ফাইল চিত্র
কোভিড আক্রান্ত রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার সুযোগে জেগে উঠছে শরীরে সুপ্ত থাকা অন্যান্য ভাইরাস। তার মধ্যে অন্যতম সাইটোমেগালো ভাইরাস। দিল্লি, পুণের পর কলকাতার দুই বেসরকারি হাসপাতালে ১১ জন করোনা রোগীর শরীরে মিলল সাইটোমেগালো ভাইরাস। এর মধ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। ক্রিটিক্যাল কেয়ারের চিকিৎসক সোহম মজুমদারের মতে, ‘‘ টিবির মতো এই ভাইরাস শরীরের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে। কোভিড রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দুর্বল করে দেয়। সেই সুযোগেই সক্রিয় হয়ে উঠছে সাইটোমেগালো ভাইরাস। আপত নিরীহ এই ভাইরাসই কোভিড রোগীর ক্ষেত্রে প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে।’’
বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে গত এক মাসে ন’জন রোগীর শরীরে এই ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে, চার জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আক্রান্ত ন’জনের মধ্যে তিন জন সাইটোমেগালো কোলাইটিসে আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে ওই হাসপাতালে চার জন সাইটোমেগালো ভাইরাসে আক্রান্তের চিকিৎসা চলছে বলে জানান ওই রোগীদের চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত এক চিকিৎসক। ঢাকুরিয়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে একমো সাপোর্টে থাকা দু’জন কোভিড রোগী সাইটোমেগালো ভাইরাসে আক্রান্ত হন। কলকাতার ৪০ বছরের এক মহিলা এবং ৫৮ বছরের এক পুরুষ কোভিড আক্রান্ত হয়ে একমো সাপোর্টে ছিলেন। সাইটোমেগালো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তাঁদের মলদ্বার দিয়ে রক্তপাত শুরু হয়। দুই রোগীর অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসা শুরু করা হলেও শেষরক্ষা হয়নি বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক।
গুরুতর অসুস্থ হয়ে আইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে সাইটোমেগালো ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। মিউকরমাইকোসিসের মতো এ ক্ষেত্রেও যে সব কোভিড রোগীর চিকিৎসায় অতিমাত্রায় স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়েছে, মূলত সেই সব রোগীর এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে বলে জানান চিকিৎসক দেবরাজ যশ। তিনি জানান, ‘‘বেশ কিছু রাজ্যে সাইটোমেগালো ভাইরাস বা সিএমভি আক্রান্তের হদিশ মেলায় আমরাও সজাগ হয়েছি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কোভিড আক্রন্তের মলদ্বার দিয়ে রক্তপাত হলে সিএমভি ভাইরাস আছে কী না দেখতে সিএমভি এরএনএ পিসিআর, বায়োপ্সি পরীক্ষা করে দেখছি। আক্রান্তদের ২১ দিন ধরে চিকিৎসা চলে। শুরুর কয়েক দিন রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়। ভাইরাসকে কাবু করতে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়।পরবর্তী চিকিৎসা বাড়ি থেকেও সম্ভব।’’ সাইটোমেগালো ভাইরাস এক জনের শরীর থেকে অন্য জনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই বলেও জানান চিকিৎসক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy