ঢাক-ঢোল, নানা রঙের পতাকা, ঝলমলে জরি বসানো নানা পোশাক পরে কিশোরীদের নাচের দল। অনেক দিন পরে এমনই এক অন্যরকম মিছিল দেখল দার্জিলিং।
বন্ধ নেই, রাজনৈতিক দলের মিছিল-হুঙ্কার নেই, বুটের শব্দে পুলিশি টহলও ক্ষীণ হয়ে গিয়েছে। ক্রমেই স্বাভাবিক ছন্দ ফিরছে দার্জিলিঙে। বৃহস্পতিবার অষ্টমীর দিন যেন এই বার্তাই আরও এক বার জানিয়ে দিল রঙিন সেই মিছিল। পাহাড়ের বিভিন্ন মন্দিরে দুর্গাপুজো হয়েছে। সেখানকার উদ্যোক্তারা সকলে মিলে শোভাযাত্রার আয়োজন করেন। চৌরাস্তা-ম্যাল, এইচডি লামা রোড, চকবাজার হয়ে সারা শহর ঘোরে এই শোভাযাত্রা। বিভিন্ন রাস্তা থেকে পথচারীরাও মিছিলে যোগ দেন। অনিল প্রধান, মঞ্চু তামাঙ্গ, নিমা থাপা, হেলেনা গুরুঙ্গরা ছিলেন এই শোভাযাত্রায়। প্রবীণ অনিল প্রধান বলেন, ‘‘অনেক দুঃখ-কষ্ট সয়েছি। এখন শুধু উৎসব। বাসিন্দাদের সকলের কাছে সেই উৎসবের বার্তা পৌঁছে দিতেই শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।’’
ব্লুমফিল্ড ডালিতে বিনয় তামাঙ্গের বাড়িতেও এ দিন অনুগামীরা ভিড় করেন। মন্দির থেকে দেবীর পায়ে ছোঁয়ানো ফুল ও প্রসাদ নিয়ে এসেছেন কেউ কেউ। এক অনুগামীর কথায়, ‘‘এত লোকজন কথা বলতে আসছেন যে, বিনয়দাজু সারাদিন বেরনোরই সুযোগ পাননি। তবে প্রসাদ খেয়েছেন।’’
এই উৎসবের আমেজে দার্জিলিঙের পাকদণ্ডি ধরে কখনও কুয়াশা, কখনও ঝিরঝিরে বৃষ্টি। তাতে কিন্তু উৎসবের বিঘ্ন ঘটেনি। মা ভবানী মন্দির, মহাকাল মন্দির-সহ বিভিন্ন মন্দিরে ভিড় উপচে পড়ে। চকবাজারে প্রসাদ বিলিও হয়েছে। বিকেলের পর থেকে ভিড় জমতে শুরু করে চৌরাস্তা-ম্যালে। তাতে অবশ্য স্থানীয়রাই ভিড়। পর্যটকদের দেখা গেলেও, সংখ্যা ছিল খুবই কম। সমতল থেকে দার্জিলিঙে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এনবিএসটিসি সূত্রে জানানো হয়েছে, তাদের ৪টি বাস দু’বার করে যাতায়াত করেছে। সব ক’টিই ছিল ভিড়ে ঠাসা। খুলেছে পাহাড়ের কয়েকটি হোটেল-রেস্তোরাঁও। এক হোটেল ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘কর্মীদের অনেকেই এখনও আসেনি। পুজোর পরে পুরোদস্তুর ব্যবসা শুরু হবে বলে আশা করছি।’’
আজ নবমীতে বেশি সংখ্যায় পর্যটকদের ভিড় আশা করছে দার্জিলিং। চৌরাস্তার এক কফি বিক্রেতা বলেন, ‘‘সবে মাত্র দু’দিন হল সব কিছু স্বাভাবিক হয়েছে। পুজোর সময়ে অনেকেই দিনভর বাইরে কাটিয়ে রাতে আবার নিজের শহরে ফিরে যান। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন শহর থেকে এমন পর্যটকদের ভিড় আশা করছি আমরা।’’ গ্লেনারিজ, ক্যাভেন্টার্স তো বটেই, খোলা ছিল বিভিন্ন কফি শপ। পুজোর সব দিনই সেগুলি খোলা থাকবে।
সব মিলিয়ে, অতিথিদের স্বাগত জানাতে আবার প্রস্তুত দার্জিলিং।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy