দু’লেনের রাস্তার মাঝখানেই দোকান। দুর্গাপুরের চুয়ান্ন ফুট এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
বছর ঘুরতে চলল। ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভা দুর্গাপুরে। তার আগে সভা রয়েছে জামুড়িয়াতেও। এই সময়ে দাঁড়িয়ে দুর্গাপুরের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, গত বার মুখ্যমন্ত্রীর শিলান্যাস করে যাওয়া বেশ কিছু প্রকল্পের মধ্যে ফুটপাত নির্মাণ ও সৌন্দর্যায়নের কাজের অগ্রগতি আশানুরূপ নয়। অভিযোগ, সেই সব প্রকল্প রূপায়ণে সে ভাবে পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নিস্থানীয় প্রশাসনকে।
২০১৭-র ১১ ডিসেম্বর কাঁকসার রঘুনাথপুরে সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন, শিলান্যাস ও পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে দুর্গাপুর পুরসভা এলাকার জন্য প্রায় ১৫টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার মধ্যে রয়েছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার ধারে ফুটপাত নির্মাণ, ডিভাইডার তৈরি ও সৌন্দর্যায়নের মতো প্রকল্প। যেমন, প্রায় ১ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকা খরচে গাঁধীমোড় থেকে রেডক্রশ রোড, শহিদ ক্ষুদিরাম সরণি ভায়া হরেকৃষ্ণ সরণিতে ফুটপাত নির্মাণ ও সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তার ধারে দু’-এক জায়গায় জবরদখল উচ্ছেদ ছাড়া এই প্রকল্পের কাজ শুরুর বিষয়ে তেমন কোনও পদক্ষেপ করেনি পুরসভা। এমনকি, বেশ কিছু জায়গায় ফের জবরদখলকারীদের দেখা যাচ্ছে।
প্রায় ১ কোটি সাড়ে ১৩ লক্ষ টাকা খরচে সিটি সেন্টারের অবনীন্দ্রনাথ বীথি মোড় থেকে রেডক্রশ রোড, ভায়া ডক্টর্স কলোনি, নজরুল সরণিতে ফুটপাত তৈরি ও সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের কাজ এখনও শুরুই হয়নি বলে জানান অমিতাভ চক্রবর্তী নামে এক প্রবীণ। প্রায় ১ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে গাঁধীমোড় থেকে এসবিএসটিসি মোড় ভায়া ৫৪ ফুট, রাস্তার ডিভাইডার, ফুটপাত নির্মাণ ও সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের জন্য দুর্গাপুর পুরসভার বরো চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ হালদার বৈঠক করেন জবরদখলকারীদের সঙ্গে। তাঁরা উঠে যাবেন বলে সম্মতিও দেন। এনআইটি-র দিক থেকে রাস্তার কিছু অংশে যন্ত্র দিয়ে দু’পাশের মাটি সরানোর কাজ শুরু হয়। কিন্তু তার পরে কাজ আর এগোয়নি বলে অভিযোগ। জবরদখলকারীরাও বহাল তবিয়তেই রয়েছেন। মাইকেল ফ্যারাডে রোডের এক দিকে ফুটপাত তৈরির কাজ শুরু হলেও তা শেষ হয়নি। কালভার্টের জায়গাগুলিতে ফুটপাত তৈরি করা হয়নি। রঞ্জিত গুহ নামে এক স্থানীয় বাসিন্দার দাবি, রাস্তার পাশে উঁচু ফুটপাত থাকায় বৃষ্টির জল রাস্তা থেকে দ্রুত নামার ক্ষেত্রে সমস্যা হবে।
সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ডের পরিকাঠামো নিয়েও অনেক অভাব-অভিযোগ রয়েছে যাত্রীদের। ২০১৮-র ৫ মার্চ দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বণিকসভার প্রতিনিধিরা শহরে একটি আধুনিক বাসস্ট্যান্ড গড়ার আর্জি জানান। মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি রাজ্যের পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখার নির্দেশ দেন। ঠিক হয়, বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা বিওজিএল লাগোয়া এডিডিএ-র ৪৫ একর জায়গায় তৈরি করা হবে নতুন বাসস্ট্যান্ড। সেই মতো এডিডিএ প্রস্তাব পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু তার পরে আর
কাজ এগোয়নি।
কিন্তু কেন কাজের গতি আশানারূপ নয় বলে অভিযোগ উঠছে? দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র দিলীপ অগস্তি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ দেওয়া বেশ কিছু কাজ পুরসভা এলাকায় চলছে। একই ঠিকাদার একাধিক কাজের বরাত পাওয়ায় দু’-একটি ক্ষেত্রে কিছুটা দেরি হচ্ছে। আমরা ওই ঠিকাদারদের ডেকে যাতে দ্রুত কাজ হয়, সেই ব্যবস্থা করছি।’’
আজ, বৃহস্পতিবার ফের দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। দুর্গাপুরবাসীর আশা, অসমাপ্ত প্রকল্পগুলির বিষয়েও প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy