Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

শেষ সফরে প্রণব বললেন, ফির মিলেঙ্গে

ফুরিয়ে আসা সেই বিকেলটা বিদায়ী সাঁঝ করে তুললেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘এটাই অন্তিম সফর, তা বলে, আপনাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক খতম হল কি!’’ একটু থামলেন, স্তব্ধ ছাউনির নিচে ফের শোনা গেল তাঁর গলা, ‘‘না, ফির মিলেঙ্গে!’’ উচ্ছাসে ভরে গেল ছাউনি।

কাশ্মীরে পাকিস্তানের গুলিতে পঙ্গু জওয়ানকে সম্মান জানালেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। শনিবার নবগ্রামে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

কাশ্মীরে পাকিস্তানের গুলিতে পঙ্গু জওয়ানকে সম্মান জানালেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। শনিবার নবগ্রামে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

অনল আবেদিন ও সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়
নবগ্রাম শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৭ ০১:০৪
Share: Save:

নবগ্রামের সেনা ছাউনির ছায়ায়, শনিবার দুপুরটা অবিকল দশমীর বিকেল হয়ে উঠছিল। ফুরিয়ে আসা সেই বিকেলটা বিদায়ী সাঁঝ করে তুললেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘এটাই অন্তিম সফর, তা বলে, আপনাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক খতম হল কি!’’ একটু থামলেন, স্তব্ধ ছাউনির নিচে ফের শোনা গেল তাঁর গলা, ‘‘না, ফির মিলেঙ্গে!’’ উচ্ছাসে ভরে গেল ছাউনি।

২০০৪ সালে জঙ্গিপুরের মানুষের ভোটে প্রথম বার লোকসভায় সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। তার পরেই প্রতিরক্ষমন্ত্রী। সেই সময়, বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরীর আর্জি মেনে প্রণববাবু নবগ্রামে এই সেনা ছাউনির অনুমোদন দিয়েছিলেন। জমিজটে অবশ্য ছাউনি গড়তে পেরিয়ে গিয়েছিল দশ বছর। ২০১৪ সালে ২৫০ একর জমির উপর সেই ছাউনির শিলান্যাস করে ছিলেন তিনিই। আর, গত বছর করে গিয়েছিলেন উদ্বোধন। রাষ্টপতি হিসাবে সেই সেনা ছাউনিতে এ দিন তাঁর শেষ সফরে তিনি বলেন, ‘‘এখানে আট হাজার সৈনিক ও তাঁদের পরিবার থাকবেন।’’

নবগ্রামের সেনা ছাউনি তৈরির জন্য জমি দাতা ও সেনা বাহিনীকে অভিনন্দন জানিয়ে বিদেশি শক্রর আক্রমনে যাঁরা শহিদ হয়েছেন সেই জওয়ান পরিবারের সদস্যদের ও আহতদের এ দিন সম্মানিত করেন রাষ্ট্রপতি। অনুষ্ঠানে, প্রোটকল ভেঙে সিঁডি বেয়ে মঞ্চের সামনে নেমে এসে তিনি জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে আহত এক সেনার গলায় মেডেল পরিয়ে দেন।সিঁড়ে ভেঙে মঞ্চের ওঠা সম্ভব ছিল না আহত ওই ফৌজির। তা দেখেই নেমে আসেন রাষ্ট্রপতি।

তাঁর নিজের হাতে শিলান্যাস করা ও উদ্বোধন করা সেনা ছাউনি থেকে এ দিন রাষ্ট্রপতি হিসাবে শেষ বিদায় নেওয়ার আগের মুহূর্তে ফের তিনি স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েন। সেনা ছাউনির প্রায় মধ্যস্থলের মূল মঞ্চ ছাড়াও সেনা ছাউনির দেওয়াল ঘেঁষা ছিল আরও একটি মঞ্চ। সেখানে ছিলেন নবগ্রামের কয়েকশো মানু‌ষ। সেনা ছাউনি ছাড়ার আগে দ্বিতীয় মঞ্চে গিয়ে নবগ্রামের মানুষের সঙ্গে দেখা করেন রাষ্ট্রপতি। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘এই নবগ্রামের মানুষের ভোটে আমি সাংসদ হয়েছিলাম। এই নবগ্রামের মানুষই আমাকে সব থেকে বেশি ভোট দিয়ে সাংসদ করেন। সেখান থেকে আমি আজ দেশের সর্বোচ্চ স্থানে। আবার এখানে আসব। আমি আপনাদের ভুলব না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE