প্রতীকী ছবি।
কেন্দ্র আর রাজ্যের চাপানউতোরে থমকে রয়েছে দশ ডব্লিউবিসিএস (এগজিকিউটিভ) আধিকারিকের ‘ভবিষ্যৎ’। প্রতিবারের মতো এ বারও জানুয়ারিতে যোগ্যতা অনুসারে দশ জন ডব্লিউবিসিএস আধিকারিকের নাম কেন্দ্রের ডিপার্টমেন্ট অব পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিং (ডিওপিটি)-এ পাঠিয়েছিল রাজ্য। সাধারণত, সর্বাধিক এক মাসের মধ্যে আধিকারিকদের সম্পর্কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করে রাজ্যকে জানিয়ে দেয় কেন্দ্র। অগস্ট-সেপ্টেম্বর নাগাদ আইএএস হিসাবে নিয়োগপত্র পেয়ে যান তালিকাভুক্ত ডব্লিউবিসিএস আধিকারিকরা। এ বছর সাত-আট মাস কেটে গেলেও এ বিষয়ে টুঁ শব্দ করছে না কেন্দ্র।
এর আগে কেন্দ্রের তরফে বহু বার অভিযোগ উঠেছে যে আইএএস আধিকারিকদের কেন্দ্রীয় সরকারে ডেপুটেশনে পাঠানো নিয়ে টালবাহানা করে রাজ্য সরকার। তাতে ‘অসন্তুষ্ট’ কেন্দ্র। সে কারণে রাজ্যের পাঠানো ডব্লিউবিসিএস আধিকারিকদের নাম নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করছে না কেন্দ্র। প্রশাসনের আধিকারিকদের কয়েকজন জানাচ্ছেন, ২০১৯ সালে দশ জন অবসর নেওয়ায় পদোন্নতি কোটা সম সংখ্যায় শূন্য হয়েছিল। সেই পদ পূরণে ১৯৯১ ব্যাচের দশ জনের নাম পাঠানো হয়। কেন্দ্রের ‘অসন্তোষের’ কারণে ডব্লিউবিসিএস থেকে আইএএস হওয়ার প্রক্রিয়া থমকে যাওয়ায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন ডব্লিউবিসিএস আধিকারিকদের অনেকে। তাঁদের মতে, একটি ব্যাচের পদোন্নতিতে যত বেশি সময় নষ্ট হবে, তত পরের ব্যাচের আধিকারিকরা পিছিয়ে যাবেন।
বছর খানেক আগেও ডব্লিউবিসিএসদের আইএএস হওয়ার পদোন্নতি আটকেছিল কেন্দ্র। সেক্ষেত্রেও কেন্দ্রের কাজে আইএএস আধিকারিকদের ছাড়ার প্রশ্নে রাজ্যের ‘গা-ছাড়া’ মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সূত্রের খবর, তখন রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ স্তর থেকে কেন্দ্রকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, যে বিষয়টি নিয়ে টালবাহানা হবে না। তাতে বরফ গলায় ডব্লিউবিসিএসদের পদোন্নতির প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করেছিল কেন্দ্র। তবে রাজ্য ‘প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ’ করায় এ বার ‘কঠোর’ মনোভাব দেখানো হচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় প্রশাসন সূত্রে খবর।
নিয়ম অনুসারে, আট বছর কর্মজীবন হলে ডব্লিউবিসিএস আধিকারিক আইএএস হিসাবে পদোন্নতির সুযোগ পাবেন। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ২৭-২৯ বছর ডব্লিউবিসিএস হিসেবে কাজের পরে আইএএস হওয়ার সুযোগ মেলে। একই সঙ্গে, বার্ষিক মূল্যায়ন রিপোর্ট (এসিআর) ভাল থাকাও এই পদোন্নতির অন্যতম মাপকাঠি। সঙ্গে, ভিজিল্যান্স চলা বা বিভাগীয় তদন্ত চললে তা পদোন্নতিতে অন্তরায় হয় বলে প্রশাসনের বিভিন্ন অংশের মত। ডব্লিউবিসিএসদের আইএএসে পদোন্নতির ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ছিল ৫৪ বছর। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৫৬ বছর।
তবে কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে আধিকারিক না ছাড়া নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন নয়। কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে না গেলে সর্বভারতীয় কোনও পদে কাজ করার সম্ভাবনাও হারাতে হয় সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে। রাজ্যের দাবি, আধিকারিকের ঘাটতি থাকায় সব সময় তাঁদের ছাড়া সম্ভব হয় না। এ বার রাজ্যের উপর ‘চাপ’ বাড়াতে কেন্দ্র এই কৌশল নিয়েছে বলে আধিকারিকদের অনেকের মত। রাজ্যে আইএএস অফিসারদের ক্যাডার শক্তি ৩৭৮। তার মধ্যে ১১৫টি পদ ‘প্রোমোশন কোটা’ হিসাবে চিহ্নিত। ওই কোটায় নির্ধারিত মানদণ্ডে যোগ্য ডব্লিউবিসিএস আধিকারিকদের নামের তালিকা কেন্দ্রের কাছে পাঠায় রাজ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy