Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Swami Smaranananda Maharaj

স্তব্ধ হয়েছিল মন, নিবন্ধে মোদীর স্মরণ স্বামী স্মরণানন্দকে 

স্বামী স্মরণানন্দকে ‘ভারতের আধ্যাত্মিক চেতনার অগ্রদূত’ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, স্বামী স্মরণানন্দের প্রয়াণ তাঁর কাছে ব্যক্তিগত ক্ষতির সমতুল্য।

swami Smaranananda Maharaj

রামকৃষ্ণ মঠ এবং মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজ। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪ ০৭:৪৭
Share: Save:

স্বামী স্মরণানন্দের অসুস্থতার খবর শুনে সম্প্রতি কলকাতায় এসেই হাসপাতালে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষের প্রয়াণের পরে শোকপ্রকাশ করে নিজের লেখা নিবন্ধে সেই সাক্ষাতেরই স্মৃতিচারণ করলেন নরেন্দ্র মোদী। তাতেই জানালেন, লোকসভা ভোটের মধ্যে স্বামী স্মরণানন্দের প্রয়াণের সংবাদ কয়েক মুহূর্তের জন্য তাঁর মনকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল।

স্বামী স্মরণানন্দকে ‘ভারতের আধ্যাত্মিক চেতনার অগ্রদূত’ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, স্বামী স্মরণানন্দের প্রয়াণ তাঁর কাছে ব্যক্তিগত ক্ষতির সমতুল্য। শুধু স্বামী স্মরণানন্দজি নন, তাঁর পূর্বসূরি স্বামী আত্মস্থানন্দকেও স্মরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, স্বামী আত্মস্থানন্দজির মতো স্বামী স্মরণানন্দজিও সারা বিশ্বে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব, মা সারদাদেবী এবং স্বামী বিবেকানন্দের চিন্তাধারা ছড়িয়ে দেওয়ার কাজে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। অনন্তের পথে এই দু’জন মানুষের যাত্রা কোটি কোটি ভক্ত ও সন্ন্যাসীর পাশাপাশি তাঁর হৃদয়কেও গভীর বিষাদপূর্ণ করে তুলেছে।

প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘আজ এই নিবন্ধ লিখতে লিখতে অতীতের সাক্ষাৎ আর আলাপচারিতার স্মৃতি টাটকা হয়ে উঠছে আমার মনে। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বেলুড় মঠে থাকাকালীন আমি স্বামী বিবেকানন্দের ঘরে ধ্যান করেছিলাম। সেই সময়ে স্বামী আত্মস্থানন্দজিকে নিয়ে স্বামী স্মরণানন্দের সঙ্গে দীর্ঘ কথাবার্তা হয়েছিল।’ রামকৃষ্ণ মিশন ও বেলুড় মঠের সঙ্গে তাঁর নিবিড় সম্পর্কের কথা নিবন্ধে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি লিখেছেন, ‘আধ্যাত্মিকতার সন্ধানে পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে বহু সন্ত ও মহাত্মার সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে। অনেক জায়গায় গিয়েছি। রামকৃষ্ণ মঠেও এমন সন্ন্যাসীদের সম্পর্কে জানার সুযোগ হয়েছে, যাঁরা অধ্যাত্মের পথে জীবন সঁপে দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন স্বামী আত্মস্থানন্দজি এবং স্বামী স্মরণানন্দজি। তাঁদের জ্ঞান ও পবিত্র ভাবনা আমার মন ভরিয়ে তুলেছে। ‘জনসেবাই প্রভুর সেবা’ কথাটির প্রকৃত অর্থ আমার জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমাকে শিখিয়েছিলেন এই সন্ন্যাসীরা। স্বামী আত্মস্থানন্দজি এবং স্বামী স্মরণানন্দজির জীবন রামকৃষ্ণ মিশনের আদর্শ ‘আত্মনো মোক্ষার্থং জগদ্ধিতায় চ’ (নিজের মুক্তি ও বিশ্ব কল্যাণ)-এর অনপনেয় উদাহরণ।’

শিক্ষার প্রসার এবং গ্রামোন্নয়নে রামকৃষ্ণ মিশনের ভূমিকার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, রামকৃষ্ণ মিশন কাজ করছে ভারতের আধ্যাত্মিক উদ্ভাস, শিক্ষা ক্ষেত্রে ক্ষমতায়ন এবং মানবসেবার লক্ষ্যে। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘গত কয়েক বছরে বিভিন্ন পদে থাকাকালীন
স্বামী আত্মস্থানন্দজি এবং স্বামী স্মরণানন্দজি অত্যন্ত জোর দিয়েছিলেন সামাজিক ক্ষমতায়নের উপরে। যাঁরা এই মহান ব্যক্তিদের জীবন সম্পর্কে জানেন, তাঁরা নিশ্চিত ভাবে বুঝতে পারবেন এই সন্ন্যাসীরা আধুনিক শিক্ষা, কর্মদক্ষতা এবং মহিলাদের ক্ষমতায়ন সম্পর্কে কতটা গভীর ভাবে ভাবিত ছিলেন।’

প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, ভারত তার উন্নয়নের যাত্রার বিভিন্ন বিন্দুতে স্বামী আত্মস্থানন্দজি, স্বামী স্মরণানন্দজির মতো বহু সাধু-সন্তের আশীর্বাদ লাভ করেছে, যাঁরা সমাজ পরিবর্তনের স্ফুলিঙ্গটি জুগিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে মোদী লিখছেন, ‘তাঁরা আমাদের একতার আদর্শে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন এবং সমাজ যে সব সমস্যার মুখোমুখি হয়, তার মোকাবিলা করার প্রেরণা জুগিয়েছেন। এই নীতি চিরন্তন। অমৃতকালে বিকশিত ভারত গঠনে আমাদের যাত্রায় এটি আমাদের শক্তি জোগাবে।’

সমগ্র দেশের পক্ষ থেকে এই মহাজীবনকে শ্রদ্ধা অর্পণ করেছেন মোদী। তিনি লিখেছেন, ‘আমার বিশ্বাস, রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে যুক্ত সকল মানুষ তাঁদের দেখানো পথে আরও এগিয়ে যাবে।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ramkrishna Math Death Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE