Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪
আছেন কি পাহাড়ে?

কোথায় মৈনাকের আত্মীয়, হন্যে হয়ে খোঁজ

দূরত্ব বারো হাজার কিলোমিটার। কিন্তু সেখানে বন্দুক নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটিতে হামলার ঢেউ এসে লাগল উত্তরবঙ্গেও। ক্যালিফোর্নিয়ায় গবেষক মৈনাক সরকার খুন করেন তাঁর স্ত্রী এবং গবেষণার গাইডকে।

অনির্বাণ রায়
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৬ ০২:১৫
Share: Save:

দূরত্ব বারো হাজার কিলোমিটার। কিন্তু সেখানে বন্দুক নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটিতে হামলার ঢেউ এসে লাগল উত্তরবঙ্গেও। ক্যালিফোর্নিয়ায় গবেষক মৈনাক সরকার খুন করেন তাঁর স্ত্রী এবং গবেষণার গাইডকে। পরে আত্মঘাতী হন। রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কাছে খবর, তাঁর দুই আত্মীয় এখন সম্ভবত দার্জিলিঙের কোথাও রয়েছেন। তাঁদেরই খোঁজে শুক্রবার রাতে ও শনিবার দিনভর হন্যে সকলে।

তথ্য হাতে পাওয়ার পরে প্রথমে খোঁজ করতে শুরু করে গোয়েন্দা দফতর। তার পরে জেলা প্রশাসন। যদিও, ওই দুই আত্মীয়কে খুঁজে বের করার কোনও সরকারি নির্দেশ নেই। তবে মৈনাক সরকারের মৃত্যুর পরে তাঁর আত্মীয়দের খবর পাঠানোর জন্য মার্কিন পুলিশের তরফে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে জানানো হয়েছে বলে খবর। কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের নির্দেশেই মৈনাকের আত্মীয়দের সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে প্রশাসন। তবে এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কাছে কোনও খবর নেই। দার্জিলিং থেকে তাঁরা ফিরে গিয়েছেন, এমন তথ্যও পায়নি প্রশাসন। এমনকী, দার্জিলিঙেই তাঁরা এসেছিলেন কি না, তা নিয়েও নিশ্চিত নন কেউই। তবে তথ্য যখন মিলেছে, ধোঁয়াশা থাকলেও যাচাই করে দেখা হচ্ছে, জানিয়েছেন উচ্চ পদস্থ কর্তারা।

উত্তরবঙ্গের এক পুলিশ কর্তার মন্তব্য, ‘‘বিষয়টি একেবারেই সরকারি নয়। দার্জিলিঙে তাঁরা থাকতে পারেন, এ কথা শোনার পরে শুধুমাত্র খোঁজ শুরু হয়েছে। তাঁরা কোথায় রয়েছেন জেনে রাখা হবে। যদি তাঁদের কোনও বার্তা পাঠানোর প্রয়োজন হয়, সে কারণেই আগেভাগে এই খোঁজখবর করা।’’

হাতে কিন্তু বেশি তথ্য নেই প্রশাসনের। সূত্র বলতে দুই আত্মীয়ের নাম, কলকাতার ঠিকানা এবং দার্জিলিঙে তাঁদের ঘুরতে আসার খবরটুকু। কলকাতা পুলিশের তরফে দার্জিলিং জেলা পুলিশ বা প্রশাসনকে মৈনাকের আত্মীয় দু’জনের ফোন নম্বরও দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে জানা গিয়েছে। তবে ইতিমধ্যে দার্জিলিঙের প্রথম সারির বিভিন্ন হোটেলের আবাসিকদের নাম-ঠিকানা খতিয়ে দেখেছে পুলিশ। কালিম্পং এবং কার্শিয়াঙের হোটেলগুলির আবাসিকদের নামের তালিকাও জেলা সদরে চেয়ে পাঠানো হয়েছে। খতিয়ে দেখা হয়েছে গত দু’দিনের বাগডোগরা বিমানবন্দরে যাতায়াত করা যাত্রীদের নামের তালিকাও।

বিমানবন্দর অধিকর্তা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শনিবার সকালে কয়েক জন সরকারি আধিকারিক যাত্রীদের নামের তালিকা খতিয়ে দেখেছেন। তবে কেন তালিকা দেখা হচ্ছে, কাকে তাঁরা খুঁজছেন সে সব কিছু জানাতে চাননি।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকটি হোটেল সপ্তাহে দু’বার আবাসিকদের তালিকা পাঠায়। সেই সব হোটেল কর্তৃপক্ষকে ওই দু’জনের নাম জানিয়ে রাখা হয়েছে।

শনিবার বিকেলে দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে অনেকেই দু’জন ব্যক্তির খোঁজখবর করছেন। আমরা সেই মতো কিছু জায়গায় খোঁজখবর করেছি। তবে যাঁদের খোঁজ চলছে, তাঁদের পাওয়া যায়নি।’’

পুলিশ প্রশাসন ছাড়াও মৈনাকের আত্মীয়দের খোঁজ শুরু করেছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও। ওই সংগঠনটি অনাবাসী ভারতীয়দের নানা প্রয়োজন এবং বিপদে সাহায্য করে থাকে। স্থানীয় কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছে ওই সংগঠনটি। দার্জিলিং অ্যাসোসিয়েশন অব ট্যুর অপারেটর্স-এর তরফে প্রদীপ লামা বলেন, ‘‘একটি বেসরকারি সংগঠনের তরফে দু’জনের নাম দিয়ে খোঁজ চলেছে। তাঁরা মৈনাক সরকারের আত্মীয় বলে জানা গিয়েছে।’’ খোঁজ পড়েছে সমতলের ট্যুর অপারেটরদের কাছেও। ট্যুর অপারেটরদের সংগঠন এতোয়া-র কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘গত শুক্রবার সন্ধ্যের পর থেকেই বহু ব্যক্তি, নানা সংগঠন দু’জনের নাম দিয়ে খোঁজ করছেন। দার্জিলিঙের কোনও হোটেলে ওঁরা আছেন বলে মনে হচ্ছে না। লাগোয়া কোনও গ্রামের হোম স্টে-তে তাঁরা থাকতে পারেন। খোঁজ চলছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Gunman Mainak sarkar Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE