সিটি কলেজ অব কমার্স অ্যান্ড বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন - ফাইল চিত্র
রাজ্যে শেষ বার ছাত্রভোট হয়েছিল ২০১৭ সালে। নির্বাচিত ছাত্র সংসদের দু’বছর মেয়াদের পরে ইউনিয়নের আর কোনও অস্তিত্ব থাকারই কথা নয়। অথচ অন্য কিছু কলেজের সঙ্গে সঙ্গে সূর্য সেন স্ট্রিটের সিটি কলেজ অব কমার্স অ্যান্ড বিজনেস অ্যাডমিনেস্ট্রেশনের ছাত্র সংসদের ঘরেও বহিরাগতদের প্রবল দাপট। অভিযোগ, ওই বহিরাগতেরা আসলে বকলমে ইউনিয়নের দাদা। বিষয়টি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, ওই কলেজের অধ্যক্ষ ইউনিয়ন রুম বন্ধ করে দিয়ে নোটিস জারি করেছেন।
অধ্যক্ষ সন্দীপ পাল জানান, বহিরাগতেরা যাতে ঢুকতে না-পারেন, সেই জন্য তাঁরা মুচিপাড়া থানায় চিঠি দিয়ে কলেজের গেটে পুলিশ মোতায়েনের আবেদন জানিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।
টাকা তোলা-সহ দাদাগিরির হাজারো অভিযোগের প্রেক্ষিতে কলেজে কলেজে ভর্তি নিয়ে রাজ্য সরকার এ বার অত্যন্ত সাবধানি ছিল। অনলাইনে ভর্তির যাবতীয় প্রক্রিয়া সাঙ্গ করার ব্যবস্থা হওয়ায় ক্লাস শুরুর আগে কোনও পড়ুয়ার কলেজে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। কলেজে ঢোকা নিষিদ্ধ ছিল বহিরাগতদের। কিন্তু অন্য কলেজের সঙ্গে সান্ধ্য সিটি কলেজ অব কমার্সেও ফের দাদাগিরি শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ।
অধ্যক্ষ জানান, ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে ৫ জুলাই ক্লাস শুরু হয়েছে। ফিরে এসেছে বহিরাগতদের দাপট। কলেজের দেওয়ালে পড়েছে পোস্টার। ‘ফ্রেশার্স ওয়েলকাম পার্টির’ জন্য কলেজ-কর্তৃপক্ষের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে বলে অধ্যক্ষের অভিযোগ। কলেজের ইংরেজির শিক্ষক সুকান্তি দত্ত, বাংলার শিক্ষক সীতারাম মণ্ডলদের অভিযোগ, ইউনিয়নের বহিরাগত দাদাদের দাপটে পঠনপাঠনেও বিঘ্ন ঘটছে। ক্লাসে পড়ানোর সময় কমে যাচ্ছে। ক্লাসে ঢুকে তাঁরা দেখছেন, ইউনিয়নের দাদারা বক্তৃতা দিচ্ছেন।
এই কলেজ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিয়নের দখলে ছিল। তবে ভোট না-হওয়ায় সেই ইউনিয়নের দাপটে কয়েক মাস ভাটা চলছিল। অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘হঠাৎই দেখছি, ফের এই দাপট শুরু হয়েছে। কলেজে অশান্তির ভয়ে তাই আমরা ইউনিয়ন রুমটাই বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
ভর্তি প্রক্রিয়ার পরে কি টিএমসিপি-র দাপটই ফিরে এল? টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ভর্তি প্রক্রিয়া চলাকালীন বা তার পরে টিএমসিপি-র সমর্থকেরা কলেজে যাচ্ছেন না। তবু যদি কোনও কলেজে টিএমসিপি-র কোনও সদস্যের বিরুদ্ধে টাকা তোলার অভিযোগ ওঠে, আমরা বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখব।’’
অধ্যক্ষ জানান, তাঁদের কলেজে প্রথম সিমেস্টারের ফল ভাল হয়েছে। প্রথম বিভাগে পাশ করেছেন ৬৭ শতাংশ পড়ুয়া। গত বছরের তুলনায় এ বার বাড়তি ৯০০ পড়ুয়া ভর্তি হয়েছেন। সন্দীপবাবু বলেন, ‘‘এখন পঠনপাঠনের সময় বাড়িয়ে ক্লাস শুরু হচ্ছে বিকেল সওয়া ৪টে থেকে। পড়ুয়াদের অভিভাবকেরাও কলেজের পরিবেশ নিয়ে খুব খুশি। এ-রকম ভাল পরিবেশ কেউ অশান্ত করে তুলবে, এটা কোনও মতেই হতে দেব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy