীরা থানায় হামলা চালান। পুলিশকর্মীদের উপরে চড়াও হলে, কয়েক জন জখম হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তদন্ত চলছে।”
ধৃতদের বিরুদ্ধে থানার লক-আপ থেকে অভিযুক্তদের ছিনতাইয়ের চেষ্টা, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, মহিলা পুলিশকর্মীদের যৌন হেনস্থা, পুলিশের উপরে হামলা-সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে বেধেছে রাজনৈতিক চাপান-উতোরও। বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের অভিযোগ, ‘‘রাজ্যে বালি, কয়লা, গরু চুরি চলছেই। আবার পাচারকারীরা থানায় হামলাও করছে। এই ঘটনাই রাজ্যের পরিস্থিতির প্রমাণ!’’ বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়ক অলক মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘পুলিশ উপযুক্ত পদক্ষেপ করেছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পরিস্থিতি এ রাজ্যে নেই।’’
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বড়জোড়ার মালিয়াড়া-মেটালি রাস্তায় গরু বোঝাই একটি পিক-আপ ভ্যান আটকানো হয়। গরু পরিবহণের বৈধ চালান ও গরুগুলির মালিকানার বৈধ প্রমাণপত্র দেখাতে পারেননি চালক-সহ ভ্যানে থাকা তিন জন, দাবি পুলিশের। পুলিশ তাদের গরু চুরির অভিযোগে গ্রেফতার করে। আদালতের নির্দেশে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের হেফাজতে নেয় পুলিশ।
অভিযোগ, শুক্রবার বিকেল থেকে ধৃতদের পরিবারের কিছু লোক বড়জোড়া থানা চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন। রাত গড়ালে, বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা বাড়ে। তাঁরা থানার অফিস চত্বরে উঠে আসেন। আটকাতে গেলে, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের উপরে চড়াও হন বলে অভিযোগ। তিন মহিলা পুলিশকর্মী-সহ সাত জন জখম হন। খবর পেয়ে বাঁকুড়া থেকে বড় বাহিনী নিয়ে পৌঁছন ডিএসপি (প্রশাসন) শান্তনু চৌধুরী। অধিকাংশ বিক্ষোভকারী চম্পট দিলেও, কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিক্ষোভকারীদের একাংশের দাবি, অভিযুক্তদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তবে পুলিশ জানায়, নির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ধরা হয়েছে অভিযুক্তদের। শনিবার বাঁকুড়া কোর্ট ধৃতদের ১৪ দিন জেল হেফাজতে পাঠায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘটনার পরে, রাতে কার্যত পুরুষশূন্য হয়ে যায় বিক্ষোভকারীদের গ্রাম। পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি নজরে রাখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy