অগত্যা: ফালাকাটা থেকে আলিপুরদুয়ারের পথে তোর্সা নদীর উপরে কাঠের সেতু ভেঙেছে বন্যায়। বেসরকারি নৌকাতেই চলছে পারাপার। সোমবার। ছবি: রাজকুমার মোদক।
পুরভোট শেষ হতেই এক রাতের মধ্যে ডুবে গেল দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুর। জল এখনও বেড়েই চলেছে। শহরের সবগুলি স্কুলে ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। রবিবার রাত থেকে বহু মানুষ উঁচু রাস্তা ও সেতুর উপর ঠাঁই নিয়েছেন। একই চিত্র মালদহতেও। ফুলহার চরম বিপদসীমার এক মিটার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়ায় এই জেলার চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তত ২০ হাজার মানুষ জলবন্দি হয়ে পড়েন। হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের ইসলামপুর ও দৌলতনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তত ৬ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন মহানন্দা বাঁধের ধারে। বিপদ আরও বেড়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে বিহারের আজিমনগর থানা এলাকার ধুবল সিদকিয়া গ্রামে ফুলহার নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায়। ফুলহারের পাশাপাশি গঙ্গার জলস্তরও হু হু করে বাড়ছে। কোচবিহার ও ডুয়ার্সে বৃষ্টি কমলেও বাড়ছে ভাঙন।
জল বাড়তে শুরু করেছে উত্তর দিনাজরের মহানন্দা, নাগর, সুদানি সহ বিভিন্ন নদীরও। করণদিঘিতে জাতীয় সড়কে বন্যার জল বইছে। এমনই ভাবে জলবন্দি বহু জায়গাতেই ত্রাণ সময় মতো পৌঁছয়নি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও আলিপুরের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী তাই সোমবার বন্যা ও ভাঙন দুর্গতদের ক্ষোভের মুখে পড়েন। এ দিন সকালে দক্ষিণ দিনাজপুরের মহারাজপুরের কাছে ত্রাণভর্তি একটি ট্রাক দুর্গতরা লুঠ করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। সৌরভবাবুও দাবি করেন, ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় কম। প্রশাসন অবশ্য সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। তবে আনাজের সঙ্গে মাছের দামও চড়ছে বিভিন্ন এলাকায়। তাতেও বাড়ছে ক্ষোভ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ট্যুইট করেছেন। আরও বলছেন, ‘‘কপ্টার থেকে বন্যা দেখা পছন্দ করি না। সম্ভব হলে মানুষের কাছে সশরীরে পৌঁছতে চাই।’’ নবান্ন সূত্রে খবর, সড়ক ও রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় সেটা সম্ভব হচ্ছে না। তবে নিয়মিত খবর রাখছেন। উত্তরে নজরদারির দায়িত্বও ভাগ করে দিয়েছেন চার মন্ত্রীর মধ্যে। কোচবিহারের দায়িত্ব রবীন্দ্রনাথবাবুর, আলিপুরদুয়ারের বনমন্ত্রী বিনয় বর্মনের, পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব নজর রাখছেন জলপাইগুড়ি ও উত্তর দিনাজপুরের উপরে। দক্ষিণ দিনাজপুরের দায়িত্ব সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
এই জেলায় বৃষ্টি ধরলেও আত্রেয়ীর জল বাড়ছে। গঙ্গারামপুরের মহারাজপুরের সেতু দুর্বল হয়ে পড়ায় এ দিন দুপুর থেকে ভারি যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় বালুরঘাট একরকম বিচ্ছিন্ন। রবিবার মালবাজার ও বানরহাটে নদী-ঝোরা থেকে দু’টি দেহও উদ্ধার করা হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘির বিলাসপুরে এক বধূ ও আলতাপুর এলাকাতে দুই ছাত্র তলিয়ে গিয়েছেন বলেও খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy