বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলাতেও রাজনীতির ছায়া মালদহে। ত্রাণ বিলি থেকে শুরু করে প্রশাসনিক বৈঠকে ডাকা নিয়ে মালদহ জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাত ও দলবাজির অভিযোগ তুলল বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, ত্রাণ বিলি ও বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে চাঁচলে গোপনে বৈঠক করছে জেলা প্রশাসন এবং সেখানে কেবল ডাক পাচ্ছেন তৃণমূলের মালদহ জেলা সভাপতি, জেলা পরিষদের শাসকদলের সদস্যরা। অথচ বিরোধী দলগুলির বিধায়ক থেকে শুরু করে জেলা পরিষদের বিরোধী নেত্রী বা সদস্য কাউকেই ডাকা হচ্ছে না। তাঁদের আরও অভিযোগ, বন্যায় ত্রাণ বিলির ক্ষেত্রে শাসকদলের কিছু জনপ্রতিনিধিদের সুবিধাও পাইয়ে দিচ্ছে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে চাঁচল সার্কিট হাউসে একটি বৈঠক হয়। সেখানে জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য, অতিরিক্ত জেলাশাসক, চাঁচল মহকুমাশাসক, বিডিও থেকে শুরু করে তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের সভাধিপতি সরলা মুর্মু, সহকারী সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল, সমস্ত কর্মাধ্যক্ষ থেকে শুরু করে কয়েকজন শাসকদলের সদস্যরা ছিলেন। এমনকী জেলা তৃণমূলের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনও ছিলেন। কিন্তু বৈঠকে চাঁচল মহকুমা এলাকার বিরোধী দলের কোনও বিধায়ক, জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেত্রী ও সদস্যদের কাউকে ডাকা হয়নি। ডাক পাননি এলাকার কংগ্রেস সাংসদ মৌসম নূরও। তা নিয়েই সরব হয়েছে বিরোধীরা।
হরিশ্চন্দ্রপুরের কংগ্রেস বিধায়ক মোস্তাক আলম বলেন, ‘‘এ বারের বন্যায় জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত আমার এলাকা। অথচ জেলা প্রশাসনের কর্তারা আমাদের ডাকলেন না। ডাক পেলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। এটা চূড়ান্ত দলবাজির নমুনা।’’ চাঁচলের কংগ্রেস বিধায়ক আসিফ মেহেবুব বলেন, ‘‘ত্রাণের ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের কাছে চিঠি লিখলেও তার কোনও উত্তর এল না। বৈঠকে ডাকা হলে নানা সমস্যার কথা আমরা তুলতে পারতাম। কিন্তু পুরোটাই শাসকদলকে নিয়ে পক্ষপাত করা হল।’’
সরব হয়েছেন জেলা পরিষদের বিরোধী নেত্রী কংগ্রেসের রেহেনা পারভিনও। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘ত্রাণ বিলি থেকে শুরু করে প্রশাসনিক বৈঠক সব ক্ষেত্রেই প্রশাসন ও শাসকদল মিলে দলবাজি ও পক্ষপাত করছে। আমাদের পুরোপুরি অন্ধকারে রাখা হচ্ছে।’’ জেলা পরিষদের হরিশ্চন্দ্রপুরের সদস্য সিপিএমের শেখের অভিযোগ, ‘‘জেলা পরিষদের স্থানীয় শাসকদলের সদস্য বা কর্মাধ্যক্ষদের ত্রাণে বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে প্রশাসন।’’ তবে অভিযোগ মানতে চাননি তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি সরকারি নানা কমিটিতে রয়েছি। জেলা প্রশাসন আমায় ডেকেছে, আমি ওই বৈঠকে গিয়েছি। দলবাজি বা পক্ষপাতিত্বের কথা আসছে কেন জানি না।’’
জেলাশাসক অবশ্য বৈঠকের কথাই মানতে চাননি। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘বৈঠক হলে তো চিঠি, প্রস্তাবনা থাকবে। সেদিন আমি চাঁচলে মহকুমাশাসকের সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে যাই। সার্কিট হাউসে খাওয়া-দাওয়া করতে গিয়েছি। সেখানে কোনওকারণে সভাধিপতি, মোয়াজ্জেম হোসেনদের সঙ্গে দেখা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy